পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায় সমূহ 

Salim Mahamud

Updated on:

পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায় সমূহ
পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায় সমূহ

পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায় সমূহ 

আপনি কি একজন স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট? পড়াশোনা করছেন? তবে নিজের প্রয়োজন ও হাত খরচ কিংবা পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজে যাচ্ছেন? অভিনন্দন আপনি সঠিক স্থানে রয়েছেন, এখান থেকে আপনি জানতে পারবেন কিভাবে পড়াশোনার পাশাপাশি  বাড়তি আয় করা যায়।

পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার প্রয়োজনীয়তা, উপায় সমূহ এবং সুবিধা জনক ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে এবারের আর্টিকেলে। আপনি যদি এই বিষয়ে যথাযথ জ্ঞান অর্জন করতে চান তবে এই আর্টিকেলটি খুব ভালোভাবে অধ্যায়ন করুন, এবং এখানে উল্লেখ করা নির্দেশনা গুলো সঠিকভাবে  অনুসরণ করুন। আচ্ছা, প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক  পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করা কেন জরুরী?

পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করা কেন জরুরি? 

বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী কেন পড়াশোনা করছে তার প্রশ্নের জবাবে এটা উত্তর দেয় যে “ভবিষ্যতে ভালো চাকরি পাওয়ার জন্য” দুঃখজনক হলে এটাই সত্যি যে, শেখার জন্য পড়াশোনা করার বিষয়টি থেকে আমরা অনেক দূরে সরে আসছি। যাইহোক এখানে বলছিলাম পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করা কেন জরুরী সে বিষয় সম্পর্কে।

দেখুন প্রথম বিষয়টি হচ্ছে যে, একজন শিক্ষার্থী যদি কেবল শুধুমাত্র পড়াশুনা নিয়েই ব্যস্ত থাকে তবে সে যখন নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে বাস্তব জীবনে পা রাখবে তখন খুব বড়সড় ধাক্কা খেতে হবে তাকে। কেননা বর্তমান যুগে মানি ম্যানেজমেন্ট এর বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে আমাদের জীবন যাপনে।

এখন আপনি শিক্ষার্থী অবস্থায় যদি মানি ম্যানেজমেন্ট এবং টাকা আয় করা সংক্রান্ত বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেন তবে দিন শেষে উপকারটি আপনারই হবে। এগুলো ছাড়াও পড়াশোনা পাশাপাশি আয়  প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে আরো যে সুবিধা গুলো রয়েছে সেগুলো হলো: 

  • স্বনির্ভরতা: পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করলে শিক্ষার্থীরা নিজেদের খরচ বহন করতে পারে। এতে তারা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে পারে এবং নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।
  • অনুপ্রেরণা: পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ বাড়ে। এতে তারা নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করতে পারে এবং সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে আরও বেশি উৎসাহী হয়।
  • অভিজ্ঞতা: পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করলে শিক্ষার্থীরা বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। এটি তাদের কর্মজীবনের জন্য প্রস্তুত করে তোলে এবং তাদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
  • ব্যক্তিত্ব বিকাশ: পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করলে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়তা করে। এতে তারা নেতৃত্ব, যোগাযোগ এবং সমস্যা সমাধানের মতো দক্ষতা অর্জন করতে পারে।

জেনে নিলাম পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করা কেন  জরুরী, এ পর্যায়ে জানব এ কাজটি করতে হলে আপনার কি কি থাকতে হবে বা কি প্রয়োজন সে সম্পর্কে। 

পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার জন্য কি কি প্রয়োজন?

মূলত আয় করার জন্য কি প্রয়োজন সেটি নির্ভর করে আপনি কোন সেক্টরটি বাছাই করে নিবেন আয় করার জন্য তার উপরে। এবার আপনি ছাত্র হয়ে থাকেন অথবা অন্য কোন কর্মজীবী, সেটি প্রাথমিক বিষয় হবে না। আপনাকে আগে দেখতে হবে আপনি কোন সেক্টরে কাজ করে আয় করতে চাচ্ছেন সেটা।

তবে প্রাথমিক পর্যায়ে এমন কিছু জিনিস উল্লেখ করা যায় যা আয় করার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হতে পারে। আপনি যদি অনলাইন সংক্রান্ত কোন সেক্টরে কাজ করে টাকা করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই একটি ডিজিটাল ডিভাইস থাকতে হবে, থাকতে হবে ইন্টারনেট সংযোগ, এবং যে সেক্টরের কাজ করতে চাচ্ছেন সেক্টরে যথাযথ দক্ষতা। 

অন্যদিকে অনলাইন বাদে অন্য যে সকল সেক্টর রয়েছে সেগুলোতে কাজ করার জন্য করতে হবে প্রচুর পরিশ্রম, হতে পারে এটা মেধাবৃত্তিক অথবা শারীরিক।  কাজ করার ইচ্ছা, সে ইচ্ছা থেকে এবং নৈতিকতার সহিত কাজ করে যাওয়ার মনোবল। 

আচ্ছা, যাই হোক এবার আমরা সরাসরি চলে যাচ্ছি পড়াশোনা পাশাপাশি আয় করার উপায় গুলো জানার বিষয়ে। শুনুন শুরু করা যাক.

পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায় সমূহ 

আমি জানি আপনি বেশ ওদের আগ্রহে জানতে চাচ্ছেন এমন কিছু কৌশল কিংবা উপায় সম্পর্কে যা অবলম্বনের মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করতে পারবেন। 2023 সালে এসে, আপনি যদি আয় করার উপায় না জেনে থাকেন তবে বলতেই হবে আপনি এখনো মধ্যযুগে বাস করছেন। সত্যি কথা এটাই যে বর্তমানে এত বেশি অপর্চুনিটি রয়েছে এবং এত বেশি কাজের সুযোগ রয়েছে যা পূরণ করার মত দক্ষতা বর্তমানে নেই। 

আপনি যেকোনো একটি সেক্টর ধরুন না কেন প্রচুর পরিমাণ কর্মীর সংকট রয়েছে। বিশেষ করে বর্তমানে অনলাইন ভিত্তিক দুনিয়ায় নেই এমন কোন কাজ নেই। আপনি প্রায় সকল সেক্টরের সব রকম কাজ অনলাইন এর মাধ্যমে করতে পারছেন এবং অনলাইনে সেখান থেকে আয় করার সুযোগ সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। 

আপনি চাইলে বর্তমানে পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইন থেকে আয় করতে পারেন, ব্যবসা করে আয় করতে পারেন, চাকরি করে আয় করতে পারেন, অথবা ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। হ্যাঁ প্রতিটি সেক্টরে এমন কিছুই স্পেসিফিক কাজ রয়েছে যেগুলো আপনি পড়াশোনার পাশাপাশি করে আয় করতে পারবেন। 

মূলত এবারের বিশেষ আর্টিকেলটিতে আমরা আপনাকে স্পেসিফিক সেই সেক্টরগুলো সম্পর্কে জানাবো যেই সেক্টরগুলোতে আপনি পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করতে পারবেন উপরে উল্লেখিত চারটি ক্যাটাগরি অনুযায়ী। শুরু করা যাক পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইনে আয় করার উপায় থেকে। 

পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইনে আয় করার উপায় 

এই পর্যায়ে আমরা উপস্থাপন করতে চাচ্ছি চারটি আলাদা সেক্টর সম্পর্কে যে চারটি সেক্টরে একজন শিক্ষার্থী নিজের দক্ষতা অনুযায়ী পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করতে পারবে। কি সেই সেক্টরগুলো? আসুন জানি..

ব্লগিং 

ব্লগিং, ব্লকিং এমন একটি সেক্টর যে সেক্টরে কাজ করে আপনি আনলিমিটেড টাকা আয় করতে পারবেন। জি হ্যাঁ আপনি ঠিক শুনেছেন আনলিমিটেড টাকা। তবে এটাকে কোন ভাবে সহজ হিসেবে বিবেচনা করবেন না। আপনি যদি যথাযথ উপায়ে অবলম্বন করে ব্লগিংকে প্রফেশনালি নিতে পারেন তাহলে ব্লগিংয়ের মাধ্যমে প্রতি মাসে লাখ টাকা আয় করা ও বড় কোন বিষয় নয়। 

তবে হ্যাঁ এখানে সাকসেস স্টোরির পাশাপাশি অনেক বিপলতার গল্পও রয়েছে। এমন অনেকেই রয়েছে যারা ইন্টারেস্ট নিয়ে ব্লগিং শুরু করেছিল তবে কিছুদিন যাওয়ার পর সেখানে ধৈর্য না রাখতে পেরে মাঝপথে ছেড়ে দিয়েছে।  এবং এটাই ছিল তাদের সবচেয়ে বড় ভুল কেননা ব্লগিং এমন একটি সেক্টর যে সেক্টরের মাধ্যমে আপনি একটি ইনকাম নয় বরং প্যাসিভ ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন। 

ব্লগিংয়ের মাধ্যমে কিভাবে আয় করবেন, কিংবা কিভাবে একটি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করবেন, এবং বাংলা ভাষায় ব্লগিং করে টাকা কিভাবে আয় করবেন সে বিষয়ে ইতিমধ্যে আমাদের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত আর্টিকেল দেয়া রয়েছে। আপনি যদি লেখালেখি এবং অন্যকে উপকার করার মানসিকতার কেউ হয়ে থাকেন, তাহলে  ব্লগিংয়ের মাধ্যমে আপনি বেশ ভালো পরিমানের অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। তবে আমাদের ওয়েবসাইটে থাকা ব্লগিং বিষয়ক আর্টিকেল গুলো দেখে, শিখে কাজ শুরু করতে পারেন।

ইউটিউবিং 

ব্লগিং এর মতই আপনি ইউটিউবে এর মাধ্যমে ওই পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করতে পারবেন। তো youtube এর বিষয়টি ঠিক কেমন? এক্ষেত্রে আপনাকে নির্দিষ্ট একটি নিস সিলেক্ট করে নিতে হবে যেই নিচের উপর বিস্তারিত ভাবে আপনি প্রতিনিয়ত ভিডিও আপলোড করবেন ইউটিউবে। 

পরবর্তীতে youtube চ্যানেল মনিটাইজেশনের মাধ্যমে উক্ত ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানোর প্রক্রিয়াতে আপনি রেভিনিউ জেনারেট করে আয় করতে পারবেন। ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার নিয়ম থেকে শুরু করে ইউটিউব থেকে আয় করার সকল উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত ইতিমধ্যে আমাদের ওয়েবসাইটে পাবলিস্ট করা হয়েছে।

আপনি চাইলেই সেগুলো দেখে অধ্যায়ন করে ইউটিউবে শুরু করতে পারেন। পড়াশোনার পাশাপাশি ইউটিউবিং কেন সেরা পছন্দ তার অন্যতম কারণ হলো এখান থেকে আপনি প্যাসিভ ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন। তার মানে এই যে, আপনি যখন কাজ করবেন শুধুমাত্র তখনই রেভিনিউ পাবেন এমন নয় বরং আপনার ওই কাজের ফলাফল পাবেন অনেকদিন যাবত। আর একবার আয় হওয়া শুরু হলে এটি প্রতিনিয়ত বাড়তেই থাকে যদি আপনি রেগুলার কাজ করে যান। 

কন্টেন্ট রাইটিং

একজন শিক্ষার্থী হিসেবে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার অন্যতম সেরা মাধ্যম হলো কন্টেন্ট রাইটিং করা। যেহেতু একজন শিক্ষার্থীকে সবসময় পড়াশোনার মধ্যেই থাকতে হয় এবং কনটেন্ট রাইটিং এও আপনাকে পড়াশোনার মধ্যেও থাকতে হবে। যার জন্য আপনি যেকোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর পড়াশোনা করে, সে বিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জন করে, সেই বিষয়টিকে লিখিত আকারে উপস্থাপনের মাধ্যমে আয় করার অন্যতম সেরা অপরচুনিটি পাচ্ছেন কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে। 

এক্ষেত্রে আপনি কোন ভাষায় কিংবা কোন বিষয়ের ওপর লিখবেন সেটা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করবে। আপনি যে বিষয়টিতে নিজেকে দক্ষ বলে মনে করেন এবং যে বিষয়টিতে লিখে আপনার ভালো অনুভূতি হয় আপনি সেই বিষয়টিকেই বাছাই করে নিতে পারেন। 

বর্তমানে এমন অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারবেন, পাশাপাশি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে আপনি কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে নিজেকে নিযুক্ত করে সেখান থেকে অর্ডার নিয়ে আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারবেন। 

একজন কন্টেন্ট রাইটার মাসে প্রায় 20 থেকে 50 হাজার টাকা অব্দি আয় করতে পারে। আপনি যদি পড়াশোনার পাশাপাশি এই কাজটি করতে চান তবে আপনার জন্য আদর্শ কাজ হবে টাকা আয় করার জন্য। কেননা, এখানে আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ করতে হচ্ছে না আপনি আপনার সুযোগ যে কোন সময় নিজের মতো করে  আর্টিকেল লিখতে পারবেন। 

মাইক্রোজবস  

সাধারণত মাইক্রোজবস হল এমন ছোট ছোট কাজ যা করতে বেশি সময় বা স্কিল লাগে না। এগুলো সাধারণত কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টা সময় লাগে। মাইক্রোজবস করা একটি ভালো উপায় হতে পারে অনলাইনে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের জন্য। মাইক্রোজবস করার জন্য অনেকগুলি বিভিন্ন সাইট এবং অ্যাপ রয়েছে। কিছু জনপ্রিয় মাইক্রোজবস সাইট হলো:

  • Fiverr
  • Upwork
  • Freelancer
  • PeoplePerHour
  • Fiverr
  • Microworkers
  • Clickworker
  • Amazon Mechanical Turk

বিশেষ করে Microworkers প্ল্যাটফর্মটি বেশ জনপ্রিয় এই ধরনের কাজগুলোর জন্য। এখানে আপনি সাধারণত যে কাজগুলো করে আয় করতে পারবেন সেগুলো হলো: জিমেইল তৈরি করা, ভিডিও দেখা লাইক করা কমেন্ট করা, যেকোনো ওয়েবসাইট কিংবা অ্যাপ এ সাইন আপ করা, বিভিন্ন গেমস এবং সফটওয়্যার ডাউনলোড করা ইত্যাদি এর মত ছোট ছোট কাজ। শুধু তাই নয় রয়েছে এমন অনেক ধরনের কাজ যেগুলো করতে বেশি একটা সময়ের প্রয়োজন হয় না, তবে এগুলো করার মাধ্যমে আপনি টাকা আয় করতে পারবেন।

যেহেতু একজন শিক্ষার্থী হিসেবে পড়াশোনার পাশাপাশি আপনার হাতে খুব বেশি সময় থাকবেনা তাই নিজের অবসর সময়ে এই ছোটখাট ও কাজগুলো করার মাধ্যমে খুব অল্প পরিসরে হাত খরচ আয় করতে পারেন। 

পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা  

এতক্ষণ অব্দি যেগুলো বলছিলাম সেগুলো অনলাইন ভিত্তিক কিছু কাজ যা করে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করতে পারবেন। তবে এমন কিছু শিক্ষার্থী রয়েছে যারা ভিন্ন ধর্মী কিছু কাজ করতে চায় এবং এমন কাজ করতে চায় যেগুলোর প্রভাব এখন থেকে শুরু করে ভবিষ্যতেও পাবে। এবং উত্তর সেক্টর কে কর্পোরেট ওয়ার্ক হিসেবেও রিপ্রেজেন্ট করতে পারবে। বিশেষ করে কলেজ এবং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা করার মানসিকতা রাখে। তাই এই পর্যায়ে থাকছে কিছু ভিন্নধর্মী ব্যবসা, যা পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উৎস হতে পারে। 

ড্রপশিপিং

আপনার মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছে যারা ড্রপ শিপিং সম্পর্কে ইতিমধ্যে অবগত। তবে যারা ড্রপ শিপিং সম্পর্কে খুব একটা ধারণা রাখেনা তাদের জন্য বলছি, “ড্রপশিপিং হল এমন একটি ব্যবসা মডেল যেখানে একজন ব্যবসায়ী কোন পণ্য স্টক করে না। পরিবর্তে, তারা গ্রাহকের কাছ থেকে অর্ডার পাওয়ার পরে সরবরাহকারীর কাছে ক্রেতার যাবতীয় তথ্য সাবমিট করে এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি ক্রেতার কাছে পণ্য পাঠিয়ে দেয় এবং এ কাজের জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট হারে কমিশন দিয়ে থাকে।” 

যদিও এই মডেলের উপর ব্যবসা পরিচালনা করে খুব বেশি একটা লাভবান হওয়া যায় না তবে এখানে যেহেতু আপনার পরিশ্রম 75% কমে যাচ্ছে সে হিসেবে এই কাজটি আপনি করতে পারেন শিক্ষার্থী হিসেবে পড়াশোনার পাশাপাশি। আপনি ব্যবসা করলেন আর আপনার ব্যবসার পণ্য ক্রয় এবং ডেলিভারি সংক্রান্ত কোনো ঝামেলাও করতে হলো না। 

সাধারণত, ড্রপশিপাররা তাদের বিক্রয়ের উপর 20-30% মার্জিন অর্জন করে। এর মানে হল যে যদি আপনি একটি পণ্য $100 এ বিক্রি করেন, তাহলে আপনি $20-30 লাভ করতে পারেন। ড্রপ শিপিং করার জন্য আপনি নিম্নলিখিত ওয়ার্কিং লেআউটটি অনুসরণ করতে পারেন: 

১) নির্দিষ্ট একটি নিশ (প্রোডাক্ট) সিলেকশন।

২) প্রোডাক্ট এর সরবরাহকারী বা ড্রপশপার খোঁজা

৩) নিজের অনলাইন শপ বা স্টোর খোলা

৪) পন্যের যাবতীয় তথ্য উপস্থাপন করে মার্কেটিং করা

৫) ক্রেতা পণ্য ক্রয় করতে ইচ্ছুক হলে তার তথ্য সংগ্রহ এবং ড্রপশপার এর কাছে সাবমিট। 

রিসেলিং 

অনেকটা ড্রপ শিপিং এর মত হলেও রিসেলিং ব্যবসা কিছুটা ভিন্ন। রিসেলিং হল এমন একটি ব্যবসা মডেল যেখানে একজন ব্যবসায়ী অন্য ব্যবসায়ী বা নির্মাতার কাছ থেকে পণ্যগুলি কিনে এবং তারপর সেগুলিকে একটি লাভের জন্য বিক্রি করে।

রিসেলিং ব্যবসাটি সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয় এমন এরিয়াতে যেই এরিয়াতে আপনার বাছাইকৃত পণ্যটির চাহিদা বেশি তবে তার যোগান কম। এক্ষেত্রে আপনি অন্য স্থান থেকে বা অন্য ব্যবসায়ের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে সেটার উপর নিজের প্রফিট মার্জিন যুক্ত করে একই পণ্য আবার বিক্রি করতে পারেন।

এ কাজটি চাইলে আপনি অনলাইনেও করতে পারেন আবার অফলাইনেও করতে পারেন, এটা নির্ভর করবে আপনি কোন পণ্য নিয়ে কাজ করছেন তার উপর।  রিসেলিং ব্যবসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে লাভজনক প্রোডাক্ট হলো ইলেকট্রনিক ডিভাইস, মোবাইল অ্যাকসেসরিজ, স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, টেলিভিশন, পোশাক, জুতা, ব্যাগ, খেলনা, খেলাধুলার সরঞ্জাম সহ আরো অনেক। 

যে পণ্যগুলি বিক্রি করবেন সেগুলি নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিবেচনা করে বেছে নিন:

চাহিদা: আপনি যে পণ্যগুলি বিক্রি করবেন সেগুলির চাহিদা থাকতে হবে। আপনি যদি এমন পণ্য বিক্রি করেন যা জনপ্রিয় নয়, তাহলে আপনি ভাল মুনাফা অর্জন করতে পারবেন না।

মুনাফার সম্ভাবনা: আপনি যে পণ্যগুলি বিক্রি করবেন সেগুলি থেকে আপনাকে ভাল মুনাফা অর্জন করতে হবে। আপনি যদি এমন পণ্য বিক্রি করেন যার উপর আপনার বেশি লাভ নেই, তাহলে আপনি আপনার ব্যবসায় টিকতে পারবেন না।

পরিবহন ব্যয়: আপনি যদি ড্রপশিপিং না করেন, তাহলে আপনাকে পণ্যগুলি গ্রাহকদের কাছে পাঠানোর জন্য পরিবহন ব্যয় বহন করতে হবে। এই ব্যয়গুলি বিবেচনা করে পণ্য বাছাই করুন।

শিক্ষার্থী হিসেবে আপনি এ কাজটিও করতে পারবেন যদি আপনার হাতে যথাযথ সময় থাকে, এবং আপনি যদি এমন এরিয়াতে থাকেন যে এরিয়াতে কোন নির্দিষ্ট পণ্যের চাহিদার পাশাপাশি সেখানে যোগান কম। এক্ষেত্রে অল্প বয়সেই অল্প মূলধনের মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার জন্য ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। 

কোচিং সেন্টার 

সত্যি কথা বলতে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার জন্য আরেকটি দারুন উপায় হল টিউশনি করানো। তবে দেখা যায় টিউশনি করার ক্ষেত্রে পৃথক পৃথকভাবে শিক্ষার্থীদের কে সময় দিতে গেলে আপনার নিজের সময়ে টান-পরন সৃষ্টি হতে পারে। এমতাবস্থায় সবচেয়ে উত্তম উপায় হল কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে শিক্ষার্থী থেকে পড়ানো। আপনি যদি টিউশনি করাতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন কিংবা আপনার যদি এ কাজটি করতে ভালো লাগে তাহলে এই নির্দিষ্ট একটি স্থান সিলেক্ট করে সেখানে নিজের কোচিং সেন্টার শুরু করতে পারেন।

সেখানে আপনি নিজের ছোট শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পড়ানোর মাধ্যমে আয় করতে পারেন, পাশাপাশি স্টুডেন্ট এর সংখ্যা বেশি হলে কিংবা আরো ভালো এক্সপেরিয়েন্স প্রদান করতে একাধিক শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে কোচিং সেন্টার বর্তমান সময়ে সবচেয়ে লাভজনক এবং সম্মানজনক ব্যবসা। 

পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি

আপনার যদি অনলাইন ভিত্তিক কোন দক্ষতা না থেকে থাকে কাজ করার জন্য, পাশাপাশি ব্যবসা করার জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজি কিংবা intension না থেকে থাকে তবে পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করার মাধ্যমেও আয় করতে পারবেন। তবে বলে রাখা ভালো পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করার ক্ষেত্রে চাকরির মান অবশ্যই খুব উচ্চ লেভেলের হবে না। অধিকাংশ সময়ে আপনাকে খুঁজে নিতে হবে কোন পার্ট টাইম জব, কিংবা কোন মার্কেটিং সেক্টরের জব, অথবা অনুরূপ কোন জব। এই পর্যায়ে বর্তমানে ট্রেন্ডিং কিছু জব সম্পর্কে জানাবো যেগুলো বর্তমানে বিভিন্ন স্কুল কলেজ এবং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা করার মাধ্যমে কিছু বাড়তি আয় করে নিচ্ছে। 

রাইড শেয়ারিং 

আপনি একজন শিক্ষার্থী, পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করতে চাচ্ছেন। হতে পারে নিজের হাত খরচের জন্য কিংবা বাড়তে কিছু ইনকামের জন্য। আপনার কাছে একটি বাইক রয়েছে, সে বাইকটি অহেতুক ঘোরাঘুরির জন্য না ব্যবহার করে রাইড শেয়ারিং এর মাধ্যমে বাড়িতে কিছু টাকা আয় করার উৎস বানাতে পারেন। জি, আমি আপনাকে রাইড শেয়ারিং  এর মাধ্যমে আয় করার কথা বলছি। 

বর্তমানে উবার, পাঠাও এর মত প্ল্যাটফর্ম গুলো বাংলাদেশে এভেলেবল হওয়ার কারণে রাইড শেয়ারিং এর মত সার্ভিস এর মাধ্যমে টাকা আয় করার পথ শিথিল হয়েছে। আর যেহেতু আপনি বর্তমানে একজন শিক্ষার্থী, পড়াশোনা করছেন সে ক্ষেত্রে আপনার হাতে খুব বেশি সময় থাকবে না বা ফুলটাইম জব করার মত সময় আপনার হাতে থাকবে না। এক্ষেত্রে দৈনিক কিছু সময়ের জন্য রাইড শেয়ারিং করে দিনশেষে ভালো পরিমাণের টাকা ইনকাম করতে পারবেন। 

এক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে প্লাটফর্মগুলোতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে পাশাপাশি আরও কিছু কাজ রয়েছে, তাই রাইড শেয়ারিং এর মাধ্যমে আয় করার উপায় সম্পর্কে জানতে উক্ত আর্টিকেলটি দেখে নিবেন। 

ফুডপান্ডা ডেলিভারি ম্যান  

মোটামুটি অনলাইন ঘাঁটাঘাটি করে এমন মানুষ ফুটপান্ডা নাম শুনিনি তা হতেই পারে না, বর্তমান সময়ে ফুড এন্ড বেভারেজ ক্যাটাগরির সবচেয়ে বড় অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হল ফুড পান্ডা। তারা কাজ করে রেস্টুরেন্ট থেকে তৈরি করা খাবার সরাসরি গ্রাহকের ঘরে পৌঁছে দেওয়ার। এ কাজের জন্য প্রয়োজন হয় প্রতিটি এলাকাভিত্তিক পর্যায়ে প্রচুর ফুডপান্ডার ডেলিভারি ম্যান। যেখানে তৈরি হয় নতুন কাজের অপরচুনিটি। একটি সার্ভেতে দেখা গেয়েছে, বর্তমানে ফুডপান্ডা ডেলিভারি ম্যান গুলোর মধ্যে অধিকাংশ ডেলিভারি ম্যানই হলো শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে বিভিন্ন পাবলিক এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা নিজেদের খরচ বহনের জন্য ডেলিভারি ম্যান এর কাজ করে থাকে।

এক্ষেত্রে আপনি যে এলাকায় বসবাস করছেন আপনি চাইলে সে এলাকায় ফুডপান্ডার ডেলিভারি ম্যান হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারে। প্রতিনিয়ত ফুডপান্ডার পক্ষ থেকে ডেলিভারি ম্যান এর নিয়োগ দিয়ে থাকে, অনলাইনে আপনি সেখানে এপ্লাই করার মাধ্যমেও এই চাকরিটি পেতে পারবেন। প্রতিমাসে 15 থেকে 20 হাজার টাকা অব্দি আয় করা সম্ভব হয়ে থাকে ফুডপান্ডায় ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করে। 

দারাজ ডেলিভারি ম্যান 

ডেলিভারি ম্যান হওয়ার কাজ করতে চাইলে আপনি ফুড পান্ডা যদি বাছাই না করতে চান কিংবা সেটিতে যদি সিলেকশন না হয় সেক্ষেত্রে দারাজ এ যুক্ত হতে পারেন। আপনি অবশ্যই জেনে থাকবেন, বর্তমানে দারাজ হলো বাংলাদেশের এক নাম্বার ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম যারা কিনা বাংলাদেশের ৬৪ জেলার প্রতিটি প্রান্তেই অনলাইনে পণ্য বিক্রয় সংক্রান্ত কার্যক্রম করে থাকে। 

মূলত দারাজ এখানে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে, যেখানে বিভিন্ন বিক্রেতা নিজেদের অনলাইন সব তৈরি করে ব্যবসা করতে পারে অন্যদিকে জেনারেল ইউজাররা দারাজ এর মাধ্যমে পণ্য ক্রয় করে ঘরে বসে ডেলিভারি পেতে পারে। 

যেহেতু অনলাইনে পণ্য অর্ডার করে ঘরে বসে কে তারা পণ্য হাতে পায় তাই এখানেও ডেলিভারি ম্যান এর দায়িত্ব রয়েছে।  দারাজ ডেলিভারি ম্যান হওয়ার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে, কেননা এখানে আপনি প্রতিনিয়ত কাজের ওপর থাকবেন পাশাপাশি এখানে ফুডপান্ডার থেকেও বেশি বেতন দেয়া হয়। 

পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং

আপনি পড়াশোনার পাশাপাশি করার জন্য কোন ধরনের প্যাসিভ ইনকাম করবেন না, চাকরি কিংবা ব্যবসা করতেও আগ্রহী নয়। আপনি চাচ্ছেন এমন কিছু কাজ করতে যেখান থেকে ইনস্ট্যান্ট টাকা পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে আপনার জন্য সর্বোত্তম পন্থা হলো ফ্রিল্যান্সিং। এবার শুনুন পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং ক্যাটাগরিতে ঠিক কোন সেক্টরে কাজ করা যেতে পারে সেগুলো নিয়ে জেনে নেই। 

ওয়েব ডেভিলপিং 

ওয়েব ডেভেলপিং হল ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন তৈরির প্রক্রিয়া যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে দর্শনযোগ্য হয়। ওয়েব ডেভেলপাররা বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষা এবং সরঞ্জাম ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করে। ওয়েব ডেভেলপমেন্টের দুটি মূল অংশ রয়েছে:

ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপমেন্ট: ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপাররা ওয়েবসাইটের দৃশ্যমান অংশ তৈরি করে, যেমন লেআউট, ফন্ট, রঙ এবং ইন্টারঅ্যাকশন। ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপমেন্টের জন্য ব্যবহৃত সাধারণ প্রোগ্রামিং ভাষাগুলির মধ্যে রয়েছে HTML, CSS এবং JavaScript।

ব্যাক-এন্ড ডেভেলপমেন্ট: ব্যাক-এন্ড ডেভেলপাররা ওয়েবসাইটের ডেটাবেস এবং কার্যকারিতা তৈরি করে। ব্যাক-এন্ড ডেভেলপমেন্টের জন্য ব্যবহৃত সাধারণ প্রোগ্রামিং ভাষাগুলির মধ্যে রয়েছে PHP, Python, Java এবং Ruby।

একজন শিক্ষার্থী হিসেবে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার জন্য ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখা এবং রিলায়েন্স মার্কেটপ্লেস গুলোতে একজন ওয়েব ডেভলপার হয়ে কাজ করার খুব ভালো একটা অপরচুনিটি। 

ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার জন্য, আপনাকে প্রয়োজনীয় প্রোগ্রামিং ভাষা এবং সরঞ্জামগুলি শিখতে হবে। আপনি অনলাইন কোর্স, টিউটোরিয়াল এবং বইগুলির মাধ্যমে এই দক্ষতাগুলি শিখতে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং 

শিক্ষার্থী হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয় করা সম্ভব। ডিজিটাল মার্কেটিং একটি ক্রমবর্ধমান ক্ষেত্র এবং এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। শিক্ষার্থীরা এই ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বা বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করে আয় করতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিং খাতে শিক্ষার্থীরা তাদের দক্ষতা ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে: সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, ইমেল মার্কেটিং ইত্যাদি। ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলি যেমন: Upwork, Fiverr, Freelancer ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ফ্রিল্যান্সিং কাজ পেতে পারে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ খুব একটা কঠিন নয়, যথাযথ ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি আপনি যদি ছয় মাস সময় দেন তবে খুব ভালোভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ সম্পর্কে বেসিক লেভেলে পৌঁছে যাবেন। তারপর নির্দিষ্ট একটি সেক্টরকে কেন্দ্র করে সেই সেক্টরে এক্সপার্ট হয়ে দীর্ঘকালীন সময়ের জন্য কাজ করে আয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে উক্ত কাজ করার জন্য ছাত্রজীবনই উপযুক্ত সময়। 

গ্রাফিক্স ডিজাইনিং 

শিক্ষার্থী হিসেবে আপনার উচিত প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শেখা, পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়তি আয় করার চিন্তা থেকে আপনি নতুন কিছু শেখার কাজ হিসেবে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং শিখতে পারেন। কেননা গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এর মাধ্যমে আপনি খুব বেশি পরিমাণের অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। বর্তমান সময় থেকে শুরু করে সুদূর ভবিষ্যতে একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের চাহিদা হবে আকাশচুম্বি। 

গ্রাফিক ডিজাইনিং এ রয়েছে অনেকগুলো সেক্টর যেমন: 

১) লোগো ডিজাইন: একটি কোম্পানির বা সংস্থার জন্য একটি অনন্য এবং চিত্তাকর্ষক লোগো তৈরি করা। 

২) ব্র্যান্ডিং: একটি কোম্পানির বা সংস্থার জন্য একটি স্বতন্ত্র চেহারা এবং অনুভূতি তৈরি করা।

৩) ওয়েব ডিজাইন: একটি ওয়েবসাইটের জন্য একটি আকর্ষণীয় এবং ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস তৈরি করা।

৪) প্রিন্ট ডিজাইন: ব্যানার, বিলবোর্ড, ম্যাগাজিন কভার ইত্যাদির মতো মুদ্রিত উপাদানগুলির জন্য ডিজাইন তৈরি করা।

শুধু তাই নয় ডিজাইন জগতে যতগুলো কাজ রয়েছে ডিজিটালি সকল কাজই গ্রাফিক ডিজাইনাররা করে থাকে। বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসগুলোতে ভিজিট করলে বুঝতে পারবেন একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের চাহিদা কেমন এবং তাদের দিয়ে কাজ করালে কতটা পেমেন্ট করে থাকে। 

আপনার যদি ডিজাইনিং বিষয়ক ইন্টারেস্ট থেকে থাকে তবে ছাত্র জীবন থেকেই শুরু করতে পারেন নতুন স্কিল শিখা এবং এটাকে কেন্দ্র করে নিজের আয়ের উৎস শিথিল করা। 

ডাটা এন্ট্রি 

ডাটা এন্ট্রি হল কম্পিউটারের মাধ্যমে তথ্য প্রবেশ করার প্রক্রিয়া। এই তথ্যটি বিভিন্ন উৎস থেকে আসতে পারে, যেমন কাগজের নথি, ফর্ম, বা ইন্টারনেট। ডাটা এন্ট্রি অফিসিয়াল নথিপত্র প্রস্তুত করা, বিপণন প্রচারাভিযান পরিচালনা করা, এবং ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এটি করার জন্য, একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে টাইপ করতে সক্ষম হতে হবে। এছাড়াও, তাদের অবশ্যই কম্পিউটারের সাথে কাজ করার এবং বিভিন্ন ধরনের ফাইলগুলি পরিচালনা করার দক্ষতা থাকতে হবে।

আপনি একজন শিক্ষার্থী? আপনার বাসায় ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার রয়েছে? এবং আপনি চাচ্ছেন পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়তি আয় করার জন্য খুব সহজ একটি উপায় খুঁজতে এবং অনলাইনে ঘরে বসে আয় করতে? তাহলে চোখ বন্ধ করে ডাটা এন্টির কাজ শিখে সে কাজ করা শুরু করতে পারেন।

ডাটা এন্ট্রি একটি চাহিদাপূর্ণ দক্ষতা যা বিভিন্ন শিল্পে চাকরি পাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। ডাটা এন্ট্রি পেশাদাররা সাধারণত ফুল-টাইম বা পার্ট-টাইম কাজ করে এবং তাদের বেতন তাদের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে। ডাটা এন্ট্রি শিখতে, একজন ব্যক্তি অনলাইন কোর্স কিংবা কিংবা অফলাইনে কোন সেন্টারে  যুক্ত হতে পারেন।  

পরিশেষে কিছু কথা 

পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায় অনেক জেনেছেন, এবার কিছু বাস্তবমুখী কথা শুনুন। প্রথমত,আপনি যদি সারাদিন উপায়ে খুঁজতে ব্যয় করে থাকেন আপনার কোন লাভ হবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি নিজে যেকোনো একটি কাজে নিযুক্ত হচ্ছেন। যেহেতু আপনি এখনো শিক্ষা জীবন পার করছেন সেহেতু আপনার কাছে এখনো প্রচন্ড সময় রয়েছে নিজেকে এক্সপ্লোর করার। 

প্রতিনিয়ত নতুন কিছু ট্রাই করে দেখতে পারেন আপনি নিজেকে কোন সেক্টরে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। শিক্ষাজীবনের এই সময়টুকুতে নিজের ভেতরে লুকায়িত থাকা দক্ষ তাকে বের করে নিয়ে আসতে একের পর এক দক্ষতা ভিত্তিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে অব্যাহত রাখুন। আপনি কতটুকু আয় করতে পারছেন সেটা কখনোই মুখ্য বিষয় নয় তবে আপনি কোন দক্ষতা ভিত্তিক কাজ কতটা ভালোভাবে করতে বা শিখতে পারছেন এটাই আপনার কাছে বড় বিষয় হওয়া উচিৎ। 

তবে আশা করি এবারের আর্টিকেলের মাধ্যমে শিক্ষার্থী হিসেবে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় করার উপায় সম্পর্কে জেনে বেশ উপকৃত হয়েছেন। আমাদের এই ওয়েবসাইটটিতে অনলাইনে আয় করার এমন শতশত উপায়ে রয়েছে যেগুলো থেকে আপনি অনলাইনে আয় করার পথ শিথিল করতে পারবেন। আপনি যদি অনলাইনে আয় করতে চান এবং অনলাইনে আয় করার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে জানতে চান তবে আমাদের ওয়েবসাইটটি অনুসরণ করতে পারেন, ধন্যবাদ।