ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন বিস্তারিত 

Salim Mahamud

Updated on:

ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন বিস্তারিত 
ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন বিস্তারিত 

ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন বিস্তারিত 

আপনি কি তাদের মধ্যে একজন যারা ইউটিউবিং শুরু করা এবং ইউটিউব থেকে আয় করার বিষয়ে ভাবছেন? ইউটিউব থেকে আয় করা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য ও কিভাবে শুরু করা থেকে আয় করা পর্যন্ত সকল বিষয় জানতে আগ্রহী তবে আপনি সঠিক স্থানেই রয়েছেন। কেননা আমাদের ওয়েবসাইটের ইউটিউব ক্যাটাগরিটি এভাবেই সাজানো হয়েছে যে, ইউটিউব থেকে আয় সংক্রান্ত সকল বিষয়ে একজন আগ্রহী সকল বিষয় জানতে পারবে। তার ধারাবাহিকতায় এবারের বিষয়টি হচ্ছে “ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ পদ্ধতি” সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। 

ইউটিউব থেকে আয় 

ইউটিউবকে আপনি একটি ভিডিও শেয়ার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে চিনলেও এটা অসংখ্য মানুষের জন্য আয়ের অন্যতম একটি মাধ্যম। সত্যি কথা বলতে ইউটিউব থেকে এতো টাকা আয় করা যায় যা একজন গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে চাকরি করা মানুষের বেতনের থেকেও অনেক অংশে বেশি। তবে প্রয়োজন সঠিক পথ অনুসরণ ও সঠিক ভাবে ব্যবস্থাপনা, যা মূলত আপনাকে জানতে ও শিখতে হবে। আর এভাবের আর্টিকেলে আপনাকে স্রেফ জানাবো ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ পদ্ধতি সম্পর্কে। যা পরবর্তীতে আপনি আরো ডিটেইলস ভাবে সে পথ গুলো অনুসরণের জন্য চেষ্টা করে যাবেন। তবে চলুন জেনে নেয়া যাক ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত। 

ইউটিউব থেকে আয় করার ক্ষেত্রে কি কি প্রয়োজন?

প্রতিটি জিনিসই করতে কিছু না কিছু বাধ্যতামূলক জিনিস রয়েছে যেগুলো প্রয়োজন হয়। এখানেও একই, YouTube থেকে আয় করার জন্য নিম্নলিখিত জিনিসগুলি প্রয়োজন:

১) একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে যার জন্য একটি Google অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।

২) যত বেশি দর্শক আপনার ভিডিওগুলি দেখবে, তত বেশি টাকা আপনি উপার্জন করতে পারবেন। তাই ভিউয়ারস আকর্ষন করতে হবে। 

৩) আপনার ভিডিওগুলি জনপ্রিয় এবং দর্শকদের আকর্ষণ করার মতো হতে হবে। তাই ভালো মানের কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি নিজের ফেস রিভিল করে, কিংবা অন্যান্য উপায়ে ভিডিও তৈরি করতে পারেন নিশের উপর ভিত্তি করে। 

৪) ইউটিউব থেকে অর্থ উপার্জন করার জন্য, আপনাকে অবশ্যই ইউটিউব থেকে আয় করার উপায় গুলোর মধ্য থেকে এক বা একাধিক উপায় অনুসরণ করে এপ্লাই করতে হবে। কি সেসব উপায় সেগুলো জানতে চলেছেন পরবর্তী ধাপে। 

ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ পদ্ধতি (বিস্তারিত) 

এবার চলুন কথা না বাড়িয়ে একেবারে চলে যাওয়া যাক এমন সব উপায় সম্পর্কে জানতে যেগুলো অনুসরণ করলে ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন। এখানে ১২ টি পদ্ধতি সম্পর্কে জানানো হচ্ছে। 

Ad Revenue (Google AdSense)

ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য AdSense হল সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায়। এটি Google-এর একটি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক যা YouTube-এর ভিডিওতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে। যখন একজন দর্শক একটি বিজ্ঞাপন দেখে বা তার উপর ক্লিক করে, তখন YouTuber-রা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে।

AdSense-এর মাধ্যমে YouTube থেকে আয় করার জন্য, আপনাকে একটি YouTube চ্যানেল তৈরি করতে হবে এবং সেই চ্যানেলকে AdSense-এর সাথে সংযুক্ত করতে হবে। YouTube চ্যানেল তৈরি করার জন্য, আপনাকে একটি Google অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। একবার আপনার একটি চ্যানেল হয়ে গেলে, আপনি AdSense-এর জন্য আবেদন করতে পারেন। AdSense-এর জন্য আবেদন করার সময়, আপনাকে আপনার YouTube চ্যানেল সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে, যেমন আপনার চ্যানেলের নাম, বিষয়বস্তু এবং দর্শকদের সংখ্যা।

AdSense-এর সাথে আপনার YouTube চ্যানেল সংযুক্ত করার জন্য, আপনাকে AdSense-এর ওয়েবসাইটে লগ ইন করতে হবে এবং আপনার YouTube চ্যানেলটিকে আপনার AdSense অ্যাকাউন্টের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। একবার আপনার চ্যানেলগুলি সংযুক্ত হয়ে গেলে, AdSense আপনার চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন শুরু করবে। আর আপনি আয় করতে পারবেন। 

Affiliate Marketing 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল একটি অনলাইন মার্কেটিং কৌশল যেখানে একজন মার্কেটার অন্য কারো পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করে কমিশন আয় করে। ইউটিউব অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল একটি উপায় যেখানে একজন ইউটিউবার তার ভিডিওতে একজন অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট বা পরিষেবা প্রচার করে এবং সেই পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি হলে সে কমিশন পায়।

ইউটিউব অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করার জন্য, আপনাকে প্রথমে একটি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যোগদান করতে হবে। অনেকগুলি কোম্পানি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম অফার করে, তাই আপনার পছন্দের পণ্য বা পরিষেবার সাথে সম্পর্কিত একটি খুঁজে বের করা গুরুত্বপূর্ণ।

একবার আপনি একটি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যোগদান করলে, আপনাকে একটি অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক পাওয়া যাবে। এই লিঙ্কটি ব্যবহার করে আপনার ভিডিওতে পণ্য বা পরিষেবা প্রচার করতে পারেন। যখন কেউ আপনার লিঙ্কটি ব্যবহার করে পণ্য বা পরিষেবা কেনে, তখন আপনি একটি কমিশন পাবেন।

ইউটিউব অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় করার জন্য, আপনার একটি জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে। আপনার চ্যানেলে আপনার লক্ষ্য দর্শকদের আকৃষ্ট করার জন্য আকর্ষক এবং তথ্যপূর্ণ ভিডিও তৈরি করতে হবে।

Sponsorships 

Sponsorship হল একটি চুক্তি যেখানে একটি কোম্পানি আপনার YouTube চ্যানেলে তাদের পণ্য বা পরিষেবা প্রচার করার জন্য আপনাকে অর্থ প্রদান করে।

আমরা প্রায় সময় দেখে থাকি, জনপ্রিয় ইউটিউবাররা ভিডিও এর শুরুতে বা কোনো এক পর্যায়ে বলে থাকে “This Video is sponsed by অমুক কোম্পানি বা অমুক ব্র্যান্ড” এখানে মূলত ওই ইউটিউবার সে কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের কাছ থেকে এক্সটা অর্থ লাভ করেছে সে ভিডিওতে তাদের মার্কেটিং করার জন্য। 

স্পন্সর্ড ভিডিও হলো এমন ভিডিও সেখানে কোনো স্পেসিফিক কোম্পানির বা ব্র্যান্ডকে উল্লেখ্য করে তাদের পণ্য বা সেবা সম্পর্কে শর্ট করে ব্যাসিক ধারণা দেয় এবং Viewers দের সে পণ্য বা সেবা সম্পর্কে অবগত করার পাশাপাশি পণ্য বা সেবা গ্রহনে উৎসাহিত করে। 

বর্তমানে বাংলাদেশে জনপ্রিয় ইউটিউবারদের ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রতিটি পণ্য বা সেবার প্রোমোট করার জন্য ১০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা অব্দি ওয়ান টাইম পেমেন্ট পেয়ে থাকে। ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ টি উপায়ের মধ্যে এটা বেশ হাই উপায়, কেননা এটা সকলে পায় না, এর জন্য আপনার ইউটিউব চ্যানেল বেশ জনপ্রিয় এবং অনেক ট্রাফিক থাকতে হবে। 

Merchandise Sales

ইউটিউব থেকে আয় করার অন্যতম একটি উপায় হল Merchandise Sales। এটি এমন একটি পদ্ধতি যেখানে ইউটিউবাররা তাদের চ্যানেলের সাথে সম্পর্কিত পণ্য বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করেন। এই পণ্যগুলির মধ্যে টি-শার্ট, টুপি, ব্যাগ, স্টিকার, কফি মগ, এবং আরও অনেক কিছু অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

Merchandise Sales শুরু করার জন্য কী কী করতে হবে?

Merchandise Sales শুরু করার জন্য আপনাকে প্রথমে একটি Merch by Google অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। এটি করার জন্য, আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে এবং আপনার চ্যানেলটি Monetized হতে হবে।

Merch by Google অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে, আপনি আপনার পণ্যগুলি ডিজাইন এবং সেট আপ করতে শুরু করতে পারেন। আপনি আপনার চ্যানেলের লোগো, বা আপনার ভিডিওগুলির থেকে প্রিয় স্ক্রিনশট বা স্ন্যাপশট ব্যবহার করে আপনার পণ্যগুলি ডিজাইন করতে পারেন।

আপনার পণ্যগুলি ডিজাইন হয়ে গেলে, আপনি সেগুলি আপনার চ্যানেলে প্রচার করতে পারেন। আপনি আপনার ভিডিওগুলিতে, আপনার চ্যানেলের বিবরণে, এবং আপনার সামাজিক মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলিতে আপনার পণ্যগুলির জন্য লিঙ্ক এবং বিজ্ঞাপন শেয়ার করতে পারেন। এভাবে আপনি ইউটিউব থেকে Merchandise Sales এর মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। 

Channel Memberships

Channel Memberships হল ইউটিউব থেকে আয় করার একটি দুর্দান্ত উপায়। Channel Memberships এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য, আপনাকে অবশ্যই একটি YouTube Premium সদস্য হতে হবে। আপনি যদি একজন YouTube Premium সদস্য হন, তাহলে আপনি আপনার চ্যানেলের জন্য Channel Memberships চালু করতে পারেন।

Memberships থেকে আয় করার জন্য, আপনাকে অবশ্যই একটি সদস্যতার মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। সদস্যতার মূল্য $4.99 থেকে $99.99 পর্যন্ত হতে পারে। আপনি আপনার চ্যানেলের জন্য প্রোমোশনাল অফারও তৈরি করতে পারেন, যেমন সীমিত সময়ের জন্য একটি সদস্যতার মূল্য কমানোর জন্য।

Channel Memberships থেকে আয়ের হার আপনার চ্যানেলের সদস্যতার সংখ্যার উপর নির্ভর করে। প্রতিটি সদস্যতার মূল্যের 50% YouTube আপনাকে প্রদান করে। আর এভাবেই আপনার ইউটিউব থেকে আয় হবে। 

Super Chat and Super Stickers 

Super Chat এবং Super Stickers হল YouTube এর দুটি অর্থ প্রদান ভিত্তিক ফিচার যা দর্শকরা তাদের প্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের সাথে যোগাযোগ করার এবং তাদের সাপোর্ট করার সুযোগ করে দেয়। Super Chat হল একটি লাইভ চ্যাটে একটি বার্তা স্পনসর করার একটি উপায়, যাতে এটি অন্যান্য বার্তার উপরে উঠে আসে এবং উজ্জ্বল রঙে প্রদর্শিত হয়। Super Stickers হল লাইভ চ্যাটে ব্যবহার করার জন্য আকর্ষণীয় স্টিকার।

YouTube এর মাধ্যমে Super Chat এবং Super Stickers এর মাধ্যমে আয় করার জন্য, একজন নির্মাতাকে একটি সক্রিয় YouTube Partner Program অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। এই অ্যাকাউন্টটি নির্মাতাদের তাদের ভিডিও থেকে বিজ্ঞাপন আয়ের জন্য যোগ্য করে তোলে। Super Chat এবং Super Stickers থেকে আয়ও YouTube Partner Program এর মাধ্যমে প্রদান করা হয়।

Super Chat থেকে আয় নির্মাতা দ্বারা নির্ধারিত মূল্যের উপর ভিত্তি করে। নির্মাতারা প্রতি বার্তার জন্য $0.99, $1.99, $4.99, $9.99, বা $24.99 চার্জ করতে পারেন। দর্শকরা লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে Super Chat কিনতে পারেন।

অন্যদিকে Super Stickers থেকে আয় নির্মাতা দ্বারা নির্ধারিত মূল্যের উপর ভিত্তি করে। নির্মাতারা প্রতি স্টিকারের জন্য $0.49, $0.99, বা $1.99 চার্জ করতে পারেন। দর্শকরা লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে Super Stickers কিনতে পারেন।

Super Chat এবং Super Stickers থেকে আয় YouTube Partner Program এর মাধ্যমে নির্মাতার YouTube অ্যাকাউন্টে প্রদান করা হয়। আয় সাধারণত লাইভ চ্যাটের শেষের 10 দিনের মধ্যে অ্যাকাউন্টে জমা হয়।

Crowdfunding (Patreon)

Crowdfunding হল একটি অনলাইন পদ্ধতি যাতে ব্যক্তি বা সংস্থা গুলো তাদের প্রকল্পের বা উদ্যোগ গুলি অর্থায়নের জন্য জন সাধারণের কাছ থেকে ছোট ছোট পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে। Patreon হল একটি crowdfunding প্ল্যাটফর্ম যা ইউটিউবারদের তাদের অনুসারীদের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ প্রদানের মাধ্যমে তাদের কাজকে সমর্থন করার জন্য সুযোগ করে দেয়।

Patreon এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য, একজন ইউটিউবারকে প্রথমে একটি Patreon অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে এবং তার অনুসারীদের জন্য বিভিন্ন স্তর তৈরি করতে হবে। প্রতিটি স্তরের জন্য একটি নির্দিষ্ট মাসিক চার্জ থাকবে, এবং অনুসারীরা সেই স্তরের জন্য কী পাবে তা নির্ধারণ করবে।

Patreon-এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য, একজন ইউটিউবারকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অনুসারী থাকতে হবে। সাধারণত, 1000-এর বেশি অনুসারী থাকলে একজন ইউটিউবার Patreon-এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন শুরু করতে পারে।

Webinars and Online Courses 

হ্যাঁ, Webinars এবং Online Courses এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আয় করা যায়। এই ধরনের কনটেন্টের মাধ্যমে আপনি আপনার দর্শকদের সাথে আরও নিবিড়ভাবে সংযোগ স্থাপন করতে পারেন এবং আপনার জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

এক্ষেত্রে আপনাকে একটি নিশ বাছাই করে নিতে হবে। আকর্ষনীয় কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে। এবং সেটার মার্কেটিং করতে হবে। তবে আপনি যেহেতু ইউটিউবের মাধ্যমে আয় করতে চাচ্ছেন এক্ষেত্রে আপনি বেশ কিছু পথ অনুসরণ করতে পারেন সেগুলো হলো: 

১) সরাসরি সেগুলো বিক্রি করতে পারেন। আপনার তৈরি করা অনলাইন কোর্সে ইউটিউবে আপলোড করে সেটিকে প্রাইভেট রেখে কোর্সগুলো সুরক্ষিত  ভাবে সংরক্ষণ করতে পারেন। এরপর সেগুলোর লিংক আপনার ক্রেতাদের কাছে প্রোভাইড করে সেখান থেকে আয় করতে পারবেন। 

২) আপনি যদি মেম্বারশিপ চালু করে রাখেন আপনার চ্যানেলের ক্ষেত্রে সেখানে আপনি মেম্বারদের মধ্যে এই কোর্সগুলো শেয়ার করে মেম্বারশিপের মাধ্যমেও আয় করতে পারবেন।

Donations (Fan Funding)

Donations হল একটি উপায় যার মাধ্যমে আপনার দর্শকরা আপনার YouTube চ্যানেলের জন্য অর্থ প্রদান করতে পারে। এই অর্থ প্রথমে YouTube দ্বারা সংগ্রহ করা হয় এবং আপনাকে আপনার চ্যানেলের একটি ব্যাংক একাউন্ট বা PayPal বা Stripe অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।

Donations এর মাধ্যমে কত আয় করা যায় তা আপনার দর্শকদের আর্থিক অবস্থা এবং আপনার চ্যানেলের জনপ্রিয়তার উপর নির্ভর করে। সাধারণত, Donations এর মাধ্যমে আয় করা একটি ছোট পরিমাণ, তবে এটি ইউটিউব থেকে আয় করার একটি দুর্দান্ত উপায়।

আপনার চ্যানেলে Donations এর অপশন চালু করতে, নিম্নলিখিত পদক্ষেপ অনুসরণ করুন:

  1. YouTube Studio এ যান।
  2. অর্থ ট্যাবটি নির্বাচন করুন।
  3. Donations ট্যাবটি নির্বাচন করুন।
  4. Donations চালু করুন বাটনে ক্লিক করুন।

Selling Digital Products

ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রির মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আয় করা একটি জনপ্রিয় উপায়। এই পদ্ধতিতে, আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপনার নিজস্ব ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করতে পারেন, যেমন ওয়ার্কশপ, কোর্স, টিউটোরিয়াল, eBooks, ইত্যাদি।

ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রির মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য, আপনাকে প্রথমে একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড এবং অনুসরণ তৈরি করতে হবে। আপনার চ্যানেলে উচ্চ-মানের সামগ্রী তৈরি করুন যা আপনার দর্শকদের আকর্ষণ করে এবং তাদের আপনার পণ্যগুলি কিনতে আগ্রহী করে তোলে।

এবার, আপনি আপনার পণ্যগুলি বিক্রি করার জন্য একটি উপায় তৈরি করতে হবে। আপনি আপনার নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন, বা আপনি একটি তৃতীয় পক্ষের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন।

ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রির মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য কিছু জনপ্রিয় পণ্যগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • ওয়ার্কশপ এবং কোর্স: এই পণ্যগুলিতে সাধারণত একটি নির্দিষ্ট দক্ষতা বা বিষয়ে টিউটোরিয়াল এবং নির্দেশাবলী অন্তর্ভুক্ত থাকে।
  • eBooks: এই বইগুলি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে তথ্য বা নির্দেশাবলী প্রদান করে।
  • ভিডিও টিউটোরিয়াল: এই টিউটোরিয়ালগুলি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে কীভাবে করতে হয় তা দেখায়।
  • গ্রাফিক্স এবং টেমপ্লেট: এই পণ্যগুলি ব্যবহারকারীদের তাদের নিজস্ব ডিজিটাল সামগ্রী তৈরি করতে সহায়তা করে।

Consulting and Coaching

কনসাল্টিং এবং কোচিং হল এমন একটি সেবা যেখানে একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি অন্য ব্যক্তি বা দলকে তাদের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করে। কনসাল্টিং সাধারণত একটি নির্দিষ্ট সমস্যা বা চ্যালেঞ্জের সমাধানের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যখন কোচিং ব্যক্তিগত বা পেশাগত উন্নতির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।

ইউটিউবে কনসাল্টিং এবং কোচিংয়ের মাধ্যমে আয় করার জন্য, আপনাকে একটি জনপ্রিয় বিষয়ে একটি YouTube চ্যানেল তৈরি করতে হবে। আপনার চ্যানেলে, আপনি আপনার জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পারেন যাতে অন্যরা তাদের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করতে পারে। আপনি আপনার দর্শকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন এবং তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন।

ইউটিউবে কনসাল্টিং এবং কোচিংয়ের মাধ্যমে আয় করার কয়েকটি উপায় রয়েছে:

  • প্রশিক্ষণ কোর্স বিক্রি: আপনি আপনার জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা শেখানোর জন্য অনলাইন প্রশিক্ষণ কোর্স বিক্রি করতে পারেন।
  • ব্যক্তিগত কোচিং সেবা প্রদান: আপনি ব্যক্তিগত কোচিং সেবা প্রদান করতে পারেন যেখানে আপনি আপনার দর্শকদের তাদের লক্ষ্য অর্জনে ব্যক্তিগতভাবে সাহায্য করেন।
  • অন্যান্যদের জন্য কনসাল্টিং সেবা প্রদান: আপনি অন্যান্য ব্যবসা বা ব্যক্তিদের জন্য কনসাল্টিং সেবা প্রদান করতে পারেন।

ইউটিউবে কনসাল্টিং এবং কোচিংয়ের মাধ্যমে আয় করার জন্য, আপনাকে একটি দর্শক তৈরি করতে হবে যারা আপনার জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার জন্য অর্থ প্রদান করতে ইচ্ছুক। আপনি আপনার চ্যানেলে উচ্চ-মানের সামগ্রী তৈরি করে এবং আপনার দর্শকদের সাথে সক্রিয়ভাবে যোগাযোগ করে এটি করতে পারেন।

License Your Content

ইউটিউব একটি জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম যেখানে ব্যবহারকারীরা তাদের তৈরি ভিডিও আপলোড করে এবং অন্যরা সেগুলি দেখতে পারে। ইউটিউব থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে, যার মধ্যে একটি হল License Your Content। এই পদ্ধতিতে, আপনি আপনার ভিডিওগুলি অন্যদের ব্যবহার করার অনুমতি দেন এবং এর বিনিময়ে অর্থ পাবেন। 

কন্টেন্ট লাইসেন্স করার জন্য যা প্রয়োজন:

১) এমন ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে যা অন্য কেউ ব্যবহার করতে চায় এবং তার জন্য আপনাকে অর্থ প্রদানের জন্য রাজী থাকে। 

২) এর জন্য আপনাকে YouTube Partner Program এ যুক্ত হতে হবে।  

৩) আপনার ভিডিও এর জন্য একটি কন্টেন্ট আইডি (Content ID) তৈরি করতে হবে।  

ইউটিউব Content ID ব্যবহার করে আপনার ভিডিওগুলির মালিকানা চিহ্নিত করে। যখন কেউ আপনার ভিডিওগুলি ব্যবহার করে, তখন ইউটিউব Content ID-এর সাথে মিল খুঁজে পায় এবং মালিককে অর্থ প্রদান করে। এর সুবিধা হলো: 

  • এটি একটি PASSIVE INCOME এর উৎস। একবার আপনি আপনার ভিডিওগুলি অন্যদের ব্যবহারের জন্য অনুমতি দিলে, আপনি ভবিষ্যতেও সেগুলি থেকে আয় করতে পারবেন।
  • এটি আপনাকে আপনার ভিডিওগুলির আরও বেশি লোকের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করতে পারে।
  • এটি আপনাকে আপনার ভিডিওগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করতে পারে।

তবে ওভারল দিক বিবেচনায় এটা আপনাকে প্যাসিভ ভাবে ইউটিউব থেকে আয় করতে সুযোগ করে দিবে যা সত্যিই দারুন ব্যাপার। 

পরিশেষে কিছু কথা 

এই ছিলো ভিন্ন ধাচের দারুন ভাবে উপস্থাপিত “ইউটিউব থেকে আয় করার ১২ পদ্ধতি” সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য যা আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেল অনুযায়ী অনুসরণের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। ইউটিউব থেকে আয় করা বিষয়ক আরো জানতে অনুসরণ করুন আমাদের ওয়েবসাইটের ইউটিউব নামক ক্যাটাগরিটি, ধন্যবাদ।