এমন অনেক মেয়েরাই রয়েছে যারা হয়তো পড়াশোনা করছে কিংবা গৃহিণী, তারা সংসারের কাজ করার পাশাপাশি কিছুটা বাড়তি আয় করার জন্য জানতে চায় মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায় সমূহ সম্পর্কে। তাদের এই জানতে চাওয়ার বিষয়ের উপর নির্ভর করেই অনলাইনে টাকা ইনকাম ওয়েবসাইটের এবারের বিশেষ আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে। আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায় সম্পর্কে।
মেয়েদের ঘরে বসে আয় সম্পর্কে
বর্তমান সমাজে মেয়েদের শিক্ষাগত যোগ্যতার হার বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাদের অবদান প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ২০২২ সালের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের নারী কর্মসংস্থানের হার ২৫.৩% যা কিনা কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বর্তমানে পুরুষের পাশাপাশি মেয়েরাও ঘরে বাইরে কাজ করে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলছে। তবে অনেক মেয়েরা রয়েছে যারা বাইরে কাজ করতে তেমন একটা ইচ্ছা পোষণ করে না, নিজেদের ঘরে বসে আয় করার নিত্যনতুন উপায় খুচ্ছে।
আমাদের ওয়েবসাইট থেকে এবারের আর্টিকেলে আমরা তাদের জানতে চাওয়া বিষয়কেই কভার করবো। জানাবো মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায় সম্পর্কে। তবে প্রথমে জেনে নেওয়া যাক মেয়েদের ঘরে বসে আয় করতে কি কি প্রয়োজন হবে সে বিষয়ে কিছু তথ্য।
মেয়েদের ঘরে বসে আয় করতে কি কি প্রয়োজন?
সাধারণত ঘরে বসে আয় করার কথা উঠলেই প্রথমে যে বিষয়টি সকলের সামনে উপস্থাপন হয় তা হচ্ছে – আপনার অবশ্যই একটি ডিজিটাল ডিভাইস থাকতে হবে হতে পারে সেটা মোবাইল ফোন ল্যাপটপ কিনবা কম্পিউটার। পাশাপাশি সে ডিভাইসে ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে আপনি এক্ষেত্রে মোবাইল ডাটা ইউজ করতে পারেন অথবা ওয়াইফাই।
সবশেষে অনলাইন সংক্রান্ত কোনো কাজ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সফট স্কিল ডেভেলপ করতে হবে, যেটার উপর ভিত্তি করে আপনি আপনার কাজ করে যাবেন। তবে এ আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা শুধুমাত্র অনলাইন ভিত্তিক কার্য নয় বরং অফলাইনেও এমন কিছু কাজ উপায় সম্পর্কে জানাবো যেগুলো ঘরে বসে করা যায় এবং সেগুলো করার মাধ্যমেও আপনি আয় করতে পারবেন। এখন উপরে যেগুলো বললাম সেগুলো তো দরকার হবে অনলাইন ভিত্তিক কাজ করার জন্য। তাছাড়া আপনি যদি অফলাইন ভিত্তিক কোন কাজ করে থাকেন, তখন সেটা ক্ষেত্রে কি কি প্রয়োজন হবে তা নির্ভর করবে উক্ত কাজটির উপরে, যা আর্টিকেলের মধ্যে বিস্তারিতভাবে জানিয়ে দেবো।
মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার সুবিধা সমূহ
মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার সুবিধাগুলি নিম্নরূপ:
১) স্বাধীনতা: ঘরে বসে কাজ করার ফলে মেয়েরা তাদের সময় এবং কাজের পরিবেশ নিজেদের মতো করে নির্ধারণ করতে পারে। এতে তারা ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে।
২) নিরাপত্তা: ঘরে বসে কাজ করার ফলে মেয়েরা অফিসে যাওয়ার সময় যেসব ঝুঁকির সম্মুখীন হয়, যেমন যৌন হয়রানি, যাতায়াত সমস্যা, ইত্যাদি এড়াতে পারে।
৩) আরামদায়ক পরিবেশ: ঘরে বসে কাজ করার ফলে মেয়েরা আরামদায়ক পরিবেশে কাজ করতে পারে। এতে তারা তাদের কাজের দক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে পারে।
৪) ব্যয় সাশ্রয়: ঘরে বসে কাজ করার ফলে মেয়েরা অফিসে যাওয়ার জন্য খরচ সাশ্রয় করতে পারে। এছাড়াও, তারা তাদের নিজস্ব সরঞ্জাম এবং উপকরণ ব্যবহার করতে পারে, যা তাদের খরচ আরও কমাতে সাহায্য করে।
এবার তাহলে চলে যাওয়া যাক আমাদের এবার আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তুতে, যা হলো মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায় সমূহ। এই পর্যায়ে আমরা জানাবো ১৫ টি উপায় সম্পর্কে চলুন শুরু করা যাক।
মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায় সমূহ [১৫ টি উপায়]
বুটিক থেকে আয় করুন
বুটিক হলো এমন এক ধরণের শপ, যেখানে ফ্যাশনেবল পোশাক, জুতা, গহনা সহ বিভিন্ন সৌখিন জিনিস বিক্রি করা হয়। এই ধরণের শপ হতে পারে অনলাইনে কিংবা অফলাইনে। তবে যেহেতু এখন আলোচনা করা হচ্ছে মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায় সম্পর্কে, সেহেতু এই ধরনের শপ অনলাইন প্ল্যাটফর্মেই দেয়া হবে।
এর জন্য অবশ্যই আপডেট এবং বর্তমান ট্রেন্ডকে অনুসরণ করে পণ্য বাছাই ও বাজারজাত করতে হয়। একজন মেয়ে হয়ে হিসেবে যদি আর্ট এর উপর আগ্রহ থেকে থাকে তবে আপনি কাপুড় কিনে দেখানে বিভিন্ন নকশা করা হোক কিংবা অন্যান্য উপাদানের মাধ্যমে কোনো সৌখিন জিনিস তৈরি হোক। সকল কিছুই করতে পারবেন।
তবে কথা হচ্ছে, যেহেতু আপনি এগুলো সরাসরি দোকান খুলে বিক্রি করতে পারবেন না। তাই আপনার একটি প্ল্যাটফর্ম থাকা উচিৎ যেখানে আপনি এগুলো বিক্রি করবেন। এমন প্ল্যাটফর্ম হতে পারে – ফেসবুক পেজ, মার্কেটপ্লেস, দারাজ শপ, নিজস্ব ওয়েবসাইট ইত্যাদি।
পাশাপাশি যেহেতু আপনি অনলাইনে পণ্য বিক্রি করবেন তাই আপনাকে যথাযথ ডেলিভারি মাধ্যম বাছাই করতে হবে পণ্য গুলো ক্রেতার হাতে পৌছে দিতে।
খাবার হোম ডেলিভারি ব্যবসা
আপনার যদি রান্নার উপর একটু ঝোক থেকে থাকে আর এই বিষয়ে বেশ এক্সপার্ট আপনি। সেক্ষেত্রে এই শক্তিটাকেই হাতিয়ার করে শুরু করতে পারেন হোম মেড খাবারের হোম ডেলিভারির ব্যবসা। সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হলো যে, এটা আপনি নিজ বাসায় বসেই পরিচালনা করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে খাবারের অর্ডার গুলো আসবে অনলাইন থেকে। আপনি বিভিন্ন Social Media (স্পেশালি ফেসবুকে) খাবারের আইটেম গুলো নিয়ে পোস্ট করতে পারেন, এবং ক্রেতা পেতে সেগুলোকে দারুন ভাবে উপস্থাপন করতে পারেন। পাশাপাশি আপনার সাথে যোগাযোগের মাধ্যম ও অর্ডারের প্রসেস সম্পর্কে অবগত করতে পারেন। তাহলে দেখা যাবে সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই ভালো পরিমাণের অর্ডার পেয়ে যাচ্ছেন।
তাছাড়া বর্তমানে রয়েছে ফুডপান্ডার মত অনলাইন খাবার অর্ডারের প্ল্যাটফর্ম যেখানে নিজের একটি ভার্চুয়াল শপ তৈরি করে রাখতে পারেন, আর সত্যি কথা বলতে বর্তমানে মানুষের মধ্যে অনলাইনে খাবার অর্ডার করার প্রবণতা বেড়েছে। তাই এটিকে নিশ্চিত ভাবে একটা ভালো উদ্যোগের কাতারে রাখা যায়।
টেলি কলিং
বর্তমান সময় মার্কেটিং সহ আরো অন্যান্য সেক্টর যেমন গ্রাহক সেবা প্রদানের কাজের জন্য অনেক নিয়োগ হচ্ছে। একটা সময় এই কাজ গুলোর জন্য আলাদা ভাবে অফিসে গিয়ে করতে হতো কিংবা কোনো কল সেন্টারে জব করতে হতো। কিন্তু বর্তমানে এই কাজ গুলোও রিমোট জবের আন্ডারে এসে পড়েছে।
এখন ঘরে বসেই করা যাবে টেলি কলিং এর কাজ। যে সুবাদে মেয়েরাই ঘরে বসে আয় করার উপায় হিসেবে এটাকে গ্রহন করতে পারবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই ভাষার উপর পারদর্শী হতে হবে। ভালো করে কথা বলতে পারার গুনটিও এখানে কাজে দিবে।
একজন টেলিকলার হতে আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ও জব পোর্টাল গুলোকে নজর রাখতে হবে। প্রায় সময়ই বিভিন্ন ছোট বড় কোম্পানি নিজেদের মার্কেটিং প্রচার, গ্রাহক সেবা নিশ্চয়নের জন্য টেলি কলারের বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। আপনি সেখানে এপ্লাই করে সিলেক্ট করলে ঘরে বসেই আয় করতে পারবেন।
ইমিটেশন গয়না থেকে আয়
নারীরা গয়নাতে আটকায়, হ্যাঁ গয়না নিয়ে কাজ করলে সে ব্যবসায়ে লস হওয়ার সম্ভাবনা একদমই কম। কেননা প্রতিনিয়ত এসকল জিনিসের দাম বেড়েই যাচ্ছে। বলছিলাম ইমিটেশনের গয়না বিক্রি করে আয় করার ব্যাপারে।
একজন মেয়ে ঘরে বসে আয় করতে চাইলে এই কাজটি করতে পারে। অনেকে ভেবে থাকবেন যে, এসব তো মার্কেটে পাওয়া যায় বা সাধারণত মার্কেট থেকেই ক্রয় করা হয়। হ্যাঁ ঠিক, তবে বর্তমানে অনলাইনেও এসব বিক্রি হচ্ছে অনেক বেশি।
কপিরাইটিং কিংবা কন্টেন্ট মার্কেটিং এর মাধ্যমে হোক, বা সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে গিয়ে পণ্যের উপস্থাপনা হোক – উভয় ভাবেই ইমিটেশনের গয়না বিক্রি করতে পারবেন ঘরে বসেই। আপনাকে কেবল নির্ভরযোগ্য ডেলিভারি পন্থা খুজে বের করতে হবে। Tha’s all..
নকশি কাঁথা
নকশি কাঁথা হলো সাধারণ কাঁথার উপর নানা ধরনের নকশা করে বানানো বিশেষ প্রকারের কাঁথা। নকশি কাঁথা শত শত বছরের পুরনো ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের সংস্কৃতির একটা অংশ। নকশি কাঁথা ভারত ও বাংলাদেশের লোকশিল্পের একটা অংশ।
আপনি যদি নকশি কাঁথা বানাতে পারেন তবে বেশ ভালো পরিমাণের আয় করতে সক্ষম হবেন, কেননা এখনও এর চাহিদা দেশ বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। নকশি কাঁথা তৈরিতে সাধারণত পুরনো কাপড়, সুতা এবং সূচ ব্যবহার করা হয়। কাঁথার উপর নকশা আঁকা হয় এবং তারপর সেলাই করা হয়। নকশাগুলি সাধারণত ফুল, লতাপাতা, পশুপাখি, নদী, পাহাড় ইত্যাদির হয়।
বিভিন্ন ধরণের নকশি কাঁথা রয়েছে, যেমন:
- লহরী কাঁথা: লহরী কাঁথা হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় ধরনের নকশি কাঁথা। এতে ঢেউ খেলানো নকশার ব্যবহার করা হয়।
- আনারসি কাঁথা: আনারসি কাঁথায় আনারসের নকশার ব্যবহার করা হয়।
- সুজনি কাঁথা: সুজনি কাঁথায় ঢেউ খেলানো ফুল ও লতাপাতার নকশার ব্যবহার করা হয়।
- চন্দনা কাঁথা: চন্দনা কাঁথায় চন্দনাগাছের নকশার ব্যবহার করা হয়।
- বাঁকা সেলাই কাঁথা: বাঁকা সেলাই কাঁথায় বাঁকা সেলাইয়ের ব্যবহার করা হয়।
একজন মেয়ে হিসেবে আপনি এই কাজ গুলো সহজেই করতে পারবেন। প্রথমে আপনার আশেপাশের মানুষের জন্য পরবর্তীতে বাণিজ্যিক ভাবে শুরু করে আয় করতে পারবেন।
গহনা তৈরি করে আয়
প্রতিটি নারীই কম বেশি গহনা পছন্দ করে। তবে গহনা যে কেবল স্বর্ণেরই হতে হবে তা কিন্তু নয়, এটা হতে পারে বিভিন্ন জিনিসের। ঘরে বসে সাধারণত মেয়েরা যেসকল গহনা তৈরি করতে পারবে সেগুলো হলো:
১) বিভিন্ন কাঠের তৈরি গহনা
২) কাপুড় ও মাটি দিয়ে তৈরি গহনা
৩) রঙ তুলির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা বিভিন্ন পাতা, ফুলের আকৃতি দেয়া কানের দুল, হাতের চুরি সহ বিভিন্ন জিনিস।
এসবের প্রতি প্রায় প্রতিটি নারীর ঝোক থাকে। তাই Young Women দের টার্গেট বিভিন্ন ভাবে মার্কেটিং করে হাতে তৈরি এসব গহনা বিক্রি করার মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
পিঠা তৈরি
বাংলাদেশে পিঠা তৈরি ও পিঠা খাওয়ার একটা দারুন আমেজ প্রতি বছরই হয়ে থাকে। বিশেষ করে শীতকালীন সময়ে এটার মাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় শহরের ব্যস্ত নগরীর মানুষেরা সে আমেজটা করার সুযোগ পায় না সময়ের সল্পতার কারণে। যার জন্য তাদের উৎসবটা হয় মূলত পিঠা ক্রয় করে খাওয়ার মাধ্যমেই।
তাই সিজনাল হোক বা সব সময়। অনলাইনে যদি বিভিন্ন পিঠা বিক্রির শপ তৈরি করে নেয়া যায় তবে সেখান থেকে খুব ভালো আয় করা সম্ভব। আপনি যদি মনে করেন আপনি পিঠা বানাতে ও তা বাজারজাত করতে পারবেন, তবে পিঠা তৈরির কাজটি করতে পারেন।
রান্নার প্রশিক্ষণ
মেয়েদের রান্না করতে হয়ই, হোক সেটা শহর পর্যায়ে কিংবা গ্রাম। এক্ষেত্রে রান্না শেখার জন্য প্রায় সকলেই ইচ্ছুক। তাছাড়া রান্না বলতে কেবল সচরাচর খাদ্য গুলোকেই বুঝায় না বরং আরো অনেক ধরনের বিশেষ বিশেষ খাদ্য রয়েছে, সেগুলোকেও বুঝায়।
তাছাড়া রান্না নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্টের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত ইনভেনশন হচ্ছে নতুন সব রান্নার রেসিপি। যারা বিশ্বাস করে যে নিজেদের মধ্যে এরকম প্রতিভা রয়েছে যাদের হাতে রান্নার রস অনেক ভালো তারা রান্নায় আগ্রহী মানুষদের মজাদার সকল রান্নার রেসিপি প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলতে পারেন নিজের আয়ের আরেকটি উৎসব।
রান্নার প্রশিক্ষণ দেয়াকে যারা প্রফেশন করে নিয়েছে তাদেরকে আমরা সেফ (Shef) বলে ডাকি। অতএব, একজন সেফ হয়েও, রান্নার প্রশিক্ষন দিয়েও আয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আয় করার আরেকটা উপায় হলো রান্নার প্রশিক্ষন ইউটিউবের মাধ্যমে দেয়া। এতে ইউটিউব থেকে রেভিনিউ জেনারেট করতে পারবেন।
পেপার ক্রাফটিং
পেপার ক্রাফটিং হল কাগজের সাথে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম তৈরি করার শিল্প। এটি একটি জনপ্রিয় শখ যা শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্কদের সবাই উপভোগ করতে পারে। পেপার ক্রাফটিংয়ের অনেকগুলি বিভিন্ন উপায় রয়েছে, এবং আপনি আপনার আগ্রহ এবং দক্ষতার স্তরের সাথে মানানসই একটি উপায় খুঁজে পেতে পারেন।
এটা করার বেশ কয়েকটি সাধারণ ধরন হলো:
- কাগজ কেটে তৈরি করা: এই ধরনের পেপার ক্রাফটিংয়ের মধ্যে রয়েছে কাগজ কেটে এবং ভাঁজ করে বিভিন্ন ধরনের সজ্জা তৈরি করা। উদাহরণস্বরূপ, আপনি কাগজের ফুল, পতাকা, এবং প্রাণী তৈরি করতে পারেন।
- কাগজ আঁকা: এই ধরনের পেপার ক্রাফটিংয়ের মধ্যে রয়েছে কাগজে রং, পেন্সিল, বা মার্কার দিয়ে আঁকা। আপনি বিভিন্ন ধরণের শিল্পকর্ম তৈরি করতে পারেন, যেমন চিত্র, পোস্টার, এবং কার্ড।
- কাগজ দিয়ে ভাস্কর্য: এই ধরনের পেপার ক্রাফটিংয়ের মধ্যে রয়েছে কাগজ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভাস্কর্য তৈরি করা। উদাহরণস্বরূপ, আপনি কাগজের বাক্স, জাহাজ, এবং বাড়ি তৈরি করতে পারেন।
- কাগজ দিয়ে মডেলিং: এই ধরনের পেপার ক্রাফটিংয়ের মধ্যে রয়েছে কাগজ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মডেল তৈরি করা। উদাহরণস্বরূপ, আপনি কাগজের বিমান, গাড়ি, এবং প্রাণী তৈরি করতে পারেন।
আপনি যদি এই কাজটি দক্ষতার সহিত করতে পারেন। তবে ঘরে বসে এটা করে বাইরে বাজারজাত করে আয় করতে পারবেন।
ইভেন্ট প্ল্যানার
ইভেন্ট প্ল্যানাররা বিভিন্ন ধরনের ইভেন্টের পরিকল্পনা করেন, যেমন বিবাহ, পার্টি, সম্মেলন, এবং কর্পোরেট ইভেন্ট। তারা ইভেন্টের উদ্দেশ্য, বাজেট, এবং থিম নির্ধারণ করে, এবং তারপর তারা ইভেন্টের স্থান, খাবার, বিনোদন, এবং অন্যান্য বিবরণগুলি বুক করে। তারা ইভেন্টের দিনের জন্য সমস্ত পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতিগুলিও তদারকি করে।
মেয়েরা ইভেন্ট প্ল্যানিং-এ সফল হতে পারে কারণ তারা প্রায়শই সৃজনশীল, সংগঠিত, এবং যোগাযোগ দক্ষ হয়। তারা সামাজিক এবং বিপুল সংখ্যক লোকের সাথে কাজ করতেও উপভোগ করে।
ক্যারিয়ার হিসেবে এটা দারুন একটি অপচুনিটি। প্লানিং সংক্রান্ত কাজের জন্য কোথাও যেতে হয় না। ঘরে বসেই নিজের মনের মত করে প্লানিং করা যায় আর বর্তমানে কম্পিউটারের মাধ্যমে সেটাকে ডিজিটাল উপস্থাপনাও করা সম্ভব।
বিউটি পার্লার
বর্তমান সময়ের নারীরা বিভিন্ন বিউটি ট্রিটমেন্ট করতে আগ্রহী হয়ে থাকে। এই চাহিদাকে ফোকাস করে মেয়েরা বিউটি পার্লার খুলে আয় করতে পারেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বিউটি পার্লার হয় কোনো বাসা বাড়িতেই। আলাদা একটা রুমে সেপারেট করে সেখানে কাস্টমাইজ করেই তৈরি করতে পারবেন বিউটি পার্লার।
যদিও এই কাজের মাধ্যমে আয় করে প্রাথমিকভাবে কিছু ইনভেস্টিমেন্টের প্রয়োজন আছে। আপনার বাড়িতে একটি ছোট জায়গা নিয়ে বিউটি পার্লার খুলতে পারেন। এক্ষেত্রে, আপনাকে প্রয়োজন হবে একটি মেকআপ টেবিল, চেয়ার, আয়না, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি।
আবার অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বিউটি সার্ভিস প্রদান করেও আয় করতে পারেন। এক্ষেত্রে, আপনাকে আপনার কাজের ছবি এবং ভিডিও আপলোড করতে হবে।
তাছাড়া আপনি যদি ভালো সার্ভিস দেয়ার পাশাপাশি লিংকআপ করতে পারেন তবে বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ পাবেন ভালো।
হোম টিউশন
মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার জন্য আরেকটি সেরা মাধ্যম হলো হোম টিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা। কেননা বর্তমান সময়ে বাসায় টিউটর রাখার ক্ষেত্রে মেয়েদের প্রাধান্য বেশি দিয়ে থাকে। তাছাড়া মেয়েরা নিজ বাসায় এরিয়ার আশেপাশের অনেক বাচ্চাদের পড়ানোর মাধ্যমে আয় করতে পারে। এক্ষেত্রে আপনাকে বাইরে কাজ করতে হবে না, আবার বাসায় বসে ভালো পরিমাণের আয় ও করতে পারবেন। বর্তমানে একটা বাচ্চাকে বাসায় বসে পড়ানোর জন্য সর্বনিম্ম ৫০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা অব্দি দিয়ে থাকে। যার দরুন আপনি যদি ৫ টা স্টুডেন্টও পড়িয়ে থাকেন তাহলেও মাসে ৫০০০০ টাকা চলে আসবে গড়ে।
গৃহপালিত পশু পাখি পালন
বাসায় বসে মেয়েরা যেসকল কাজ করে আয় করতে পারে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দারুন হলো গৃহপালিত পশু পাখি পালন করা। উক্ত কাজটি সবচেয়ে বেশি করে থাকে গ্রাম পর্যায়ের নারীরা।
পোষা পশু পাখি পালন একটি দায়িত্বপূর্ণ কাজ। পোষা পশু পাখিদের যত্ন নেওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই তাদের প্রয়োজনীয় খাবার, জল, আশ্রয় এবং স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহ করতে হবে। এছাড়াও, আপনাকে তাদের সাথে যথেষ্ট সময় কাটাতে হবে যাতে তারা সোশ্যালাইজড হয় এবং সুখী থাকে।
বাসায় পালার জন্য মেয়েরা পশু হিসেবে গরু, ছাগল পালন করতে পারে, আবার অন্যদিকে পাখি জাতের মধ্যে লাভজনক উপায়ে হাস, মুরগি, কবুতর, কোয়েল পালন করতে পারে। কেননা এসবে বেশ লাভ হয়ে থাকে। ঠিক ভাবে পরিচর্চা করতে পারলে এখান থেকে ভালো পরিমাণের লাভ করা সম্ভব। যা একজন নারী নিজ বাসায় বসেই করতে পারবে।
বাগান তৈরি
মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার আরেকটি দারুন উপায় হলো বাগান তৈরি করে আয়। আপনার বাসায় যদি যথেষ্ট পরিমাণ জমি থাকে তবে এই কাজটি আপনি অনায়াসেই করতে পারেন। এই বিষয়ে শহর পর্যায়ের মেয়েদের চেয়ে গ্রাম পর্যায়ের মেয়েরা কিছুটা এগিয়ে থাকবে।
যাই হোক, বাগার তৈরি করে আয় করার ক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে যে আপনি কি ধরণের বাগান করতে চাচ্ছেন। সাধারণত ৩ ধরণের বাগান দেখা যায়। সেগুলো হলো: ফলের বাগান, সবজির বাগান, ফুলের বাগান।
উক্ত কাজের জন্য প্রথমে জায়গা নির্বাচন করতে হবে এবং আপনি যে ধরনের বাজার তৈরি করতে চাচ্ছেন সে বাগানের কাঁচামাল সংগ্রহ করতে হবে। বাগান তৈরি করে কিভাবে আয় করতে হয় এ বিষয়ে বিস্তারিত আর্টিকেল ইতি মধ্যে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। আপনি চাইলেই সে আর্টিকেলের মাধ্যমে পুরো বিস্তারিত জানতে পারবেন সকল প্রসেস সম্পর্কে।
বর্তমান সময়ের উপর নির্ভর করে বলতে গেলে, বাংলাদেশে শস্য শ্যামল সুফলা ফসলের জন্য বেশ জনপ্রিয় এবং বাগান তৈরির মাধ্যমে এর বেসিক চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে। পাশাপাশি ফুল ফল এবং শাকসবজি বিক্রির মাধ্যমেও ভালো পরিমাণ অর্থ আয় করা সম্ভব। তাছাড়া বাগান থেকে বিভিন্ন গাছে চারা বিক্রি করার মাধ্যমেও আয় করতে পারবেন।
অনলাইনে আয় করার উপায়
দেখতে দেখতে আমরা ১৪ টি উপায় শেষ করে ফেললাম এবার সর্বশেষ উপায় সম্পর্কে জানাবো। এটি হচ্ছে অনলাইনে আয় করার পদ্ধতি। তবে সর্বশেষ সারপ্রাইজ এই যে এটা শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি নয় বরং একটি নতুন জগত। এ জগতে এন্টি করার মাধ্যমে আয় করার নতুন সব উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন। অনলাইন টাকা ইনকাম ওয়েবসাইট একটি মূলত অনলাইনে আয় করার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে জানানোর জন্যই তৈরি করা হয়েছে।
অনলাইন থেকে আয় বলতে এমন আয় করার পদ্ধতিকে বোঝানো হয়েছে যেগুলো করার জন্য আপনাকে সরাসরি কোন কাজে যেতে হবে না। ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে আয় করতে পারবেন। যার জন্য মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায় হিসেবে এটা একদম উপযুক্ত। অনলাইনে সহজে আয় করার উপায় গুলো নিয়ে আলাদা একটা বিশেষ আর্টিকেল রয়েছে, উক্ত লিখে ক্লিক করে সে আর্টিকেলটি দেখে নিলেই অনলাইনে আয় করার উপায় সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পারবেন।
পরিশেষে কিছু কথা
বিশেষে আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা জেনে নিতে পারেন মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার উপায় সমূহ সম্পর্কে। এখানে সর্বমোট 15 টি উপায় সম্পর্কে জানানো হয়েছে যেখানে কিছু উপায়ে রয়েছে অনলাইনের মাধ্যমে আয় করার আবার কিছু অফলাইনে। আশা করি এখান থেকে অবশ্যই একবার একাধিক উপায় অবলম্বন করে আপনিও ঘরে বসে আয় করতে সক্ষম হবেন। অনলাইন এবং অফলাইনে আয় করার নিত্যনতুন উপায় সম্পর্কে জানতে অনলাইন টাকা ইনকাম ওয়েবসাইটটি অনুসরণ করুন।