মাসে লাখ টাকা আয় করার উপায় । জানলে অবাক হবেন ২০ টি উপায় !! 

Salim Mahamud

Updated on:

মাসে লাখ টাকা আয় করার উপায়
মাসে লাখ টাকা আয় করার উপায়

মাসে লাখ টাকা আয় করার উপায় । জানলে অবাক হবেন ২০ টি উপায় !! 

আপনার কি টাকা পয়সা নিয়ে কিছু ফ্যান্টাসি রয়েছে? আপনিও কি মাসে লাখ টাকা আয় করতে চান? সত্যি কথা বলতে মাসে লাখ টাকা আয় করার অসংখ্য উপায় রয়েছে যদি আপনি সঠিকভাবে সে উপায়গুলো অনুসরণ করতে পারেন তবে অবশ্যই আপনি মাসে লাখ টাকা ইনকাম করতে সক্ষম হবেন।

আপনি কি জানতে চান না কোন সেই উপায়ে, যেগুলোর মাধ্যমে মাসে লাখ টাকা ইনকাম করা যাবে? উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তবে এবারের বিশেষ আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। কেননা, এই আর্টিকেলে আমরা জানাবো সেই উপায় সম্পর্কে যে উপায় গুলো অনুসরণ করলেই মাসে লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।

মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব কি?

প্রথমেই বলে রাখি শুনতে যে এতটা সহজ মনে হচ্ছে কাজটা মোটেও তত সহজ নয়। মাসে লাখ টাকা ইনকাম করতে হলে আপনাকে সেই লাখ টাকার মত পরিশ্রম করতে হবে। তবে হ্যাঁ সম্ভব, আমাদের আশেপাশে তাকালে এমন অনেক মানুষকে খুঁজে পাব যারা মাসে লাখ টাকা আয় ইতিমধ্যেই করছে। তারা ঠিক কি কাজ করে কিভাবে কোন উপায়ে মাসে লাখ টাকা আয় করে এবারের আর্টিকেলে আমরা সেটারই বিশ্লেষণ করবো। আপনিও যদি সে কাজগুলো করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে তোলেন তবে আপনিও মাসে লাখ টাকা আয় করতে পারবেন। 

আচ্ছা আর্টিকেলটি তো বিস্তারিত জানাবোইতবে এখন এক কথায় যদি উত্তর দিতে হয় যে, “মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব কি না?” তার উত্তর হবে – হ্যাঁ, সম্ভব অবশ্যই সম্ভব।  

কিভাবে মাসে লাখ টাকা আয় করা যায়? 

এবার নিশ্চয়ই আপনার মনে প্রশ্ন জাগছে যে কিভাবে মাসে লাখ টাকা ইনকাম করা যায়? এমন কোন পদ্ধতি রয়েছে যার দ্বারা এমনটা করা সম্ভব? সত্যি কথা বলতে এমন অনেক কাজই রয়েছে যে কাজগুলো করার মাধ্যমে মাসে লাখ টাকা আয় করতে পারবেন। বুঝার সুবিধার্থে নিম্নে তিনটি ক্যাটাগরিতে কাজগুলো উপস্থাপন করছি: 

  • চাকরি করে: সরকারি বেসরকারি এমন অনেক চাকরি রয়েছে যে সকল চারটি করলে আপনার মাসিক বেতন হবে প্রায় লক্ষ টাকার অধিক। সে চাকরি গুলো কি এটা জানাবো আর্টিকেলের বিস্তারিত সেকশনে। তবে প্রাথমিকভাবে এটা বলা যায় যে চাকরি করার মাধ্যমেও আপনি মাসে লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।
  • ব্যবসা করে: আমাদের ইসলাম ধর্মে ব্যবসাকে করা হয়েছে সর্বোত্তম উপায় অর্থ উপার্জন করার জন্য। মাসে হাজার টাকা হোক, লাখ টাকা হোক, কোটি টাকা হোক ব্যবসা করে আয় করা যায় না এমন কোন পরিমাণের অর্থই নেই। প্রকৃতপক্ষে টাকা ইনকাম করার জন্য বা ধনী হওয়ার জন্য সবচেয়ে সুন্দর উপায়টি হলো ব্যবসা করা। অতএব বলা যায় আপনি ব্যবসা করার মাধ্যমেও মাসে লাখ টাকা আয় করতে পারবেন, তবে সে কোন ব্যবসা সেগুলো জানাবো আর্টিকেলের বিস্তারিত সেকশনে। 
  • অন্যান্য কাজ করে: অনেকেই ভাবতে পারেন চাকরি হলেও ব্যবসা হল এখনো আবার এমন কোন উপায় বাকি রয়েছে যেটা অনুসরণ করলে মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করা যাবে? হ্যাঁ এখনো এমন কিছু উপায় রয়েছে। এই উপায় ক্যাটাগরির মধ্যে যদি একটি নাম আমি হাইলাইট করতে চাই তাহলে সেটি হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। এমন অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যাদের মাসিক আয় লক্ষ টাকার অধিক।  

যাইহোক আমরা ক্যাটাগরি সম্পর্কে আপনাকে ধারণা দিয়ে ফেললাম। এবার এ সকল ক্যাটাগরিকে কেন্দ্র করে যে কাজগুলো রয়েছে এক এক করে সেগুলো জানানোর পালা। তাহলে এবার শুরু করা যাক আমাদের এবারের বিশেষ আর্টিকেলটির মূল বক্তব্য বা মূল উপস্থাপনা। 

মাসে লাখ টাকা আয় করার উপায় সমূহ 

এই পর্যায়ে এক এক করে তিনটি ক্যাটাগরির বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে জানাবো যে উপায় অবলম্বন করলে আপনিও মাসে লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করতে সক্ষম হবেন। চলুন শুরু করা যাক চাকরির মাধ্যমে.. 

যেসব চাকরি করে মাসে লাখ টাকা আয় করা যায় 

এবার চলুন দেখে নেওয়া যাক এমন কোন চাকরি গুলো রয়েছে বর্তমানে বাজারে যেগুলো করলে আপনাকে মাসিক বেতন দেওয়া হবে প্রায় লক্ষ টাকার মত।  আমরা কেবল সেই চাকরিগুলোকেই লিপিবদ্ধ করেছি তালিকায়, যে চাকরিগুলো সর্বনিম্ন বেতন এক লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ এক লাখের অধিক হতে পারে। তাহলে আসুন এবার এক এক করে এসে চাকরি গুলো  সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। 

১। আইটি ম্যানেজার

আইটি ম্যানেজার হলো এমন একটি পেশা যে পেশায় নিয়োগ প্রাপ্ত ব্যক্তি একটি প্রতিষ্ঠানের তথ্যপ্রযুক্তি তথা আইটি সেক্টরে কাজ করে। এ পেশায় নিয়োগকর্মী আইটি সিস্টেম এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, বাস্তবায়ন, পরিচালনার পাশাপাশি আইটি রিসোর্স এবং কর্মী ব্যবস্থাপনা নিয়েও কাজ করে থাকে। একত্রে বলা যায় মাল্টিপল দিক নিয়ন্ত্রণ করতে হয় একজন আইটি ম্যানেজারকে। 

আইটি ম্যানেজার হতে হলে সাধারণভাবে স্নাতক ডিগ্রি প্রয়োজন। আপনি যে বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তা নির্ভর করে আপনি কোন ধরনের আইটি ম্যানেজার হতে চান তার উপর। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, নেটওয়ার্কিং বা ডেটাবেস ম্যানেজমেন্টে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে আপনার কম্পিউটার সায়েন্স বা তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করা উচিত। আর যদি আপনি ব্যবসায়িক আইটি ম্যানেজার হতে চান, তাহলে আপনার ব্যবসা প্রশাসন বা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করা উচিত। 

এগুলো ছাড়াও একজন আইটি ম্যানেজার হতে আপনার মধ্যে উল্লেখিত গুণাগুণ গুলি থাকতে হবে: 

১)  আপনাকে অবশ্যই প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এ বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আপনি  স্নাতক ডিগ্রী সহ বিভিন্ন আইটি সার্টিফিকেট কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। 

২) যেহেতু আপনি একজন ম্যানেজার হিসেবে কাজ করবেন তাই অবশ্যই নেতৃত্বদানের উপর দক্ষ হতে হবে। 

৩) একজন আইটি ম্যানেজারকে আইটি বিষয়ক বিভিন্ন সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান বিবেচনা করার মত আইটি বিষয়ক বিভিন্ন সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান বিবেচনা করার মত জ্ঞান রাখতে হবে। পাশাপাশি নেটওয়ার্কের এবং পরিচালনা বিষয়ক সক্ষমতা থাকা উচিত। বাংলাদেশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সাধারণত একজন আইটি ম্যানেজারের এভারেজ মাসিক বেতন ২,৭১,২৪৭ টাকা। 

২। মার্কেটিং ম্যানেজার

মার্কেটিং ম্যানেজার হলেন একজন ব্যবসায়িক ব্যবস্থাপক যিনি কোম্পানির মার্কেটিং সংক্রান্ত কার্যক্রম করে থাকেন। মার্কেটিং ম্যানেজারের কাজ হল একটি কোম্পানির পণ্য বা সেবাগুলোর সম্ভাব্য গ্রাহকের কাছে সেটিকে আকর্ষণীয় করে তুলে উপস্থাপন এবং তা বিক্রি করা।

 একজন মার্কেটিং ম্যানেজারের সাধারণত যে কাজগুলো থাকে সেগুলো হলোঃ

১) যথাযথভাবে বাজার গবেষণা, পরিচালনা এবং বিশ্লেষণ করা

২) কোম্পানির পণ্য বা সেবার জন্য টার্গেটেড বাজার এবং টার্গেটেড অডিয়েন্স সিলেক্ট করা

৩) মার্কেটিং অভিযান চালানো, তা বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে স্টেপগ্রহণ ও পরিচালনা

৪)মার্কেটিং কার্যক্রম কার্যকর ভাবে পরিচালনা।

আপনি যদি একজন মার্কেটিং ম্যানেজার হতে চান তবে সাধারণত আপনাকে ব্যবসা প্রশাসন মার্কেটিং কিংবা বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী কিংবা স্নাতকোত্তর ডিগ্রির প্রয়োজন হবে।তাছাড়া একজন মার্কেটিং ম্যানেজারের মধ্যে যে সকল গুণাবলী থাকা উচিত সেগুলো হলো: 

  • উচ্চ যোগাযোগ দক্ষতা
  • বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা
  • সৃজনশীল দক্ষতা
  • সমস্যা সমাধানের দক্ষতা
  • নেতৃত্ব দক্ষতা
  • দলগত কাজের দক্ষতা
  • কঠোর পরিশ্রম করার ইচ্ছা

যাইহোক বলছিলাম মাসে লাখ টাকা আয় করার উপায় হিসেবে মার্কেটিং ম্যানেজারের পেশা সম্পর্কে। সাধারণত একজন মার্কেটিং ম্যানেজারের এভারেজ মাসিক বেতন ২,৫৬,২৫০ টাকা।

৩। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর বা লেকচারারার

বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর বা লেকচারার একটি সম্মানজনক পেশা। এই পেশায় আগ্রহী ব্যক্তিদের অবশ্যই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি কৃতিত্ব অর্জন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর বা লেকচারার হওয়ার জন্য একজনকে অবশ্যই পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মাস্টার্স ডিগ্রিধারীদেরও প্রফেসর বার লেকচারার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে থাকে। 

একজন প্রফেসর বা লেকচারারের দায়িত্ব হল শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা, গবেষণা পরিচালনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের পাশাপাশি অন্যান্য শিক্ষাগত ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করা।

একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর বা লেকচারারের বেতন নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপরে এর মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান, বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি, প্রফেসর বা লেকচারারের অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা সহ আরো কিছু বিষয়। তবে বর্তমান সময়ে একজন প্রফেসর কিংবা লেকচারারের এভারেজ মাসিক বেতন ১,৯৭,০৪৭ টাকা হয়ে থাকে। 

৪। এইচআর ম্যানেজার  

এইচ আর ম্যানেজার হলো এমন একজন ব্যক্তি যিনি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের দক্ষ ও সফলভাবে পরিচালনা করে থাকে। তিনি প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য কাজ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানের জন্য দক্ষ কর্মী নিয়োগ, তাদের প্রশিক্ষণ, বেতন ও কর্ম ক্ষমতা মূল্যায়ন সহকর্মীদের সুযোগ-সুবিধা এবং কর্মীদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়ে উপরে কাজ করে থাকেন। 

স্বাভাবিকভাবে একজন এইচআর  ম্যানেজারের কাজ হলো প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য কর্মীদের দক্ষতার সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। একজন এইচ আর ম্যানেজার হতে সাধারণত ব্যবসা প্রশাসন বা মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ডিগ্রী অর্জন করতে হয়। তাছাড়া কর্মীদের সাথে কাজ করার মত মানসিকতা, তাদের সকল সমস্যার সমাধান খোঁজা এবং নেতৃত্ব প্রদানের মত দক্ষতা অর্জন করতে হয়। 

 বাংলাদেশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একটি কোম্পানির একজন এইচআর ম্যানেজারের গড় মাসিক বেতন ১,৬৬,০৫১ টাকা হয়ে থাকে। 

৫। সফটওয়্যার বা অ্যাপ ডেভেলপার 

আচ্ছা এখানে বলা হয়েছে সফটওয়্যার ডেভলপার এবং অ্যাপ ডেভলপার স্বাভাবিকভাবে দুইটা আলাদা হলেও অনেকে উভয়কে একই মনে করে থাকে। তা যাই হোক সফটওয়্যার ডেভলপার এবং অ্যাপ ডেভলপার কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর উপর ভিত্তি করে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তোলে। 

 একজন সফটওয়্যার ডেভেলপার যে বিষয়ের উপর কাজ করে সেগুলো হলো: 

  • ওয়েবসাইট
  • এপ্লিকেশন
  • গেমস
  • অপারেটিং সিস্টেম সহ আরো অনেক কিছু।

অন্যদিকে একজন অ্যাপ ডেভলপার এর কাজ হল মোবাইল ডিভাইসের জন্য এপ্লিকেশন তৈরি করা যেটাকে আমরা অ্যাপস বলে থাকে। এক্ষেত্রে তিনি কেবলমাত্র স্মার্টফোন ট্যাবলেট সহ অনুরূপ ডিভাইসের জন্য এপ্লিকেশন তৈরি করে থাকেন। 

সফটওয়্যার কিংবা অ্যাপ ডেভেলপার সেক্টরে কাজ করার জন্য অবশ্যই আপনাকে কম্পিউটার সাইন্স, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার বা অনুরূপ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। 

বাংলাদেশে পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একজন সফটওয়্যার ডেভেলপার কিংবা অ্যাপ ডেভলপারের অ্যাভারেজ মাসিক বেতন ১,৫২,৮৪০ টাকা হয়ে থাকে। 

৬। ইঞ্জিনিয়ার 

ইঞ্জিনিয়ার হলো এমন একজন ব্যক্তি যিনি বিজ্ঞান এবং গণিতের নীতিগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রযুক্তি তৈরি করে, ডিজাইন করে, সেগুলোর ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ করেন। মানব সমাজে একজন ইঞ্জিনিয়ারের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা তাদের জন্যই সমাজে গড়ে উঠেছে পরিবহন, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, উৎপাদন সংক্রান্ত কার্যক্রম, নির্মাণ শিল্প।

সাধারণত বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন সেক্টরের ইঞ্জিনিয়ার রয়েছে। বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ সময়ের জন্য ইঞ্জিনিয়ার এর চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়তেই থাকবে। দেশ জাতির সভ্যতা এবং প্রযুক্তির যতটা উন্নতি হবে ঠিক ততটাই ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজন বৃদ্ধি পাবে। আসুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক বিভিন্ন ধরনের ইঞ্জিনিয়ারদের কার্যক্রম: 

  • সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা সড়ক, সেতু, বিল্ডিং এবং অন্যান্য অবকাঠামো তৈরি করে।
  • মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা যন্ত্রপাতি, মোটর এবং অন্যান্য যান্ত্রিক সিস্টেম ডিজাইন এবং তৈরি করে।
  • ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়াররা ইলেকট্রনিক্স, কম্পিউটার এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক সিস্টেম ডিজাইন এবং তৈরি করে।
  • রাসায়নিক ইঞ্জিনিয়াররা রাসায়নিক পদার্থ এবং প্রক্রিয়া ডিজাইন এবং তৈরি করে।
  • কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়াররা কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার এবং নেটওয়ার্ক ডিজাইন এবং তৈরি করে।
  • পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়াররা তেল এবং গ্যাসের উৎস, শোধন এবং পরিবহণ ডিজাইন এবং তৈরি করে।
  • পরিবেশগত ইঞ্জিনিয়াররা পরিবেশগত প্রভাব কমাতে এবং পরিবেশগত সমস্যা সমাধান করতে প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
  • চিকিৎসা ইঞ্জিনিয়াররা চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, প্রক্রিয়া এবং চিকিৎসা পদ্ধতি ডিজাইন এবং তৈরি করে।

একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে উঠতে আপনাকে অবশ্যই বিজ্ঞান, গণিত বিষয়ে পারদর্শী হওয়ার পাশাপাশি সমস্যা সমাধানে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। যাই হোক পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে একজন ইঞ্জিনিয়ারের এভারেজ মাসিক বেতন ১,২৪,৭৬৮ টাকা। 

৭। ডাক্তার 

একজন ডাক্তার হলেন সেই পেশার ব্যক্তি যারা মানুষের রোগ এবং অসুস্থতা নির্ণয় ও চিকিৎসা প্রদান করেন। রোগীর শারীরিক মানসিক এবং সামাজিক অবস্থার মূল্যায়ন করে চিকিৎসা পরিকল্পনা করে এবং বিশেষায়িত জ্ঞানের মাধ্যমে তাদের রোগ মুক্তি পাওয়ার ব্যবস্থা করে। 

একজন ডাক্তার সাধারণত যে সকল সেক্টরে কাজ করে থাকে সেগুলো হলো: 

  • মেডিসিন: সাধারণ চিকিৎসা
  • সার্জারি: অস্ত্রোপচার
  • শিশুরোগ: শিশুদের চিকিৎসা
  • স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা: মহিলাদের চিকিৎসা
  • দন্তচিকিৎসা: দাঁত ও মাড়ির চিকিৎসা
  • চক্ষুচিকিৎসা: চোখের চিকিৎসা
  • কার্ডিওলজি: হৃদরোগের চিকিৎসা
  • নিউরোলজি: স্নায়ুরোগের চিকিৎসা
  • অনকোলজি: ক্যান্সারের চিকিৎসা

ডাক্তার হওয়ার জন্য প্রথমে ন্যূনতম পাঁচ বছর মেয়াদী এমবিবিএস ডিগ্রী অর্জন করতে হয়। এরপর নির্দিষ্ট সেক্টরে কাজ করতে আরো দুই থেকে পাঁচ বছরের PGT ডিগ্রী অর্জন করতে হয়। এক্ষেত্রে একজন ডাক্তারের বেতন নির্ভর করে সে ডাক্তারের বিশেষায়ন অভিজ্ঞতা চাকরির ধরন ও বেশ কিছু বিবেচনার দিক থেকে।  যাইহোক বাংলাদেশে বর্তমানে পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একজন ডাক্তারের গড়ে মাসিক বেতন ১,০৩,৮৫৬ টাকা। 

===============

ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে মাসে লাখ টাকা আয় 

আপনি যদি চাকরিতে বেধে দেয়া নিদিষ্ট পরিমাণের অর্থ থেকে বেরিয়ে এসে, মাসে লাখ টাকা ইনকাম করতে চান সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ের চেয়ে উত্তম কিছু আর নেই। ব্যবসা এমন এক ধরনের কাজ যা আপনি যেকোনো কিছুর উপরেই শুর করতে পারবেন। সামাণ্য সুই থেকে শুরু করে বিশাল ইমারত পর্যন্ত সব কয়টি সেক্টরেই রয়েছে লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসায়ের গল্প। আসুন তবে জেনে নেই কিছু স্পেসিফিক সেক্টর গুলো সম্পর্কে যেখানে কাজ করে মাসে লাখ টাকা আয় কর‍তে পারবেন। 

মূলত যে জিনিসের ব্যবসা গড়ে তুললে মাসে লাখ টাকা আয় করা যাবে তার কোন নির্দিষ্ট উত্তর নেই। কারণ, ব্যবসার সাফল্য নির্ভর করে অনেকগুলো বিষয়ের উপর, যেমন: পণ্যের চাহিদা, ব্যবসার পরিকল্পনা, ব্যবসার পরিচালনা, ইত্যাদি। 

তবে, কিছু ব্যবসা আছে যেগুলোর চাহিদা বেশি এবং লাভের সম্ভাবনাও বেশি। যেমন:

  • খাদ্য ও পানীয়ের ব্যবসা: রেস্তোরাঁ, খাবারের দোকান, চায়ের দোকান, কফি শপ, বেকারি ইত্যাদি খাদ্য ও পানীয়ের ব্যবসা থেকে মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তবে এই ব্যবসায় সফল হতে হলে ভালো খাবারের মান, ভালো পরিবেশ এবং ভালো সেবা প্রদান করতে হবে।
  • পরিবহন ব্যবসা: ট্যাক্সি, অটোরিকশা, ট্রাক, বাস ইত্যাদি পরিবহন ব্যবসা থেকে মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তবে এই ব্যবসায় সফল হতে হলে ভালো গাড়ি, ভালো চালক এবং ভালো পরিষেবা প্রদান করতে হবে।
  • বিপণন ব্যবসা: খুচরা ও পাইকারি বিপণন ব্যবসা থেকে মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তবে এই ব্যবসায় সফল হতে হলে ভালো পণ্য, ভালো মূল্য এবং ভালো পরিষেবা প্রদান করতে হবে।
  • শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবসা: কোচিং সেন্টার, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ইত্যাদি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবসা থেকে মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তবে এই ব্যবসায় সফল হতে হলে ভালো শিক্ষক, ভালো পরিবেশ এবং ভালো প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে।
  • ইলেকট্রনিক্স ব্যবসা: ইলেকট্রনিক্স পণ্যের চাহিদা সবসময়ই থাকে। তাই, যদি আপনি একটি ইলেকট্রনিক্স ব্যবসা শুরু করেন, তাহলে মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।
  • কনস্ট্রাকশন ব্যবসা: কনস্ট্রাকশন ব্যবসায় ভালো লাভ করা যায়। তবে, এই ব্যবসা শুরু করতে হলে আপনাকে ভালো পরিকল্পনা করতে হবে।
  • স্বাস্থ্যসেবা ব্যবসা: ডাক্তার, নার্স, ফার্মাসিস্ট, হাসপাতাল, ক্লিনিক ইত্যাদি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবসা থেকে মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তবে এই ব্যবসায় সফল হতে হলে ভালো ডাক্তার, ভালো চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং ভালো পরিষেবা প্রদান করতে হবে।
  • বিনোদন ব্যবসা: সিনেমা হল, থিয়েটার, কনসার্ট হল, পার্ক ইত্যাদি বিনোদন ব্যবসা থেকে মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তবে এই ব্যবসায় সফল হতে হলে ভালো অনুষ্ঠান, ভালো পরিবেশ এবং ভালো পরিষেবা প্রদান করতে হবে।
  • অন্যান্য ব্যবসা: তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি, শিল্প, নির্মাণ ইত্যাদি অন্যান্য ব্যবসা থেকেও মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তবে এই ব্যবসায় সফল হতে হলে ভালো পরিকল্পনা, সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং কঠোর পরিশ্রম প্রয়োজন।

এগুলো ছিল বেসিক কিছু ধারণা। এ সকল ব্যবসা ও ব্যবসার আইডিয়া সংক্রান্ত আরো বিস্তারিত তথ্যের জন্য আমাদের ওয়েবসাইটের ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত ক্যাটাগরিটির অনুসরণ করতে পারেন। সেখানে অসংখ্য ব্যবসার আইডিয়া দেওয়া হয়েছে এবং সে ব্যবসা গুলোর মাধ্যমে কিভাবে টাকা আয় করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত গাইডলাইন দেওয়া রয়েছে। 

দেশের বাইরে অন্যান্য কাজ  

ফ্রিল্যান্সিং 

ফ্রিল্যান্সিং হল এমন একটি পেশা যেখানে একজন ব্যক্তি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অর্থ উপার্জন করে। সবচেয়ে দারুন ব্যাপার এই যে কাজ করার জন্য আপনাকে কোথাও যেতে হবে না আপনি নিজ ঘরে বসে কাজগুলো করতে পারবেন। আপনি কি কাজ করবেন সেটা একমাত্র আপনি নির্ধারণ করবেন আপনার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে। আপনি যে বিষয়ে এক্সপার্ট সে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে কাজে মনোনিবেশ করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ খাত রয়েছে যেখানে কাজ করে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করছে এমন অসংখ্য মানুষ রয়েছে আমাদের আশেপাশে। তো এমন কোন কোন খাতে কাজ শিখে, কাজ করে মাসে লাখ টাকা আয় করা যাবে চলুন সে খাত বা স্কিল গুলো সম্পর্কে জেনে নেই: 

  • লেখালিখি: একজন ফ্রিল্যান্স লেখক বিভিন্ন ধরনের লেখালেখির কাজ করে ভালো আয় করতে পারেন। যেমন, ব্লগ পোস্ট, কপিরাইটিং, প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাস, ইত্যাদি।
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন: একজন ফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স ডিজাইনার বিভিন্ন ধরনের গ্রাফিক্স ডিজাইন করে ভালো আয় করতে পারেন। যেমন, লোগো, ব্যানার, ওয়েবসাইট ডিজাইন, ইত্যাদি।
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট: একজন ফ্রিল্যান্স ওয়েব ডেভেলপার বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট ডেভেলপ করে ভালো আয় করতে পারেন।
  • সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট: একজন ফ্রিল্যান্স সফটওয়্যার ডেভেলপার বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ডেভেলপ করে ভালো আয় করতে পারেন।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং: একজন ফ্রিল্যান্স মার্কেটার বিভিন্ন ধরনের মার্কেটিং কাজ করে ভালো আয় করতে পারেন। যেমন, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেল মার্কেটিং, ইত্যাদি।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই বিষয়ক কাজ করার মাধ্যমে এমন অনেক লাখ টাকা আয় করতে দেখা গেছে। এবার আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে ফ্রিল্যান্সিং ঠিক কোথায় করে থাকে? মূলত ফ্রিল্যান্সিং এর বেশ কিছু মার্কেটপ্লেস রয়েছে সেগুলো হলো: 

  • Upwork
  • Fiverr
  • Freelancer
  • PeoplePerHour
  • Guru
  • Toptal

যাইহোক ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে আরো বিস্তারিত ভাবে জানতে  আমাদের ওয়েবসাইটে থাকা আর্টিকেলগুলো দেখতে পারেন অথবা এখানে ক্লিক করুন। 

অন্যের কথা শুনে মাসে লাখ টাকা আয় 

মাসে লাখ টাকা আয় করার উপায় বিষয়ক এই আর্টিকেলটি এখানে সমাপ্ত করবো তবে যাওয়ার আগে একটি মজাদার তথ্য দিয়ে যেতে ইচ্ছা করছে। আপনি জানলে খুব অবাক হবেন যে – জাপানের একজন  38 বছর বয়সি এক নাগরিক যার নাম শোজি মারিমোটো, শুধু অন্যের কথা শুনে মাসে লাখ টাকা আয় করছেন।   

হ্যাঁ আমি ঠিক বলছি, পৃথিবীতে এমনও কাজ রয়েছে যেটা আমরা প্রতিনিয়ত করেই থাকি কিন্তু কোন অর্থ তার বিনিময় পাইনা, অন্যদিকে শোজি এর মত ব্যক্তি অন্যের কথা শোনাটাকেই নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে গড়ে তুলেছেন। 

তার এই প্রজেক্টের নাম দিয়েছেন “ডু নাথিং রেন্ট এ ম্যান” যার মানে এই যে, তাকে লোকেরা ভাড়া করতে পারবে নিজেদের কথা শোনানোর জন্য। যাইহোক এই বিষয়টি ঘটানো গিয়েছে এই কারণে যে জাপানে মানুষ প্রচন্ড রকমের একাকীত্বতে ভোগে তবে বাংলাদেশে এটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। অন্ততপক্ষে বর্তমান সময়ে এটা সম্ভব নয়, ভবিষ্যতের কথা অবশ্যই বলা যাচ্ছে না।

তথ্য সূত্র: [https://www.jagonews24.com/feature/article/786368

পরিশেষে কিছু কথা

যাই হোক এই ছিল আজকের মত মাসে লাখ টাকা আয় করার কিছু উপায় এবং একটি মজার তথ্য। আশা করছি এবারের আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনার মনে থাকা প্রশ্নের উত্তরের পাশাপাশি অনেক তথ্য সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। শুধু মাসে লাখ টাকাই নয়, কোটি টাকা আয় করার উপায়ও রয়েছে। 

মূলত সমস্যা হল আমরা সকলেই সকল কিছু জানি, তবে আমাদের জানা বিষয়ের উপরে কাজ করতেন না পারার কারণে আমরা সেগুলো হাসিল করতে পারি না। আপনি এবার জানলেন কিভাবে মাসের লাখ টাকা আয় করা যায় তবে আপনার কাজ যদি শুধুমাত্র জানাও অব্দি সীমিত হয়ে থাকে তবে আপনি মাসে লাখ টাকা আয় করতে পারবেন না। 

কেবল তখনই পারবেন যখন আপনি কাজগুলোকে জেনে, বুঝে, শিখে, করা শুরু করবেন। সবশেষে আপনার জন্য শুভকামনা, তাছাড়া আপনি যদি অন্যান্য রেঞ্জের অর্থ আয় করার উপায় খুঁজে থাকেন তবে আমাদের ওয়েবসাইটটি অবশ্যই ভিজিট করুন। কেননা, এখানে রয়েছে হাজারো উপায় অনলাইন এবং অফলাইনে টাকা আয় করার জন্য।