ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম ২০২৩ । একাউন্ট খোলা ও সেটিংস 

Salim Mahamud

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম ২০২৩ । একাউন্ট খোলা ও সেটিংস 
ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম ২০২৩ । একাউন্ট খোলা ও সেটিংস 

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম ২০২৩ । একাউন্ট খোলা ও সেটিংস 

নিজেকে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে উপস্থাপন করতে চান? যার জন্য সকলের মত সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম YouTube প্রথম পছন্দ? কোনো সমস্যা নেই, ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সম্পর্কে জেনে খুলে ফেলুন আপনার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল এবং ছড়িয়ে দিন আপনার বানানো কন্টেন্ট বিশ্বব্যাপি, এবং তার পাশাপাশি উক্ত সেক্টর থেকে থাকছে আয়ের উপায়ও। তাহলে জেনে নেয়া যাক ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম ও গুরুত্বপূর্ণ সেটিংস গুলো সম্পর্কে। 

ইউটিউব সম্পর্কে ব্যাসিক তথ্য 

YouTube হল একটি ভিডিও-শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম যা 2005 সালে তিনজন প্রাক্তন PayPal কর্মচারী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি ব্যবহারকারীদের ভিডিও আপলোড, শেয়ার এবং দেখার পাশাপাশি মন্তব্য, লাইক এবং সদস্যতার মাধ্যমে অন্যান্য ব্যবহারকারীদের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করতে দেয়।

বর্তমানে প্ল্যাটফর্মটি Google-এর মালিকানাধীন এবং এটি বিশ্বের বৃহত্তম সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির মধ্যে একটি, যেখানে 2 বিলিয়ন মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে। এটি 100 টিরও বেশি ভাষায় রয়েছে এবং এখানে মিউজিক, ভিডিও, ভ্লগ, শিক্ষামূলক কন্টেন্ট সহ আরও অনেক কন্টেন্ট রয়েছে৷

YouTube কন্টেন্ট নির্মাতাদের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় এবং স্পনসর করা কন্টেন্টের মাধ্যমে তাদের ভিডিও থেকে অর্থ উপার্জন করতে দেয়। এটি লাইভ স্ট্রিমিং, সম্প্রদায় বৈশিষ্ট্য এবং নির্মাতাদের জন্য তাদের দর্শক ট্র্যাক করার জন্য বিশ্লেষণ সরঞ্জামও প্রদান করে।

YouTube ওয়েবসাইটের পাশাপাশি মোবাইল এবং স্মার্ট টিভি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়। এটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়, তবে ব্যবহারকারীরা YouTube Premium-এও সাবস্ক্রাইব করতে পারেন, যা বিজ্ঞাপন-মুক্ত, অফলাইন প্লেব্যাক এবং একচেটিয়া কন্টেন্ট প্রদান করে।

২০২৩ সালে কেনো ইউটিউব জার্নি শুরু করা উচিৎ 

অনেকের মনে এই প্রশ্নটি আসতে পারে যে এই সময়ে ইউটিউব চ্যানেল খুলে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হওয়া কি সময় উপযোগি সিদ্ধান্ত? মূলত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসাবে YouTube যাত্রা শুরু করা বিভিন্ন কারণে একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে যার পক্ষে কিছু কারন নিম্মে উপস্থাপন করা হলো:

ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা: ইউটিউবের জনপ্রিয়তা বছরের পর বছর ধরে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আগামী বছরগুলিতেও তা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলস্বরূপ, আপনার তৈরি কন্টেন্টের জন্য একটি বিশাল সম্ভাব্য শ্রোতা রয়েছে। যা প্ল্যাটফর্মটি একটি অনুসরণীয় তৈরি করতে এবং আপনার ব্র্যান্ড বৃদ্ধি করার একটি দুর্দান্ত সুযোগ করে দেয়৷

কন্টেন্ট সমূহের বৈচিত্র্যকরণ: ইউটিউব বছরের পর বছর ধরে তার বিষয়বস্তুতে বৈচিত্র্য এনেছে, যা নির্মাতাদের জন্য নতুন নিশ অনুসন্ধান করা সহজ করে তুলেছে। এর মানে হলো বিভিন্ন ধরনের আগ্রহী এবং দক্ষ নির্মাতাদের জন্য তাদের স্থান খুঁজে বের করতে এবং একটি শ্রোতা তৈরি করার জায়গা সৃষ্টি করার সুযোগ রয়েছে।

সহজে শুরু করা যায়: একটি YouTube চ্যানেল শুরু করা তুলনামূলকভাবে সহজ এবং সস্তা। আপনার যা দরকার তা হল একটি ক্যামেরা, সম্পাদনার সক্ষমতা ও বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা। কিছু প্রচেষ্টা এবং ধারাবাহিকতার সাথে আপনি দ্রুত ফলোয়ার তৈরি করতে পারবেন এবং এখান থেকে আয় করতে পারবেন। আয় করার বিষয়টি যখন চলে আসলো তবে বলি.. 

আয় করার সুযোগ: YouTube কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের বিজ্ঞাপন, স্পনসরশিপ, পণ্য বিক্রয়সহ আরও অনেক উপায় রয়েছে যা ইউটিউব থেকে আয় করার সুযোগ তৈরি করে দেয়। আপনার চ্যানেল বাড়ার সাথে সাথে কন্টেন্ট থেকে উল্লেখযোগ্য আয় করতে পারেন।

সৃজনশীল আউটলেট: YouTube লোকেদের নিজেদের প্রতিভা প্রকাশ করতে এবং অন্যদের সাথে আবেগ শেয়ার করার জন্য একটি সৃজনশীল আউটলেটের সুযোগ প্রদান করে। সমমনা ব্যক্তিদের সাথে সংযোগ করা ও আপনার কন্টেন্ট কেন্দ্রিক সম্প্রদায় তৈরি করার এটি একটি দুর্দান্ত উপায় হিসেবে কাজ করবে। ৷

কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খোলা যায়? 

এই পর্যায়ে জানানো হবে এই আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে যা হচ্ছে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা। তাহলে কিভাবে তৈরি করা যায় এইটি ইউটিউব চ্যানেল? এটা জানার আগে জানতে হবে ইউটিউবে কত ধরনের একাউন্ট খোলার সুযোগ রয়েছে। এবং আপনার প্রয়োজন অনুসারে কোনটিকে কেন্দ্র করে ইউটিউব জার্নি শুরু করবেন। পরের স্টেপটি সে বিষয়ক। 

কত ধরণের ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে?

অনেক ধরণের YouTube চ্যানেল রয়েছে। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু নিশের YouTube চ্যানেল এখানে উপস্থাপন করছি:

ভ্লগ: এই চ্যানেলগুলি স্রষ্টার দৈনন্দিন জীবনের উপর ফোকাস করে, তাদের অভিজ্ঞতা এবং চিন্তাভাবনা তাদের দর্শকদের সাথে শেয়ার করে।

গেমিং: গেমিং চ্যানেলগুলি গেমপ্লে এবং ওয়াকথ্রুতে ফোকাস করে, সেইসাথে সাম্প্রতিক গেম এবং গেমিং সরঞ্জামগুলির পর্যালোচনা এবং মতামত।

সৌন্দর্য এবং ফ্যাশন: এই চ্যানেলগুলি সৌন্দর্য এবং ফ্যাশন সম্পর্কিত টিপস, টিউটোরিয়াল এবং পণ্য পর্যালোচনা প্রদান করে, যেমন মেকআপ, ত্বকের যত্ন এবং পোশাক।

ভ্রমণ: ভ্রমণ চ্যানেলগুলি স্রষ্টার ভ্রমণ এবং অ্যাডভেঞ্চারগুলি প্রদর্শন করে, জনপ্রিয় গন্তব্য এবং সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতার জন্য অন্তর্দৃষ্টি এবং সুপারিশ প্রদান করে।

শিক্ষা: শিক্ষামূলক চ্যানেলগুলি বিজ্ঞান এবং ইতিহাস থেকে ভাষা শিক্ষা এবং ব্যক্তিগত বিকাশ পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় শেখানো এবং ব্যাখ্যা করার উপর ফোকাস করে।

কমেডি: কমেডি চ্যানেলগুলি হাস্যরসাত্মক বিষয়বস্তু অফার করে, যেমন স্কিট, প্যারোডি এবং প্র্যাঙ্ক ভিডিও।

মিউজিক: মিউজিক চ্যানেলে মূল মিউজিক, কভার এবং মিউজিক-সম্পর্কিত বিষয়বস্তু যেমন ইন্টারভিউ, মিউজিক ভিডিও এবং পারফরম্যান্স দেখানো হয়।

খাদ্য এবং রান্না: খাদ্য এবং রান্নার চ্যানেলগুলি খাবার এবং রান্না সম্পর্কিত রেসিপি, টিউটোরিয়াল এবং পর্যালোচনাগুলি অফার করে।

অনেক ধরনের ইউটিউব চ্যানেল বিদ্যমান তার কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। আপনি যে ধরনের চ্যানেল তৈরি করবেন তা নির্ভর করবে আপনার আগ্রহ, দক্ষতা এবং লক্ষ্যের উপর।

ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কি কি প্রয়োজন? 

Google অ্যাকাউন্ট: একটি YouTube চ্যানেলের জন্য সাইন আপ করতে আপনার একটি Google অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। আপনার যদি ইতিমধ্যে একটি না থাকে তবে একটি নতুন তৈরি করে নিন৷

চ্যানেলের নাম: আপনাকে আপনার চ্যানেলের জন্য একটি নাম বাছাই করতে হবে যা আপনার কন্টেন্ট এবং ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করবে।

চ্যানেল আর্ট: আপনার চ্যানেলকে চিনতে সহায়তা করে এমন একটি ব্যানার চিত্র তৈরি করতে হবে। এই চিত্রটি দৃশ্যত আকর্ষণীয় হওয়া উচিত এবং আপনি যে কন্টেন্ট আপলোড করার পরিকল্পনা করছেন তা কোথাকার সেটি চিহ্নিত করবে।

ভিডিও কন্টেন্ট: আপনাকে এমন ভিডিও তৈরি করে আপলোড করতে হবে যা আপনার টার্গেটেড শ্রোতাদের কাছে গ্রহনযোগ্যতা করে তুলবে। লাইটিং, শব্দ এবং সম্পাদনা সহ আপনাকে আপনার ভিডিওর গুণমানও বিবেচনা করতে হবে।

ডিস্ক্রিপশন এবং ট্যাগ: আপনাকে আপনার চ্যানেল এবং ভিডিওগুলির বিবরণ তৈরি করতে হবে, সেইসাথে আপনার কন্টেন্ট সার্চ রেজাল্টে আনার জন্য ট্যাগ ব্যবহার করতে হবে৷

ধারাবাহিকতা: আপনার অডিয়েন্সদের ধরে রাখতে ধারাবাহিকভাবে কন্টেন্ট আপলোড করা গুরুত্বপূর্ণ।

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম 

এবার জানবেন সেই প্রসেস যা অনুসরণ করে ইউটিউব চ্যানেল খোলার কাজ সরাসরি শুরু করতে পারবেন। হ্যাঁ, জানাবো ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সম্পর্কে। চলুন তবে ধাপে ধাপে একেক করে সব বিষয় গুলো জেনে নেয়া যাক। 

নিশ বাছাই 

সবার প্রথমেই আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হলো একটি নিশ (Niche) বাছাই। প্রশ্ন জাগতে পারে নিশ কি? নিশ হলো বিভাগ বা বিষয়। আপনি কোন বিষয়ের উপর কন্টেন্ট তৈরি করতে চাচ্ছেন সেটিই হলো একেকটি নিশ। 

একজন দক্ষ কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সর্বদা একটি স্পেসিফিক নিশ নিয়েই কাজ করবে। একজন মানুষ সব বিষয়ের উপর দক্ষ হতে পারে না, এবং এটা সহজ ভাবে কেউ বিশ্বাস করবেও না। তাই আপনি যে বিষয়টিতে দক্ষ সেই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে। 

যখন আপনি একটি নিশ নিয়ে আগাবেন তখন আপনার ক্ষেত্রে অডিয়েন্স বেস তৈরি করা সহজ হবে। তাছাড়া তারা যখন উক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হবে তখন অন্য কোথাও না গিয়ে এক স্থানেই সকল তথ্য পাওয়ার সুবিধার্থে আপনার জনপ্রিয়তার পাশাপাশি ইনকামের ক্ষেত্রেও সেটি ভালো প্রভাব নিয়ে আসবে। 

চ্যানেল খোলার প্রস্তুরি 

প্রস্তুতি হিসেবে চ্যানেল খোলার জন্য নিদিষ্ট ডিভাইস, ইন্টারনেট কানেকশন ও উপরে উল্লেখিত জিনিস গুলো রেডি করে রাখতে হবে। পরবর্তী ধাপে যখন স্টেপ বাই স্টেপ একেকটা পদক্ষেপ দেখানো হবে তখন যাতে করে অসুবিধায় পড়তে না হয় তাই আগে থেকেই সেসব প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো গুছিয়ে রাখতে পারেন। এবার জেনে নেয়া যাক ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম স্টেপ বাই স্টেপ। 

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলা এখনও বাকি রয়েছে যা হলো – ইউটিউব চ্যানেল মূলত দুই ভাবে খোলা হয়ে থাকে। ১) ব্যক্তিগত ভাবে ব্যবহার করার জন্য; ২) কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের জন্য। যেটা ব্যক্তিগত চ্যানেল সেটা ব্রাউজার এবং মোবাইল অ্যাপ উভয় উপায়ে খোলা যায়। তবে যেটা ব্র্যান্ড কিংবা কোম্পানি কেন্দ্রিক সেটা খোলার জন্য মোবাইল অ্যাপ এ কোনো ব্যবস্থা নেই। সেটি খুলতে অবশ্যই ব্রাউজার থেকে ইউটিউবে যেয়ে খুলতে হবে। 

স্টেপ বাই স্টেপ পদক্ষেপ 

১) ইউটিউবে লগিন করুন: যেকোনো ব্রাউজার, কিংবা ইউটিউব মোবাইল অ্যাপ থেকে গুগল একাউন্ট এর সাহয্যে সাইন ইন করে নিতে হবে। যেহেতু ইউটিউব বর্তমানে গুগলের একটি সার্ভিস তাই এটাই একমাত্র উপায়। 

২)  আপনার চ্যানেলে প্রবেশ করুন: অ্যাপ স্ক্রিনের উপরের ডানদিকে অবস্থিত আপনার প্রোফাইল ছবিতে ক্লিক করুন, তারপরে ড্রপডাউন মেনু থেকে “My Channel” এ ট্যাপ করুন।

৩) আপনার চ্যানেল সেট আপ করুন: আপনার চ্যানেল সেট আপ করতে অন-স্ক্রীন নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন। আপনাকে একটি চ্যানেলের নাম লিখতে এবং একটি প্রোফাইল ছবি এবং ব্যানার ছবি আপলোড করতে বলা হবে। 

৪) চ্যানেল ক্রিয়েট করা হয়ে গেলে প্রোফাইলের পাশে দুইটা অপশন দেখতে পারবেন। ১ম টি হলো “Creator Studio” এবং ২য়টি হলো “Customize Channel” 

Customize Channel অপশন থেকে চ্যানেলের প্রোফাইল পিকচার, ব্যাকগ্রাউন্ড ছবি সহ ডিক্রিপশন এবং এবাউট সম্পর্কে আপডেট দিতে পারবেন। অন্যদিকে Creator Studio অপশনে গিয়ে চ্যানেলের অন্যান্য সেটিংস, ভিডিও ম্যানেজার সহ ভিডিওতে ভিউ এবং চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বিষয়ক আপডেট দেখতে পারবেন। 

এই কাজ গুলো করা তেমন কঠিন কিছু নয়, খুবই সহজ। আপনি যখন নিজে থেকে এক্সপ্লোর করবেন তখন দেখেই বুজতে পারবেন কোথায় কি করতে হবে। তাই এতোটা ব্যাসিক জিনিস ধরে ধরে বুজিয়ে দিয়ে আপনার মূল্যবান সময় অপচয় না করি। 

এভাবেই আপনি সফল ভাবে ইউটিউব চ্যানেল খুলে ফেলতে পারবেন। তবে এখানেই শেষ নয় রয়েছে আরো বেশ কিছু সেটাপ যা প্রোফেশনাল ভাবে ইউটিউবিং করার জন্য খুব প্রয়োজন। পরবর্তী ধাপ গুলোতে সে সম্পর্কে জানানো হচ্ছে। 

ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করার নিয়ম 

চ্যানেল খুলেই উরাধুরা ভিডিও আপলোড করে গেলেই হবে না। এতে করে আপনার কোনোই লাভ হয় না, হবে না কোনো আর্নিং বা অন্যান্য কোনো কিছু। তাই চ্যানেল খোলার পরপরেই আপনাকে উক্ত চ্যানেল ভেরিফাই করে নিতে হবে। উক্ত কাজ করার জন্য নিম্মে উল্ল্যেখিত পদক্ষেপ গুলো অনুসরণ করুন। 

১) প্রথমেই চলে যেতে হবে Creator Studio অপশনে। সেখানে যাওয়ার জন্য YouTube Dashboard থেকে প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করতে হবে। 

২) নতুন পেজ ওপেন হবে। পেজটির ডান পাশে অনেক গুলো অপশন দেখতে পারবেন যেখান থেকে Channel নামক অপশনটি খুজে ক্লিক করতে হবে। 

৩) এবার সেখানে নিজের ইউটিউব চ্যানেলের নাম দেখবেন এবং পাশাপাশি সেটির নিচে Verify লিখাটা আসবে সেখানে ক্লিক করুন। এবং আপনাকে একাউন্ট ভেরিফিকেশন পেজে নিয়ে যাওয়া হবে। 

৪) এই পেজে আপনাকে বেশ কিছু তথ্য সাবমিট করতে হবে যেমন 

  • Select Your Country (বাংলাদেশ সিলেক্ট করুন) 
  • Verification code deliver option (এখানে টেক্সট সিলেক্ট করুন)
  • Inter Your Phone Number (এখানে নিজের নাম্বারটি দিন) 

সবশেষে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। কিছু সময়ের মধ্যেই উক্ত নাম্বারে একটি টেক্সট ম্যাসেজ চলে আসবে। সাবমিট অপশনে ক্লিক করার পর যে পেজটি আসবে সেখানে ভেরিফিকেশন কোডটি সাবমিট করে দিন। ব্যাস, আপনার কাজ শেষ। এখন থেকে আপনার ইউটিউব চ্যানেল পুরোপুরি ভাবে সচল এবং আপনি যখন ইচ্ছা যেভাবে ইচ্ছা কোয়ালিটি সম্পন্ন ভিডিও চ্যানেলে আপলোড করতে পারবেন এবং মনিটাইজেশনের পর সেখান থেকে আয়ও করতে পারবেন। 

ইউটিউব চ্যানেলের প্রয়োজনীয় সেটিংস 

ইউটিউব চ্যানেলটিকে প্রোফেশনাল লুক দেয়ার জন্য বেশ কিছু সেটিংস বা অপটিমাইজেশনের প্রয়োজন রয়েছে। উক্ত কাজগুলো করাটা একজন দক্ষ কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের লক্ষণের মধ্যেই পরে। উক্ত অপটিমাইজেশন করতে চলে যেতে হবে Customize Channel অপশনে। সেখানে ক্লিক করলে প্রথমে YouTube Studio তে নিয়ে আসবে এবং সেখান থেকে ডান পাশের মেনু অপশন গুলো থেকে Customization খুজে ক্লিক করুন। 

এবার পেজটিতে ৩ টি অপশন দেখতে পারবেন।

  • Basic Info 
  • Branding 
  • Layout 

Basic info অপশনে যা করবেন 

  • এখানে প্রথম অপশনটি চ্যানেলের নাম পরিবর্তন বা আপডেট করার জন্য। 
  • পরের অপশনটি চ্যানেলের ডেস্ক্রিপশন লেখার জন্য।
  • তারপরের অপশনটি ভাষা বাছাই করার জন্য, যে আপনি কোন ভাষায় কন্টেন্ট দিবেন।
  • এবার থাকবে URL সেট করার অপশন যাকে আবার লিংক নামেই চিনে থাকি। 
  • নেক্সট থাকছে আপনার সোসাল মিডিয়া প্রোফাইল লিংকড করার অপশন।
  • সবশেষে থাকছে জিমেইল যুক্ত করার অপশন যা চ্যানেলকে সিকিউরড করবে। 

Branding অপশনে যা করবেন 

  • প্রথমেই থাকছে চ্যানেলের প্রোফাইল পিকচার সেট করার অপশন। এক্ষেত্রে 98*98 পিক্সেলের সর্বোচ্চ 4এম্বি সাইজের লোগো যুক্ত করবেন। 
  • এবার থাকছে চ্যানেলের ব্যানার বা কভার সেট করার অপশন। উক্ত ব্যানারের ক্ষেত্রে সাইজ হবে 2048*1152 এবং সাইজ হবে সর্বোচ্চ 6 এম্বি। 
  • সর্বশেষ অপশনে থাকছে Watermark যা কি-না অনেকে প্রোফাইল পিকচার বা লোগো দিয়েই চালিয়ে দেয়। যাই হোক এটার সাইজ হবে 150*150 এবং সর্বোচ্চ সাইজ 1 এম্বি। 

Layout অপশনে যা করবেন 

  • এখানে থাকছে ৩ টি অপশন যার প্রথমটি হলো ট্রেইলার সেকশন। মূলত যারা চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করেনি তারা যখন চ্যানেলে প্রবেশ করবে তখন এটি দেখানো হবে। এখানে মূলত আপনার চ্যানেল কি, কেনো এসব বিষয়ে ডিটেইলস ভিডিও দিবেন।
  • পরের অপশনটি ভিডিও প্লেয়িং বিষয়ক। চ্যানেলে কেউ প্রবেশ করার পর ভিডিও অটোমেটিক চালু হয়ে যাবে কি না সেই সেটিং করতে পারবেন এখান থেকে। 
  • সবশেষ অপশনটি  Playlist তৈরি করার ক্ষেত্রে। চ্যানেলের হোমপেজকে সুন্দর ক্যাটাগরি অনুযায়ী সাজাতেই মূলত এই সেটিংটি প্রয়োজন হবে। 

এই সব কাজ গুলো করা হয়ে গেলে Publish বাটনে ক্লিক করুন এবং আপনার অপটিমাইজেশনের কাজ এখানেই শেষ। এবার বাকিটা নির্ভর করবে আপনার কোয়ালিটি সম্পন্ন ভিডিও তৈরি ও ও সেগুলো যথাযথ ভাবে আপলোডের পাশাপাশি SEO করার উপরে। অতঃপর উক্তযুক্ত সময়ে মনিটাইজেশন চালু করে শুরু করে দিবেন ইউটিউব থেকে আর্নিং। 

পরিশেষে কিছু কথা 

ইউটিউব থেকে আয় করা সহজ আবার সহজ নয়। এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে যারা মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করছে এখান থেকে আবার এমনও অনেক লোক রয়েছে যারা সপ্ন নিয়ে এসে হতাশা নিয়ে ফিরেও গেছে। এটা নির্ভর করবে আপনি কতটা দক্ষতার সাথে উক্ত সেক্টরে লেগে থাকতে পারেন কতটা ইফোর্ট দিতে পারেন উক্ত কাজে। যাই হোক, ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম এখানেই শেষ। উপরে উল্লেখ্যিত নিয়মের বাইরে কোনো সেটিং নেই ব্যাসিক পর্যায়ে। আশা করি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বিষয় গুলো সহজে বুজাতে সক্ষম হয়েছি। ইউটিউব বিষয়ক আরো অন্যান্য তথ্যের জন্য ওয়েবসাইটের YouTube নামক ট্যাগটি অনুসরণ করতে পারেন। ধন্যবাদ।