বিষয়: ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায়
আরাফাত হোসেন করছে ইউনিভার্সিটিতে, প্রায় শখের বসেই তৈরি করেছিল একটি ওয়েবসাইট যেখানে প্রায় সময় নিজের জানা-অজানা বিষয়ে লিখে রাখত ওয়েবসাইটটিতে। নিজে লেখালেখি করার পাশাপাশি পড়তো অন্যদের লেখাও। এমনই একজন জানতে পারল যে ওয়েবসাইট থেকে করা যায় ইনকাম। বিভিন্ন উপায় গুলো থেকে সহজ একটি উপায় অবলম্বন করে রাখলো। একদিন হঠাৎ করে দেখে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অনেকগুলো টাকা আসছে, কৌতূলে হয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে কল করে জানতে চাইলে তারা জানায় এই টাকাটি গুগল থেকে পাঠিয়েছে তার ব্যাংক একাউন্টে। অতঃপর তার আর বুঝতে বাকি রইল না যে এই টাকাটি এসেছে তার ওয়েবসাইট থেকেই।
উপরের লেখাটি একটি গল্প হলেও এমন ঘটনা বাস্তবে রয়েছে অহরহর উদাহরণ। গল্পের মতই সত্যি এই যে ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করা সম্ভব। ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় সে বিষয়ে জানতে চায় অনেকেই। তাদের আগ্রহকে সম্মান জানিয়ে ব্লগিং সিরিজের এবারের আর্টিকেলে বিষয়বস্তু সিলেক্ট করা হয়েছে ওয়েবসাইট খুলে আয় করার উপায়। খুব বিস্তারিতভাবে জানাবো একটি ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায় সে বিষয়ে।
ওয়েবসাইট কি?
ওয়েবসাইট হলো ইন্টারনেটে অবস্থিত ওয়েব পৃষ্ঠা যেখানে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট যেমন ছবি ভিডিও আর্টিকেল ফাইল ইত্যাদি সমন্বিত থাকে এবং একটি ডোমেইন নেম দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। এবং এই সকল উপাদানগুলো জমা থাকে একটি ওয়েব সার্ভারে। উদাহরণস্বরূপ wikipedia.org, google.com, এবং amazon.com
এটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয় HTML, CSS এবং JavaScript এর মত ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ল্যাঙ্গুয়েজ এর সাহায্যে। এই ল্যাঙ্গুয়েজ গুলোর মাধ্যমেই ওয়েব পেজের কাঠামো উপস্থিতি এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করা হয়।
বর্তমান সময়ে ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা অত্যাবাসকীয়। বর্তমানে ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান উভয় ক্ষেত্রে প্রতিটি সেক্টরে একটি ওয়েবসাইট থাকা আবশ্যকীয় হয়ে গেছে। ওয়েবসাইট বিভিন্ন ধরনের হতে পারে বিভিন্ন কাজের উপর নির্ভর করে।
ওয়েবসাইট থেকে আয় করা সম্ভব?
হ্যাঁ ওয়েবসাইট থেকে আয় করা সম্ভব, ওয়েবসাইট থেকে আয় করা রয়েছে অসংখ্য পদ্ধতি। একেক জন একেক পদ্ধতি অনুসরণ করে কিংবা একাধিক পদ্ধতি একত্রে অনুসরণ করে ওয়েবসাইট থেকে আয় করছে। ওয়েবসাইট থেকে আয় করার জন্য আপনাকে প্রথমে সুন্দর করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে, আপনার নির্দিষ্ট লক্ষ্য সম্পর্কে অবগত হওয়ার মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রার জন্য কাজ করে যেতে হবে।
আপনি ওয়েবসাইটটি কি কারণে তৈরি করছেন, এবং তাদের জন্য তৈরি করছেন পাশাপাশি তাদের কি ভ্যালু প্রোভাইড করবে সে বিষয়গুলো খেয়াল রাখার পাশাপাশি আপনার সার্ভিস বা সেবাটাকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে হবে। ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে আয় করা যায় সে বিষয়ে পরবর্তী ধাপে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে অনেকগুলো উপায়কে উপস্থাপন করে।
তবে যে কথা না বললেই নয়, ওয়েবসাইট খুলে আপনি কি পরিমাণ অর্থ আয় করতে পারবেন সে বিষয়ে একটু বলি। এমনও অনেকে রয়েছে যারা মাসে লক্ষ টাকা অব্দি আয় করছে শুধুমাত্র ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। তাদেরকে স্টাডি এবং তারা কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানলে আপনিও খুব মটিভেটেড হতে পারবেন। আচ্ছা সে তো পরের বিষয় এবার প্রাথমিকভাবে জেনে নেই ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে আয় করা যায় সে উপায় গুলো সম্পর্কে।
ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায়?
এবার জানাবো ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে আয় করা যায় সে উপায় গুলোর সম্পর্কে। এবারের আর্টিকেলে মোট নয়টা ও উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। এই নয়টির মধ্যে আপনি যেকোনো একটি কিংবা একাধিক উপায় একত্রে অনুসরণ করে ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে পারবেন। প্রায় যত ধরনের ওয়েবসাইট রয়েছে সে সকলকে একত্রিত করে সেগুলো থেকে আয় করার যে ভিন্ন ভিন্ন উপায় রয়েছে সেগুলো নিয়েই এবারের বিস্তারিত আলোচনা। তো আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক মূল উপায়গুলো সম্পর্কে জানানো।
ব্লগিং করে গুগল এডসেন্সে থেকে আয়
ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে আয় করা যায় এই প্রশ্নের সবচেয়ে ভালো এবং সর্বোত্তম হলো ব্লগিং করে গুগল এডসেন্স থেকে আয় করা। এখানে আপনাকে বুঝতে হবে দুইটি জিনিস একটি হলো ব্লগিং কি আরেকটি গুগল এডসেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত।
আচ্ছা প্রাথমিকভাবে ব্লগিং হচ্ছে এককভাবে গড়ে তোলা নির্দিষ্ট একটি দক্ষতার উপরে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করার ওয়েবসাইট যেখানে প্রতিনিয়ত একই বিষয়ের উপর বিভিন্ন তথ্য ও নিজের দক্ষতা শেয়ার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ আপনি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে অনেক কিছু জানেন, এবার আপনি একটি ওয়েবসাইট খুলে সেখানে আপনার জানার পরিধি অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করবেন যা মানুষ জানতে চায় যা মানুষ শিখতে চায় যা মানুষ বুঝতে চায়। পরবর্তীতে যখন আপনার ওয়েবসাইটে ভালো পরিমান ভিজিটর আসবে তখন সেটিকে মনিটাইজেশনের মাধ্যমে সেখান থেকে আয় করতে পারবেন।
মনিটাইজেশন? গুগলের পক্ষ থেকে প্রদান করা একটি সার্ভিস যার নাম হচ্ছে গুগল এডসেন্স। এটি মূলত একটি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক যেখানে বিভিন্ন কোম্পানি গুগলকে পে করে থাকে সে কোম্পানিগুলোর পণ্য বা সেবা মার্কেটিং করার জন্য। google আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের কাছে সে সকল বিজ্ঞাপন গুলো প্রদর্শিত করে। এ কাজে সাহায্য করার জন্য প্রত্যেকটা এডস অনুযায়ী google আপনাকে নির্দিষ্ট হারে পেমেন্ট করে।
মূলত এভাবেই ব্লকের কাজ করে। এটা তো শুধুমাত্র একটিমাত্র পায় এছাড়াও ব্লগিংয়ের মাধ্যমে আরো অনেকগুলো উপায় আয় করতে পারবেন সেই জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে থাকা আরও একটি আর্টিকেল যার টাইটেল হচ্ছে “ব্লগিং থেকে আয় করার উপায়” সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।
ওয়েবসাইট খুলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
আচ্ছা প্রথমে একটু এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে জানিয়ে নেই তাহলে পুরো বিষয়টি বুঝতে সুবিধা হবে, মার্কেটিং এক ধরনের মার্কেটিং যেখানে আপনি অন্য কোন কোম্পানি পণ্য বা সেবা মার্কেটিং করবেন এবং সে কোম্পানির পণ্য বা সেবাকে গ্রহণ করার জন্য আপনার সংস্পর্শে থাকা ভিজিটরদের উৎসাহিত করবেন। যখনই কোনো ক্রেতা আপনার দেয়া লিংকের মাধ্যমে কোন পণ্য বাসে বা গ্রহণ করবে তখন আপনাকে নির্দিষ্ট একটি পরিমাণের কমিশন প্রদান করা হবে এন্ড এটি আপনাকে দিয়ে যাওয়া হবে যতদিন ওই লিংকটি সচল থাকবে। তার মানে এটি একটি প্যাসিভ ইনকাম হতে যাচ্ছে।
এবার জানাবো ওয়েবসাইট খুলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করবেন কিভাবে? এ কাজটি করার জন্য প্রথমেই আপনাকে নির্দিষ্ট একটি বিষয়বস্তু বেছে নিতে হবে যে আপনি কোন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন। আপনার প্রোডাক্ট বাছাই হয়ে গেলে সেই প্রোডাক্টকে কেন্দ্র করে যত সম্ভব মাইক্রো নিশ তৈরি করে একটি ওয়েবসাইট গড়ে তুলতে হবে।
ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরি করতে হয় সে বিষয়ে অবশ্যই আপনার জেনে নিতে হবে এয়ার টিকেটটির মাধ্যমে। যাইহোক ওয়েবসাইট তৈরি করার পর সে ওয়েবসাইটে কনটেন্ট আপলোড করতে হবে। এই কনটেন্টগুলো হতে পারে রিভিউ আর্টিকেল, হতে পারে ই-কমার্স সাইটের মতো লেআউট, বা আপনি যেভাবেই হোক আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে আসা লোকদের কনভেন্স করতে পারলেই হয়েছে।
যখন আপনার কাছে পর্যাপ্ত ভিজিটর এবং ওয়েবসাইট রেডি হয়ে যাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য, তখন বিভিন্ন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ যুক্ত হয়ে বিভিন্ন প্রোডাক্টের লিংক নিয়ে কাজ করা শুরু করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট খুলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার জন্য এখানে কয়েকটি টিপস দেওয়া হল:
- আপনার নিশ সম্পর্কে গবেষণা করুন এবং আপনার লক্ষ্য ভিজিটরদের সম্পর্কে জানুন।
- একটি তথ্যপূর্ণ এবং আকর্ষণীয় ওয়েবসাইট তৈরি করুন।
- আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনগুলিতে অপটিমাইজ করুন।
- আপনার ওয়েবসাইটকে সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য মার্কেটিং চ্যানেলে প্রচার করুন।
- বিভিন্ন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামগুলির সম্পর্কে জেনে আপনার জন্য সেরাটি খুঁজে বের করুন।
- এরপর নিজের মত করে মার্কেটিং কার্যক্রম চালিয়ে যান।
বাংলাদেশে থেকে করা যায় এমন কিছু জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম হল: দারাজ, বিডিশপ, অ্যামাজন ইত্যাদি।
ওয়েবসাইটে গেস্ট পোস্ট করতে দিয়ে আয়
গেস্ট পোস্ট করা মানে হলো অন্য কারো ওয়েবসাইটে আপনার নিজের লেখা একটি আর্টিকেল প্রকাশ করা। এটি একটি দুর্দান্ত উপায় আপনার ওয়েবসাইটের র্যাঙ্কিং বাড়ানোর, নতুন দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর এবং আপনার ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং বা পরিচিতি বৃদ্ধি করার জন্য।
গেস্ট পোস্ট করার জন্য, আপনাকে প্রথমে এমন একটি ওয়েবসাইট খুঁজে বের করতে হবে যা আপনার লেখার সাথে প্রাসঙ্গিক। তারপর, আপনাকে সেই ওয়েবসাইটের প্রশাসকদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং তাদের আপনার গেস্ট পোস্টের প্রস্তাব দিতে হবে। আপনার প্রস্তাবে আপনার লেখার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ, আপনার ওয়েবসাইটের লিঙ্ক এবং আপনার যোগাযোগের তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এবার আসি আপনি কিভাব আয় করতে পারবেন সেদিকে।
আপনার কাছে যদি একটি ওয়েবসাইট খোলা থাকে যেটা ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয়,তাহলে ওই একই নিচের এমন অনেকে রয়েছে যারা আপনার ওয়েবসাইটে গেস্ট পোস্ট করাতে ইচ্ছুক। এক্ষেত্রে আপনি নির্দিষ্ট একটা পরিমাণের চার্জ ধার্য করতে পারেন। যেটি পরিষদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ক্রাইটেরিয়া ফুলফিল করে কেউ আপনার ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লেখার মাধ্যমে গেস্ট পোস্ট করাতে পারে।
এটি যেমন আপনার ওয়েবসাইট কে দিচ্ছে একটি নতুন আর্টিকেল পাশাপাশি আপনাকে দিচ্ছে ইনস্ট্যান্ট অতিরিক্ত কিছু অর্থ আয় করার উপায়। এটা ঠিক যে সচরাচর গেস্ট পোস্ট করানো হয়ে উঠে না তবে যখনই সুযোগটা আসে তখনই এই সুযোগ গ্রহণ করে আয় করে নেওয়া উচিত। তবে হ্যাঁ এর জন্য আপনার ওয়েবসাইটকে হতে হবে ভালো DA PA ওয়ালা এবং যেখানে অনেক বেশি ভিজিটর পাওয়া যায়।
আপনার ওয়েবসাইট বা আপনি যে গেস্ট পোস্ট গ্রহণ করতে ইচ্ছুক সে বিষয়ে একটি আর্টিকেল অথবা আপনার ওয়েবসাইটে গুরুত্বপূর্ণ একটি পেজ ক্রিয়েট করে রাখতে পারেন। এবং আপনার সাথে যোগাযোগ করার একটি সহজ মাধ্যম রাখতে হবে যাতে করে আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারে এই বিষয়ে কথা বলার জন্য।
একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে আয়
প্রশ্ন যেখানে একটি ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায় সে সম্পর্কে সেখানে অবশ্যই ই-কমার্স ওয়েবসাইটের কথা আসবেই আসবে। ই-কমার্স ওয়েবসাইট বর্তমানে অনলাইনে কেনাকাটা করার প্রবণতা গত কয়েক বছর ধরে বেশ বেড়েই চলেছে। এবং ভবিষ্যতে এটি আরো অনেক বেশি মাত্রায় বাড়বে বলে সম্ভাবনা রয়েছে।
এই যে লোকেদের অনলাইনে কেনাকাটা করা আছে প্রবণতা সেটাকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা ওয়েবসাইটকে বলা হয় ই-কমার্স ওয়েবসাইট যেখানে বিভিন্ন পণ্য লিপিবদ্ধ করা থাকবে ক্রেতারা সেখানে এসে নিজেদের চাহিদা সম্পূর্ণ পন্য ক্রয় বা অর্ডার করবে। ই-কমার্স ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে তার হাতে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করবে।
এটিই কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করা হয় এ ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য। তো এখানে ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে আয় করবেন সেটার সরাসরি উত্তর হচ্ছে ব্যবসা করার মাধ্যমে। যেহেতু আপনার ব্যবসার জন্য বাস্তবিক কোন দোকান বা শপ নেই তাই সেই অনলাইনে থাকা ওয়েবসাইটটি হবে আপনার সব যাকে আমরা বলব অনলাইন শপ।
স্বাভাবিক ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরির থেকে ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি প্রক্রিয়া কিছুটা ভিন্ন আপনি যদি জানতে চান কিভাবে ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয় তবে উক্ত আর্টিকেলটি দেখে নিবেন।
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজের পণ্য বা সেবা বিক্রি করে আয়
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজের পণ্য বা সেবা বিক্রি করার মাধ্যমে আয় করার উপায়টি কিছুটা ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আয় করার উপায় এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কেননা উভয়ই অনলাইন সব সংক্রান্ত কার্যক্রম ঘটানো হয়ে থাকে তবে এর মধ্যে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।
একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটে আপনি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট স্থান পাবেন যেটাকে বলা হবে অনলাইন শপ, এবং আপনার মত এমন অসংখ্য অনলাইন সব ই-কমার্স ওয়েবসাইটে থাকতে পারে। তারমানে আপনার ব্যবসায়িক কম্পিটেটর যারা, তারা একই সাথে একই স্থানে অবস্থান করবে।
কিন্তু যখন কথা আসবে একক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজের পণ্য বিক্রি করার তখন এখানে বিক্রেতা একমাত্র আপনি নিজে অন্য কেউ থাকছে না। আপনি স্বয়ংসম্পূর্ণ ফোকাস আপনার কাস্টমারের সাথে করতে পারেন আপনার নিজের তৈরি কে তো পণ্য উপস্থাপনের ক্ষেত্রে।
আপনি নিজেদের মতো করে একটি ব্লগ তৈরি করতে পারেন যেখানে আপনার পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে আলোচনা হবে এবং কেন আপনার পণ্যটি অন্যদের থেকে সেরা এবং গ্রাহক কেন আপনার পণ্যটি গ্রহণ করবে সে সম্পর্কে বিভিন্ন আর্টিকেল এর মাধ্যমে মার্কেটিং করা হবে। পাশাপাশি এমন একটা সেকশন থাকবে যেখান থেকে গ্রাহক আপনার পণ্য ক্রয় করতে পারবে।
পেইড প্রোডাক্ট রিভিউ করে আয়
এ ব্যাপারটা অনেক স্পন্সর গ্রহণ করার মত। আপনি একটি কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সে কোম্পানির প্রোডাক্ট রিভিউ করবেন আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইট থেকে করে তুলতে হবে ব্যাপক জনপ্রিয় যাতে করে কোন কোম্পানি আপনার ওয়েবসাইটে মার্কেটিং করার জন্য ইচ্ছা পোষণ করে।
পেইড প্রোডাক্ট রিভিউ করে আয় করার জন্য, আপনাকে প্রথমে একটি প্লাটফর্ম খুঁজে পেতে হবে যেখানে কোম্পানিগুলি তাদের পণ্যগুলির জন্য রিভিউয়ারদের খুঁজছে। এই প্ল্যাটফর্মগুলির মধ্যে রয়েছে:
এগুলো ছাড়াও রয়েছে বাংলাদেশী অনেক কোম্পানি যাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে সরাসরি কিংবা কোন রেফারেন্স এর মাধ্যমে। যাইহোক মূল কার্যক্রমটি হচ্ছে:
একবার আপনি একটি প্লাটফর্ম খুঁজে পেলে, আপনাকে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে এবং আপনার রিভিউ লেখার দক্ষতাগুলি দেখাতে হবে। আপনি আপনার বায়োতে আপনার লেখার অভিজ্ঞতা, আপনার বিশেষজ্ঞতা এবং আপনি যে ধরণের পণ্যগুলি পর্যালোচনা করতে আগ্রহী তা উল্লেখ করতে পারেন।
আপনি একটি প্লাটফর্মে একটি রিভিউ পেলে, আপনাকে পণ্যটি পরীক্ষা করতে এবং একটি রিভিউ লিখতে হবে। রিভিউটি সাধারণত পণ্যের গুণমান, বৈশিষ্ট্য এবং মূল্যের একটি বিস্তারিত বিবরণ অন্তর্ভুক্ত করবে।
আপনার রিভিউটি কোম্পানি দ্বারা অনুমোদিত হলে, আপনি অর্থ প্রদান পাবেন। পেমেন্টের পরিমাণ পণ্যের ধরন, রিভিউটির দৈর্ঘ্য এবং আপনার রিভিউর রেটিংয়ের উপর নির্ভর করবে।
ব্যাকলিংক দিয়ে ওয়েবসাইট থেকে আয়
ব্যাকলিংক হলো একটি ওয়েবসাইট থেকে অন্য একটি ওয়েবসাইটের লিঙ্ক। ব্যাকলিংক ওয়েবসাইটের সার্চ ইঞ্জিন র্যাঙ্কিংয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্যাকলিংক থেকে ওয়েবসাইট থেকে আয় করার বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে।
ব্যাকলিংক এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকে আয় করার জন্য কিছু টিপস:
- আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্টের মান ভাল হতে হবে। আপনার কন্টেন্ট এমন হোক যা পাঠকদের ভালো লাগে এবং তারা তা পড়তে আগ্রহী হয়।
- আপনার ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তু প্রাসঙ্গিক হতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটে যে ব্যাকলিংক দেবেন তা আপনার ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তুতে প্রাসঙ্গিক (এখানে প্রাসঙ্গিক বলতেই নিস কে বোঝানো হয়েছে) হতে হবে।
- আপনি আপনার ওয়েবসাইট থেকে যে ওয়েবসাইটকে ব্যাকলিঙ্ক দিবেন সে ওয়েবসাইটকে অবশ্যই ভালোভাবে ভেরিফাই করে নিবেন যাতে কোন প্রকারে স্প্যাম লিংক যুক্ত ওয়েবসাইট না থাকে। উচ্চ মানের ওয়েবসাইট থেকে ব্যাকলিংক আপনার ওয়েবসাইটের সার্চ ইঞ্জিন র্যাঙ্কিংকে আরও বেশি বাড়াবে।
- প্রাকৃতিকভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করুন। অতিরিক্তভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করার চেষ্টা করবেন না। এতে আপনার ওয়েবসাইটের সার্চ ইঞ্জিন র্যাঙ্কিং ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ব্যাকলিংক তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনি প্রতিটি লিংক অনুযায়ী নিজের মত করে বিভিন্ন চার্জ ধার্য করতে পারেন। এটা আপনার নিজের উপর ডিপেন্ড করে আপনি কতটা চার্জ ধার্য করবেন। অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনি যে ওয়েবসাইটের লিংক নিজের ওয়েবসাইটে প্রোভাইড করছেন সেটি যেন একই রকম নিশের হয়ে থাকে।
জব পোর্টাল তৈরি করে ওয়েবসাইট থেকে আয়
বিভিন্ন কোম্পানি যাদের নতুন কর্মী দরকার তারা কর্মী খোঁজার জন্য অনলাইন অফলাইন বিভিন্ন উপায় বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে বর্তমান সময়ে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেওয়ার সফটওয়্যার ভালো মাধ্যম হওয়ার কারণে কোম্পানিগুলো বিভিন্ন জব পোর্টালের সাথে যোগাযোগ করে তাদের নিয়োগ বিজ্ঞাপন টি পাবলিস্ট করায়। এরপর গুলো নিজেদের হোটেলে সে জব সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করে সাধারণ জনগণদের এপ্লাই করার সুযোগ করে দেয়। পোর্টাল গুলো যেমন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে রেভিনিউ জেনারেট করতে পারছে পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে এক্সট্রা ভাবে নির্দিষ্ট চার্জ ধার্য করার মাধ্যমে আয় করতে পারছেন।
এছাড়া একটি জব পোর্টালে বিভিন্নভাবে আয় করার সুযোগ থাকে না, যেমন সেখানে বিভিন্ন পেইড সার্ভিস চালু করা যায় দারুন সিভি তৈরি করা দেওয়া থেকে শুরু করে Newsletter এর জন্য সাবস্ক্রিপশন ফি আদায়ের মাধ্যমে ও জব পোর্টালের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব।
তৈরিকৃত ওয়েবসাইট বিক্রি করে আয়
Last but not the least, একটি ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে আয় করা যায় তার সবচেয়ে দারুন উপায় হল ওয়েবসাইট বিক্রি করে দেওয়া। ইয়েস, আপনি ঠিক শুনছেন।তাহলে খুব সিম্পল ভাবে আপনার কাজটা কি হচ্ছে? আপনি নির্দিষ্ট টপিকের উপর একটি ওয়েবসাইট দাঁড় করাবেন, সে ওয়েবসাইট টাতে নিজের কনটেন্ট আপলোড করবেন। অতঃপর গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটটি মনিটাইজেশন চালু করবেন।
এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা মনিটাইজেশন চালু করা ওয়েবসাইট ক্রয় বিক্রয় করে তাদের সাথে যোগাযোগ করে আপনি আপনার মনিটাইজেশন চালু করা ওয়েবসাইটটি সহজে বিক্রি করতে পারবেন। একটি মনিটাইজ ওয়েবসাইট এর দাম কত সেটা মূলত মার্কেটে চাহিদা অনুযায়ী উঠানামা করে। তবে পরিসংখ্যান অনুযায়ী একটি এডসেন্স অ্যাপ করা মনিটাইজ ওয়েবসাইটের প্রাইস সর্বনিম্ন দশ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩০০০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে বলে জানা যায়।
এই পরিসংখ্যানটি একটি ফ্রেশ এডসেন্স এপ্রুভ ওয়েবসাইটের জন্য। আপনার ওয়েবসাইটটি যদি ভালো রিসার্চ সম্পূর্ণ থাকে এবং অনেক বেশি কন্টেন্ট থাকে বা অনেক বেশি ভিজিটর থাকে সে ক্ষেত্রে দাম আরো অনেক বেশি হবে। পাশাপাশি আপনার ওয়েবসাইট টি যদি এডসেন্স এপ্রুভ হওয়ার পর সেটাকে পিন ভেরিফিকেশন বা এড্রেস ভেরিফিকেশন করা হয় তবে সে ওয়েবসাইটের দাম সর্বনিম্ন ৫০০০০ টাকা থেকে শুরু হবে ওয়েবসাইটের কন্ডিশন যাই হোক না কেনো।
এমন লোকেদের সংখ্যা খুব কম নয় যারা ওয়েবসাইট তৈরি করে এবং বিক্রি করার মাধ্যমে প্রতি মাসে লক্ষ টাকা অবধি ইনকাম করে। তাই আপনি যদি অন্যান্য ঝামেলা পোহাতে না চান তবে ওয়েবসাইট তৈরি করুন, সে ওয়েবসাইটি মনিটাইজেশন চালু করুন, এবং উপযুক্ত সময় অনুসারে বিক্রি করে দিন। আপনি চাইলে একসাথে অনেকগুলো ওয়েবসাইটের কাজ একত্র করতে পারেন এক্ষেত্রে লাভের পরিমাণটাও বেশি হবে।
কিভাবে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয়?
যাক এই পর্যন্ত অনেক উপায় জানলেন একটি ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায় সে সম্পর্কে এখন মেজর যে প্রশ্নটি সেটি হচ্ছে কিভাবে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হয়? এ বিষয়ে হোক আমরা ইতিমধ্যে একটি আর্টিকেল পাবলিশড করেছি। আপনি চাইলে এখানে ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন ব্লগ সাইট তৈরি করার নিয়ম / ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার নিয়ম।
পরিশেষে কিছু কথা
এইতো আজকের মত “ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায়” সে বিষয়ে আলোচনা এখানে সমাপ্ত হচ্ছে। তবে এই সমাপ্তই শেষ নয়, আমাদের ওয়েবসাইটটি অনুসরণ করে রাখুন। কেননা এখানে প্রতিনিয়ত অনলাইন ভিত্তিক টাকা ইনকাম করার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। প্রতিনিয়ত আপডেট সব উপায় জানান মাধ্যমে, অনলাইনে ইনকাম সংক্রান্ত সকল সমস্যার সমাধানও এখানে দেওয়া হয়। মনে রাখবেন অনলাইনে টাকা ইনকাম করতে চাইলে অনলাইন টাকা ইনকাম ওয়েবসাইট প্রয়োজন হবে।