অর্থ উপার্জন নিয়ে আমাদের এক একজনের চিন্তা ভাবনা একেক রকম। কেউ চায় দৈনিক ভিত্তিতে ইনকাম করতে, কেউবা সাপ্তাহিক কিংবা মাসিক ভিত্তিতে। এ সকল ভিত্তিগুলোর উপরে নির্ভর করে আপনি কোন কাজ করবেন বা কোন কাজে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। পাশাপাশি কাজ সিলেক্ট করার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রায়োরিটি দিতে হবে আপনার ইচ্ছাকে আপনার মেধা এবং প্রচেষ্টাকে।
বরাবরের মতো অনলাইনে টাকা ইনকাম ওয়েবসাইট থেকে এবারেও টাকা ইনকাম করার উপায় সিরিজের আরেকটি নতুন আর্টিকেলে উপস্থাপন করব নতুন কিছু উপায় বা কাজ যেগুলো করার মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
এবারের আর্টিকেলটি অন্য সকল আর্টিকেল থেকে কিছুটা ভিন্ন হতে চাচ্ছে, আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি অনেক আর্নিং হয়ে যেগুলো করার মাধ্যমে দৈনিক কিংবা মাসিক ভিত্তিতে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারবেন। তবে এবার এই মাত্রায় আসছে কিছুটা ভিন্নতা। এবার জানাবো প্রতি সপ্তাহে চার হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করার উপায়।
তাহলে বাড়তি আলোচনা বাদ দিয়ে মুল আলোচনা শুরু করা যাক আসুন জেনে নেই প্রথমেই আমরা যেরকম করে ভাবছি প্রতি সপ্তাহে চার হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব কিনা সে সম্পর্কে।
প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব?
আপনি যেহেতু এই আর্টিকেলটি পড়ছেন তাহলে সর্বোচ্চ সম্ভাবনা এটা রয়েছে যে আপনার প্রতি সপ্তাহে অন্ততপক্ষে চার হাজার টাকার চাহিদা রয়েছে যা আপনি মেটাতে চান কোন কাজ করার মাধ্যমে। যার জন্য আপনি গুগলে সার্চ করেছেন প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করার উপায় কি এবং আপনার চোখে পড়েছে এই আর্টিকেলটি। প্রথমত আপনাকে স্বাগতম কেননা আপনি সঠিক স্থানে রয়েছেন, এখান থেকে আপনি জেনে নিতে পারবেন সেই কাজ বা উপায় গুলো যা অনুসরণের মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে চার হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
আচ্ছা প্রথমে একটি হিসাব করা যাক, একটি মাসে সপ্তাহ সংখ্যা চারটি। সে হিসেবে প্রতি মাসে 4000 টাকা করে হলে মাসে আয় হয় ১৬ হাজার টাকা। তাহলে এটা বলা যায় এমন কোন কাজ আপনি খুঁজছেন যে কাজ করলে প্রতি মাসে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
সত্যি কথা বলতে এই পরিমাণ অর্থ আয় করার জন্য কাজের অভাব নেই। বেসিক পর্যায়ে যে কাজগুলো রয়েছে তার প্রতিটি শুরু হয় 15 থেকে 16 হাজার টাকার রেঞ্জেই। সেই সুবাদে আমরা বলতে পারি হ্যাঁ প্রতি সপ্তাহে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
তবে এখন আপনাকে জানতে হবে প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করার জন্য কি কি করা যেতে পারে। পরবর্তী স্টেপে মূলত এই বিষয়টিকে নিয়েই গুরুত্বপূর্ণ মত প্রদান করা হয়েছে। পড়তে থাকুন।
প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করার জন্য কি করা যেতে পারে?
ইয়েস প্রতি সপ্তাহে চার হাজার টাকা, এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই চার হাজার টাকা আয় করার জন্য কি কি কাজ করা যেতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে প্রথমে আপনাকে আরো কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে যেমন:
১) আপনি প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করার জন্য কি কি যোগ্যতা রাখেন?
২) আপনি কোন কাজের জন্য কতটুকু ডেডিকেশন ধরে রাখতে পারেন?
৩) যেকোনো কাজ করার ক্ষেত্রে সে কাজের উপর দক্ষতা প্রয়োজন আপনার কোন সেক্টরে দক্ষতা রয়েছে?
৪) পরিশ্রম ছাড়া কোন কাজ করা সম্ভব নয় তবে পরিশ্রম দুই প্রকার একটি মানসিক পরিশ্রম অন্যটি শারীরিক পরিশ্রম। কাজের ধরনের উপর নির্ভর করে উভয়ের ব্যবহার হয়ে থাকে তাই আপনাকে প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে আপনি কি রূপ পরিশ্রম বেশি করতে পারবেন মানসিক নাকি শারীরিক?
৫) প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করার জন্য কাজ আপনি ঘরে বসে করবেন নাকি বাইরে সেটা সিদ্ধান্ত নিন।
এ সকল প্রশ্নের উত্তর আপনি পেয়ে গেলে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে যে পরবর্তী কাজগুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে থেকে খুব সহজেই আপনার জন্য পারফেক্ট উপায় এটি বেছে নিতে পারবেন। এবার শুনুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করতে আপনার কি কি প্রয়োজন হবে।
প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করতে কি প্রয়োজন?
বর্তমান সময়ে যেকোনো কাজ দুই ভাবে করা যায়। অনলাইনে এবং অফলাইনে। অনলাইনে বলতে আমরা সে সকল কাজগুলোকে বোঝাই যেগুলো করার ক্ষেত্রে আপনাকে বাস্তবিকভাবে উপস্থিত থাকতে হবে না বরঞ্চ আপনি ঘরে বসে যে কোন সময় সে কাজগুলো করতে পারবেন। অন্যদিকে অফলাইন কাজ বলতে আমরা সেই কাজগুলোকে বোঝাতে চাচ্ছি যেগুলো করতে হলে অবশ্যই আপনাকে ঘরের বাইরে গিয়ে কাজ করতে হবে। এই ধরনের কাজগুলো গতানুগতিক চাকরি কিংবা ব্যবসা কেন্দ্রিক হয়ে থাকে। তাই সবার প্রথম এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, আপনি কোন টাইপের কাজগুলো করতে চাচ্ছেন। তারপর সেই ক্যাটাগরির কাজের উপর ভিত্তি করবে – সে কাজ করতে আপনার কি প্রয়োজন।
সাধারণত অনলাইন ভিত্তিক কাজ করার জন্য প্রয়োজন হয়:
- একটি ইলেকট্রিক ডিভাইস হতে পারে মোবাইল কম্পিউটার ল্যাপটপ ইত্যাদি।
- নিরিবিচ্ছন্ন ইন্টারনেট সংযোগ বা ব্র্যান্ডউইথ।
- শান্ত সৃষ্টভাবে কাজ করার জন্য পরিবেশ।
- যে কাজ করবেন সে কাজের উপরে দক্ষতা।
অন্যদিকে অফলাইন ভিত্তিক কাজ করার জন্য সাধারণত প্রয়োজন হয়:
- কায়িক শ্রম
- মেধাবৃত্তিক কার্যক্রম
- সৃজনশীল কাজ
- নির্দিষ্ট কাজের উপর দক্ষতা
- খুব ভালো নেটওয়ার্কিং
ব্যাস, এগুলো হলেই প্রতি সপ্তাহে চার হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করার জন্য আপনি প্রস্তুত। এবার শুনুন দেখে নেওয়া যাক সেই উপায় গুলো বা কাজগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত।
প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করার উপায় সমূহ
বিপর্যয়ে আমরা দুইটি শ্রেণিতে বিভক্ত করে সে কাজগুলো সম্পর্কে জানাবো যে কাজগুলো করার মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে ৪০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে সক্ষম হবেন। এবার একেক করে দেখে নিন সে কাজগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
অনলাইনে প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করুন
কন্টেন রাইটিং এর মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকায় পর্যন্ত আয় করুন
আচ্ছা কন্টেন্ট রাইটিং এর মাধ্যমে কিভাবে আয় করা যায় সে বিষয়ে ইতিমধ্যে বেশকিছু আর্টিকেলের মধ্যেই আমরা জানিয়েছি। আপনি যদি না জেনে থাকেন কন্টেন রাইটিং এর মাধ্যমে আয় করার উপায়, তবে আমাদের ওয়েবসাইটের সার্চ অপশনে কন্টেন রাইটিং লিখে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন অসংখ্য উপায়।
যাইহোক প্রশ্নটি হচ্ছে কন্টেন রাইটিং এর মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে চার হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করার উপায় কি? দেখুন কনটেন্ট রাইটিং এর মধ্যে রয়েছে অনেকগুলো ভাগ, পাশাপাশি রয়েছে ভাষাগত ভিন্নতা। আপনি যদি বাংলা ভাষায় কন্টেন্ট রাইটিং করে থাকেন তবে ঘরে প্রতি আর্টিকেলের জন্য পাবেন ২০০ থেকে ৫০০ টাকা। ধরে নেয়া যাক এভারেজে আপনি পেলেন ২৫০ টাকা প্রতি হাজার শব্দের আর্টিকেলের জন্য।
তাহলে সাধারণ হিসাব মোতাবেক প্রতি সপ্তায় চার হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে হলে প্রতিদিন অন্ততপক্ষে দুইটি করে আর্টিকেল লিখতে হবে ১০০০ শব্দ করে। মানে প্রতিদিন দুই হাজার করে শব্দের আর্টিকেল লিখলে প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
ডাটা এন্ট্রির মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করুন
মূলত ডাটা এন্ট্রি হলো এমন এক ধরনের কাজ যেখানে ব্যক্তি কম্পিউটারের মাধ্যমে কাগজপত্র ফর্ম ইমেইল ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করে এবং একটি নির্দিষ্ট ডাটাবেজে জমা রাখে। ডাটা এন্ট্রির কাজে সাধারণত টাইপিং, ডাটা মেশিনিং, টেক্সট এডিটিং ইত্যাদি কাজগুলোর উপরে দক্ষতা অর্জন করতে হয়।
ডাটা এন্ট্রির কাজ দুই ধরনের হয় প্রথমটি সাধারণ দ্বিতীয় টা বিশেষায়িত। সাধারণ ডাটা এন্টির কাজে সাধারণত নাম ঠিকানা ফোন নাম্বার ইত্যাদি টাইপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। অন্যদিকে বিশেষায়িত ডাটা এন্ট্রির কাজে বিশেষায়িত জ্ঞানসম্মত জিনিস যেমন চিকিৎসা তথ্য আইনি তথ্য ইত্যাদির তথ্য কালেক্ট করতে হয়।
ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই টাইপিং এর উপর দক্ষতা, কম্পিউটার অপারেটর এর উপরে দক্ষতার পাশাপাশি সতর্কতা ও মনোযোগী হতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে ডাটা এন্ট্রির কাজ কোথায় পাওয়া যাবে? সাধারণত বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস যেমন আপওয়ার্ক, ফ্রীলান্সার, ফাইবার এর মত প্ল্যাটফর্ম গুলোতে সবচেয়ে বেশি ডাটা এন্ট্রির কাজের নিয়োগ দেওয়া হয়, তাছাড়া আপনি অফলাইনে বিভিন্ন কোম্পানির হয়ে বা এজেন্সির সাথে কাজ করতে পারবেন।
পরিসংখ্যানে তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে ডাটা এন্টির কাজ করে ঘরে মাসিক ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা অব্দি আয় করছে বিভিন্ন ডাটা এন্ট্রির ফ্রিল্যান্সার। এটি অবশ্যই নির্ভর করে একজন লোকের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা উপর। যেহেতু আমাদের মূল টার্গেট ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা মাসে এবং সপ্তাহে ৪০০০ টাকা তাই ডাটা এন্ট্রির কাজকে আমরা এখানে তালিকাভুক্ত করেছি।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ করে প্রতি সপ্তাহে ৪০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করুন
ডিজিটাল মার্কেটিং হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্য ও সেবার প্রচার-প্রচারনামূলক কাজ করে থাকে আধুনিক উপায়ে। বিশেষ করে অনলাইন সংক্রান্ত যে সকল মার্কেটিং হয়ে থাকে সে সবগুলোই ডিজিটাল মার্কেটিং এর আওতাভুক্ত।
তাহলে ডিজিটাল মার্কেট ভাঙলে কোন কাজগুলো পাওয়া যায়? ডিজিটাল মার্কেটিং এর আওতাভুক্ত যে কাজগুলো রয়েছে তা হলো:
- সার্চ ইঞ্জিল অপটিমাইজেশন বা এসইও
- সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা এস ই এম
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
- ইমেইল মার্কেটিং
- কন্টেন্ট মার্কেটিং
বেশি পর্যায়ে এই কাজগুলো খুব বেশি জনপ্রিয় তাছাড়া রয়েছে আরও অনেক কাজ ডিজিটাল মার্কেটিং এর আওতায়। ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইটের ডিজিটাল মার্কেটিং নামক ক্যাটাগরিটি অনুসরণ করুন।
যাই হোক বলছিলাম ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে চার হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করার উপায় সম্পর্কে।পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে একজন ডিজিটাল মার্কেটার মাসিক বেতন পায় প্রায় ২০ হাজার টাকার মত। তবে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এমনও ডিজিটাল মার্কেটে রয়েছে যাদের মাসিক ইনকাম ৫০ হাজারের বেশি।
কিন্তু আমাদের এই আর্টিকেলটি তো মাসিক ইনকাম ভিত্তিক নয় তাহলে এটাকে কেন এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হলো? কারণ ডিজিটাল মার্কেটিং এমন এক ধরনের কাজ যেটা আপনি ঘন্টা ভিত্তিক হারেও করতে পারবেন মার্কেটপ্লেসগুলোতে। সুবাদে যখনই আপনার কাজ সম্পূর্ণ হবে তখনই পেমেন্ট গ্রহণ করার সুযোগ থাকছে এখান থেকে। আর মাসিক দেখে অবশ্যই বুঝে গেছেন যে প্রতি সপ্তাহে ৪০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে কোন বড় বিষয় নয়।
যাই হোক ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ পেতে আপনাকে একাউন্ট করতে হবে Upwork, ফাইভার, ফ্রিল্যান্সার, লিংকডিন, ফেইসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম এর মত প্ল্যাটফর্ম গুলোতে।
ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করুন
ফ্রিল্যান্সিং হলে এমন একটি পেশা যেখানে একজন ব্যক্তি কোন নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অধীনে না থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করে থাকে। জিব্রিলান্সিং সংক্রান্ত কাজ করে তাকে সাধারণত ফ্রিল্যান্সার বলা হয়। একজন ফ্রিল্যান্সার তার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা গুলোকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে কাজ খুঁজে সে কাজগুলো করার মাধ্যমে আয় করে থাকে ইন্টারন্যাশনাল পর্যায়ে।
একজন ফ্রিল্যান্সার রয়েছে অনেক বেশি সুবিধা রয়েছে নিজের মতো কাজ করার স্বাধীনতা। আর সবচেয়ে ভালো বিষয় এই যে একজন মানুষ যে স্কিলের উপরে দক্ষ, সে সেই স্কিলকে কেন্দ্র করে সেখানে থেকে আয় করতে সক্ষম হবে।
একজন ফ্রিল্যান্সার হয়ে উঠতে আপনাকে অবশ্যই একটা নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর উপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে, পাশাপাশি থাকতে হবে প্রযুক্তিগত জ্ঞান, উন্নত করতে হবে যোগাযোগ দক্ষতা, সময়মতো ব্যবস্থাপনার বিষয়টিকেও স্মরণে রাখার পাশাপাশি নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে কাজ করে যেতে হবে।
বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে বর্তমান সময়ে পাশাপাশি আগামী পাঁচ বছরের জন্য নির্ভরযোগ্য ভাবে যে সকল স্কিল এর উপর দক্ষতা অর্জন করলে আপনি আয় করতে সক্ষম হবে সেই স্কিলগুলো হলো:
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- গ্রাফিক ডিজাইনিং
- ভিডিও এডিটিং
- কনটেন্ট রাইটিং
- ব্লকচেইন
- ডাটা সায়েন্স
- সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
সহ আরো অনেক ক্যাটাগরি। আপনি যেকোনো একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করুন এবং নিজের স্বাধীনতা অনুযায়ী কাজ করে প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করুন শুধু ৪০০০ টাকা অব্দি নয় বরং তার থেকে অনেক বেশি আয় করা সম্ভব ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে, যদি কিনা আপনি যথাযথভাবে এবং দক্ষতার সহিত কাজ করে যেতে পারেন।
গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ করে প্রতি সপ্তাহে 4000 পর্যন্ত আয় করুন
গ্রাফিক্স ডিজাইন হল এক ধরনের দৃশ্যমান চিত্র, পাঠ্য এবং অন্যান্য উপদানের সংমিশ্রণে তৈরিকৃত সংকেত যা দর্শককে কোন নির্দিষ্ট কিছু চিহ্নিত করতে প্রবাহিত করে। গ্রাফিক ডিজাইনাররা চিত্র, অক্ষর, রং, টাইপোগ্রাফির মাধ্যমে কোন তথ্যকে সুস্পষ্ট এবং আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করে। গ্রাফিক ডিজাইন মূলত মার্কেটিং, শিক্ষা, সংস্কৃতি সংক্রান্ত বিষয়বস্তুর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
যদি জানতে চাও হয় গ্রাফিক্স ডিজাইনের মধ্যে ঠিক কোন জিনিস গুলো ডিজাইন করা হয়? তার উত্তরে আসবে – “ লোগো ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, অ্যাপ ডিজাইন, ভিজুয়াল ইফেক্টস সহ বিভিন্ন মার্কেটিং উপকরণ গুলো ডিজাইন করা হয়।
গ্রাফিক ডিজাইন শিখতে মূলত সফটওয়্যারগত যে জ্ঞান অর্জন করতে হয় সেগুলো হলো:
একজন গ্রাফিক ডিজাইনার মূলত ঘন্টা ভিত্তিক কাজ করে থাকে, আবার অনেক ক্ষেত্রে প্রজেক্ট ভিত্তিক কাজ করে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি দেখা গিয়েছে ঘন্টা ভিত্তিক কাজ করতে।বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে একজন ডিজাইনার মাসে ঘরে 15 থেকে 20 হাজার টাকা আয় করতে সক্ষম হয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি প্রজেক্ট এর জন্য পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা চার্জ ধার্য করতে দেখা গিয়েছে।
যেহেতু এটি একটি ঘন্টা ভিত্তিক কিংবা এমন প্রজেক্ট ভিত্তিক কাজ যা সপ্তাহে করা সম্ভব তাই এই কাজটিকেও আমরা প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করা সংক্রান্ত আর্টিকেলটিতে তালিকাভুক্ত করেছি।
অফলাইনে প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করুন
এতক্ষন অব্দি আমরা যে কাজ গুলো সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম, সে সব গুলোই অনলাইন ভিত্তিক কাজ। যা অনলাইনে ঘরে বসে করা যেতে পারে এবং একটি নির্দিষ্ট দক্ষতা অর্জন করলেই সে কাজগুলো করা যাবে। কিন্তু এই পর্যায়ে যে কাজগুলোর কথা বলবো, তার জন্য খুব বেশি দক্ষতার প্রয়োজন হবে না তবে এ কাজগুলো করতে হবে অফলাইনের বা ঘরের বাইরে গিয়ে।
ফেক্সিলোডের ব্যবসা করে প্রতি সপ্তাহে চার হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করুন
যদিও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল প্ল্যাটফর্ম যেমন বিকাশ নগদ রকেট চলে আসার ফলে ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসায় কিছুটা দুর্বল হয়েছে তারপরেও এখন অব্দি বাংলাদেশে এই ব্যবসাটি সবচেয়ে বেশি ট্রেন্ডিং রয়েছে এবং পরবর্তীতে থাকবে।
ছোট খাটো স্থানে অল্প পুঁজিতে শুরু করা যায় এ ব্যবসাটি। ফিক্সিলোডের ব্যবসা করতে হলে প্রথমে আপনাকে ফ্লেক্সিলোড সিম কিনতে হবে কোম্পানির SR দের কাছ থেকে। এটি মূলত কমিশন ভিত্তিক ব্যবসা।
এখানে প্রতি হাজার টাকা রিচার্জে ৩০ টাকা অতিরিক্ত কমিশন হিসেবে দেওয়া হয়। তার মানে এই যে আপনি ফেক্সিলোড করার জন্য কোম্পানিকে যখন এক হাজার টাকা প্রদান করবেন তখন তার বিপরীতে আপনাকে ১০৩০ টাকার ফ্লেক্সি দেওয়া হবে।এরপর আপনি আপনার কাস্টমারকে ফ্লেক্সিলোড দেওয়ার মাধ্যমে এই অতিরিক্ত কমিশনের পাশাপাশি এক্সটা কিছু ড্রাইভ অথবা অফার ক্রয়ের মাধ্যমেও অতিরিক্ত আয় করতে পারবেন।
এবার একটু হিসাব করা যাক যে কিভাবে প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন ফ্লেক্সিলোড ব্যবসার মাধ্যমে। দেখুন বেসিক পর্যায়ে যে কমিশনটি দেওয়া হয় তাহলেও ৩০ টাকা। তার মানে একটি সিমে এক হাজার টাকা ফ্লেক্সি রিচার্জ করলে অতিরিক্ত কমিশন পাবেন ৩০ টাকা। এই ১০০০ টাকা যখন আপনি কাস্টমারকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র করে রিচার্জ করাবেন তখন সেখান থেকে অতিরিক্ত কাস্টমারদের থেকে যে অর্থ নিবেন তা হাজারে ২০ টাকা ধরা যাক। তাহলে ১ হাজার টাকার রিচার্জ করার মাধ্যমে আপনি প্রাথমিক পর্যায়ে পেয়ে যাচ্ছেন ৫০ টাকা।
বর্তমানে বাংলাদেশের মোট পাঁচটি সিম অ্যাভেলেবেল রয়েছে। প্রতি সিমে যদি দুই হাজার টাকা করে মোবাইল রিচার্জ করাতে পারেন সে ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতি সপ্তায় চার হাজার টাকা আয় হয়ে যাবে। এর মধ্যে রয়েছে মিনিট এবং এমবি সহ বান্ডেল প্যাকেজ রিচার্জ করলে অতিরিক্ত অনেক বেশি কমিশন দেওয়া হয়। সে কমিশন গুলো যোগ করার পরে দেখা যাবে প্রতি সপ্তায় আপনার কাছে ৪০০০ থেকে ৬০০০ টাকা অতিরিক্ত হিসেবেই রয়ে গেছে। তাছাড়া আপনি এখানে যত বেশি রিচার্জ করতে পারবেন লাভের পরিমাণটি তত বেশি বাড়তে থাকবে।
মোবাইল সার্ভিসিং এর কাজ করে প্রতি সপ্তাহে চার হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করুন
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটিকে একটা এভারগ্রিন আর্নিং হয়ে বলা যায়। কেননা যত বেশি স্মার্টফোন ব্যবহারকারী তত বেশি স্মার্টফোনের সমস্যা সমাধান হওয়া এবং তত বেশি মোবাইল সার্ভিসিং এর কাছে যাওয়া এবং তাদের সার্ভিস গ্রহণ করা। যত বেশি মোবাইল নষ্ট হবে বা সমস্যা দেখা দিবে তত বেশি মোবাইল সার্ভিসিং এর কাজের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব।
সাধারণত আমাদের হাতে থাকা স্মার্টফোন কোন কারণে নষ্ট বা কোন সমস্যা দেখা দিলে সেটিকে ঠিক করার জন্য আমরা উঠে পড়ে লাগে এর জন্য যত টাকায় অর্থ ব্যয় হোক না কেন সেটাতে দ্বিধা করি না। পাশাপাশি এটা এমন এক ধরনের ব্যবসা হয়ে যায় যে ব্যবসায় বাকি নামক কোন শব্দ নেই, যেই মোবাইল সার্ভিসিং এর কাজ করাতে আসে অবশ্যই নগদ অর্থেই এ কাজটি করিয়ে নিয়ে যায়।
তাই আপনি যদি মোবাইল সার্ভিসিং এর কাজ শিখতে পারেন এবং জনবহুল একটি এরিয়াতে মোবাইল সার্ভিসিং এর দোকান দিয়ে বসতে পারেন তবে প্রতি সপ্তাহে চার হাজার টাকায় নয় বরং এর চেয়ে অনেক বেশি টাকা আয় করার সম্ভাবনা রয়েছে এই সেক্টরের মাধ্যমে।
সাধারণ দৃষ্টিতে মোবাইল সার্ভিসিং এর কিছু সাধারণ কাজ হলো:
- মোবাইলে যে কোন সমস্যা নির্ণয় করার পর ত্রুটিপূর্ণ যন্তাংশ পরিবর্তন
- মোবাইলের সফটওয়্যার সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করা
- স্মার্টফোনের ব্যাটারি পরিবর্তন
- মোবাইলের স্কিন পরিবর্তন ও স্ক্রিন প্রটেক্টর বিক্রি
- ক্যামেরা পরিবর্তন করা
- ফোনের স্পিকার নষ্ট হয়ে গেলে তা চেঞ্জ করে দেওয়া
- ফোনের মাইক্রোফোন বা মাউথ পরিবর্তন করা
- নেটওয়ার্ক সংক্রান্ত সমস্যার জন্য নেটওয়ার্ক আইসি পরিবর্তন করা
সহ আরো অনেক ধরনের মোবাইল সার্ভিসিং এর কাজ রয়েছে। তবে এসব কাজ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই মোবাইলের ব্র্যান্ড এবং মডেলের উপর নজর রাখতে হয়।
রিসেলিং ব্যবসা করে প্রতি সপ্তাহে ৪০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করুন
প্রাথমিক পর্যায়ে একটি ব্যবসা শুরু করা থেকে শুরু করে সে ব্যবসাকে যথাযথভাবে পরিচালনা করা খুব কষ্টসাধ্য এবং লং প্রসেসের একটি কাজ। পাশাপাশি উক্ত কাজের জন্য প্রয়োজন অনেক বেশি মূলধন। কিন্তু সবার ক্ষেত্রে এই কাজটি করার ইচ্ছা থাকলেও গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এমন মানুষদের জন্য ব্যবসা সংক্রান্ত একটি অন্যতম কাজ রিসেলিং ব্যবসা হতে পারে আদর্শ চয়েস। রিসেলিং ব্যবসার পাশাপাশি আরেকটি খুব সিমিলার ধারণা রয়েছে ব্যবসা ক্ষেত্রে তা হল ড্রপ শিপিং। আপনি চাইলে রিসেলিং ব্যবসা করতে পারেন অথবা ড্রপ শিপিং করতে পারেন যেটাই করেন না কেন প্রতি সপ্তাহে চার হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা এর মাধ্যমে অবশ্যই সম্ভব।
আপনাকে যা করতে হবে তা হলো কোন প্রডাক্ট কে কেন্দ্র করে তার বিভিন্নভাবে মার্কেটিং করে ক্রেতাকে খুঁজে নিয়ে আসা এবং ক্রেতার হাতে এসে পণ্যটি পৌঁছে দেওয়া। আপনি যদি রিসেলিং করেন সে ক্ষেত্রে কে তার হাতে পণ্যটি পৌঁছে দিতে হবে আপনাকে কিন্তু আপনি যদি ড্রপ শিপিং করেন সেক্ষেত্রে ডেলিভারি সংক্রান্ত কার্যক্রম আপনার করতে হবে না আপনি কেবল পণ্যের আদর্শ কাস্টমারকে খুঁজে তার তথ্য আপনার ড্রপশপারের (ড্রপ শিপিং প্ল্যাটফর্মের অথরিটি) কাছে প্রদান করবেন।
এটা নিয়ে বলার আসলে খুব বেশি কিছু কথা এখানে নেই কেননা আপনার অন্য যত বেশি বিক্রি হবে আপনার লাভ তত বেশি হবে বিক্রি না হলে সে ক্ষেত্রে লাভ হবে না খুব সিম্পল হিসাব ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে। তবে ড্রপ শিপিং এবং রিসেলিং এর মধ্যে শেখার রয়েছে অনেক কিছু আপনি যদি সে সব জানতে ইচ্ছুক হন তবে ড্রপ শিপিং কি কিভাবে ড্রপ শিপিং করবো সে বিষয়ে আর্টিকেলটি দেখে নিতে পারেন।
FAQs (প্রায়শঃ জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন)
১. আমি কীভাবে প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারি?
প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করতে আপনি আপনার লক্ষ্য স্পষ্ট করতে পারেন এবং সঠিক দক্ষতা এবং জ্ঞান অর্জন করতে পারেন।
২. আমি কীভাবে আমার আয় স্থিতিশীল করতে পারি?
আপনি আপনার আয় স্থিতিশীল করতে আপনার সময় এবং প্রয়োজনীয় দক্ষতা প্রতিস্থাপন করতে পারেন।
৩. কীভাবে আমি নিজের আয় প্রগতি নির্ধারণ করতে পারি?
আপনি আপনার আয় প্রগতি নির্ধারণ করতে নিজের কাছে নির্ধারণ করতে পারেন এবং প্রয়োজনে সংশোধন করতে পারেন।
৪. কীভাবে আমি নিজের আয় বাড়াতে পারি?
নিজের আয় বাড়ানোর জন্য আপনি নিজের দক্ষতা এবং উদ্যোগ ব্যবহার করতে পারেন।
৫. কি কি দক্ষতা প্রয়োজন?
নিজের আয় বাড়ানোর জন্য আপনি কোনও কোনও দক্ষতা এবং জ্ঞান অর্জন করতে পারেন, সেগুলি আপনার লক্ষ্য এবং আপনার কাজের নৈতিকতা অনুসরণ করে থাকতে পারে।
পরিশেষে কিছু কথা
এবার আর্টিকেলে একমাত্র সেই সকল কাজ বা উপায় সম্পর্কে বলা হয়েছে যে সকল কাজ বা উপায় অনুসরণ করলে আপনি প্রতি সপ্তাহে 4000 টাকা পর্যন্ত আয় করতে সক্ষম হবেন।পাশাপাশি এখানে একমাত্র ঐ সকল কাজ সম্পর্কে জানানো হয়েছে যেগুলোর পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারবেন আপনি সপ্তাহিক ভিত্তিতে। আপনি চাইলে প্রতি সপ্তাহে তো কাজের অর্থ হাতে তুলে নিতে পারবেন। এটি ছাড়াও আমাদের ওয়েবসাইট থেকে দৈনিক এবং মাসিক ভিত্তিতে আয় করার অসংখ্য উপায় সম্পর্কে জানানো হয়েছে। আপনি চাইলে সেগুলো পাঠের মাধ্যমে একটু বিষয়গুলো সম্পর্কেও অবগত হওয়ার পাশাপাশি পছন্দমত উপায়টিকে বাছাই করে সে মতে কাজ করে আয় করা শুরু করতে পারেন। আপনার সাফল্যে আমরা আশাবাদী আপনার জন্য রইলো শুভকামনা।