বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম । ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়? 

Salim Mahamud

Updated on:

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়?
ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়?

বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম । ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়? 

বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম 

Congratulation, আপনি যদি “বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করার উপায়” সংক্রান্ত তথ্য জানতে চান তবে আপনি একদম যথাযথ স্থানেই রয়েছেন। অনলাইন টাকা ইনকাম নামক ওয়েবসাইট থেকে ব্লগিং এর মাধ্যমে আয় সংক্রান্ত ধারাবাহিক প্রতিবেদনের এবারের আর্টিকেলে থাকছে বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করার সকল পদ্ধতি এবং  ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় সে বিষয়ে ধারণা। 

ব্লগিং ব্যক্তিদের চিন্তাভাবনা, ধারণা, দক্ষতা, এবং বিশাল অনলাইন ভিত্তিক অডিয়েন্সের সাথে অভিজ্ঞতা শেয়ার করার একটি জনপ্রিয় উপায় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এখানে আমরা বাংলা ব্লগ সাইটগুলি থেকে আয়ের উৎস খুজে বের করবো এবং ব্লগকে বিভিন্ন ভাবে মনিটাইজেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে জানাবো। ব্লগিংয়ের মাধ্যমে কত টাকা আয় করা যায়, সে বিষয়েও একটি সচ্ছ ধারণা পেয়ে যাবেন এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়া হয়ে গেলে। তবে জেনে নিন ব্লগিং সংক্রান্ত এই বিষয় গুলো। 

ব্লগ সাইট কি? 

বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করার কৌশল জানার আগে, আসুন একটি ব্লগ সাইট কী তা জেনে নেওয়া যাক। ইতিমধ্যে আমরা জানিয়েছি ব্লগ কি, ব্লগিং কি এবং ব্লগিং সংক্রান্ত যাবতীয় সকল ইতিহাস। আপনি সেখান থেকে বিস্তারিত ভাবে এই বিষয়ে জেনে নিতে পারেন। তবে এখানে যদি ব্যাসিক দু’য়েক কথা বলতে হয় তবে বলবো – ব্লগ হলো “ওয়েবব্লগ” এর সংক্ষিপ্ত একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেখানে ব্যক্তি  নিজেদের ব্যক্তিগত জ্ঞান নিজেদের ব্লগ পোস্ট বা জার্নাল আকারে ফুটিয়ে তোলে বা প্রকাশ করে। 

বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করা সম্ভব? 

হ্যাঁ, বাংলা ব্লগ সাইট থেকে অবশ্যই আয় করা সম্ভব। যদিও অনেক ব্লগার আছে যারা কাজটি শখ করে শুরু করেন, তবে দিন শেষে বিভিন্ন পদ্ধতিতে মনিটাইজেশনের মাধ্যমে আয়ের একটি উৎস হিসেবে এটাকে পরিণত করতে পারেন। ব্লগিং থেকে ঠিক কত টাকা আয় করা যায় সেটা হলফ করে বলা সম্ভব নয়, কেননা এখানে জড়িত অনেক বিষয়। যেমন: 

  • আপনার তৈরি করা ব্লগটিতে দৈনিক কিংবা মাসিক কত ভিজিট আসে
  • আপনার তৈরি করা ব্লগের কন্টেন্ট গুলো সম্পর্কে মানুষ কতটা আগ্রহী 
  • কন্টেন্ট এর মান কেমন এবং এটা ভিজিটররা কিভাবে গ্রহন করছে
  • ব্লগ সাইটে বিজ্ঞাপনের সঠিক ব্যবহার ও যথাযথ পোস্টিং
  • এবং ওভারল সাইটের বিহেভিয়রের উপর নির্ভর করে। 

একেক সাইটের ক্ষেত্রে এগুলো একেক রকম হয় বিধায় আয়ের মাত্রাও একেক রকম হয়ে থাকে। তবে এটা ঠিক যে, অন্যান্য ভাষায় ব্লগিং (ইংরেজি) এর তুলনায় বাংলা ভাষায় ব্লগিং এর ক্ষেত্রে আয়ের পরিমাণ কিছুটা কম হয়। এই ধারাবাহিক প্রোগ্রামে আমরা বিস্তারিত একেক করে প্রতিটি ক্ষেত্রই তুলে ধরবো যাতে করে আপনি আরো ভালো ভাবে বিষয় গুলো বুজতে পারেন এবং এখান থেকে আয় করতে সক্ষম হোন। 

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়? 

সত্যি কথা এটাই যে, ব্লগিং থেকে আয় করার কোনো সীমা নেই। একদিকে আপনি যেমন এক টাকাও আয় করতে পারবেন না, আবার অন্যদিকে আপনি লাখ লাখ টাকা একটা ব্লগ সাইট থেকে আয় করতে পারবেন। এটাও অস্বাভাবিক কিছু না।  

তবে দেখা গেছে নর্মালি ইংরেজি ভাষায় ব্লগিং করলে যে অর্থ টা আয়ের সুযোগ থাকে, ঠিক একই রকম বাংলা ভাষায় ব্লগিং করে সে মাত্রায় আয় করা যায় না। এখানে মেজর ফ্যাক্টর হিসেবে ভূমিকা পালন করে CPC; কেননা দেখা যায় সর্বনিম্ম সিপিসি এর ক্ষেত্রে বাংলা ভাষায় সাইট গুলোতে গড়ে ০.১০ – ০.৫০ ডলার দিয়ে থাকে। অন্যদিকে ইংরেজি ভাষায় সিপিসি বেশির পাশাপাশি সেখানে কম্পিটেটরও অনেক বেশি হয়ে থাকে। 

উদাহরণ:

ধরুন আপনার প্রযুক্তির উপর বাংলা ব্লগ তৈরি করা রয়েছে, এবং আপনি যথেষ্ট অডিয়েন্স আকর্ষণ করছেন। টার্গেট করা বিজ্ঞাপন, স্পনসর করা পোস্ট এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি প্রতি মাসে $৫০০ থেকে $৫০০০ বা আরও বেশি উপার্জন করতে পারেন।

আপনি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে ব্লগে পোস্ট লিখেন এবং এখন থেকে শুরু করেন তবে আগামী ৫-৬মাসে খুব ভালো একটা ফলাফল আশা করতে পারেন

বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করার মাধ্যম

পেইড মাধ্যম (WordPress)

ওয়ার্ডপ্রেস একটি জনপ্রিয় কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS) যা ব্যাসিক ভাবে বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায় তবে এটা মূলত পেইড মাধ্যম। কেননা এখানে আপনাকে ডোইমেন হোস্টিং ক্রয় করে এখানে সাইট ইন্সটল করতে হবে। আলাদা ভাবে হোস্টিং এবং ডোমেইন ক্রয় করে তারপর এই প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে সাইটকে Live করতে সক্ষম হবেন। 

বর্তমান সময়, পুরো বিশ্বের প্রায় ৪০% ওয়েবসাইট বা ব্লগই ওয়ার্ডপ্রেস এর উপর নির্ভর করে দাঁড়িয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এ বছরই (২০২৩ সাল) প্রায় ১ মিলিয়ন ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেসের দ্বারা চালিত হবে। ওয়ার্ডপ্রেস জনপ্রিয় হওয়ার পেছনেও বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তা হলো: 

  • ওয়েন সোর্স, যার কারণে ফিচার্স অনেক
  • সহজে ম্যানেজ করা যায় 
  • যেকোনো ধরণের ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়
  • সিকিউর এবং শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম 

তাই আপনি যদি একান্ত নিজের পছন্দ অনুযায়ী ইউনিক ওয়েতে নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তবে ওয়ার্ডপ্রেস আপনার সেরা পছন্দ হয়ে উঠবে। 

ফ্রী মাধ্যম (Blogger) 

আপনি যদি প্রথম দিকেই ব্লগের পিছনে ইনভেস্ট করতে না চান তবে ব্লগার হয়ে উঠবে আপনার পছন্দের মধ্যে একটি যা কি না Google-এর মালিকানাধীন, একটি বিনামূল্যের ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম যা আপনাকে কোনো খরচ ছাড়াই ব্লগ তৈরি এবং হোস্ট করার সুযোগ করে দেয়। বর্তমানে এখানে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ইউজার রয়েছে যারা নিজেদের ওয়েবসাইট বা ব্লগ এখানে তৈরি করেছে। 

এখানে রয়েছে ফ্রী হোস্টিং এবং ফ্রী সাব-ডোমেইন যা দিয়েই শুরু করতে পারবেন আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ার। তবে বলে রাখা ভালো যে, ব্লগারে আপনি চাইলে ডোমেইন ক্রয় করেও এড করতে পারবেন। আর যদি 3rd party সাইট থেকে ডোমেইন ক্রয় করতে না চান তবে ব্লগারের সাব-ডোমেইন ব্যবহার করা যাবে।

আপনি যদি না জেনে থাকেন ডোমেইন ও সাব-ডোমেইন এর মধ্যে পার্থক্য কি, তবে উক্ত লিংকে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিন। আচ্ছা, যদিও এটিতে ওয়ার্ডপ্রেসের তুলনায় কম কাস্টমাইজেশন অপশন রয়েছে, তবুও এটি আপনাকে Google AdSense এবং অন্যান্য বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আয় করতে সক্ষম করে।

ফ্রী অথবা পেইড কোনটি ভালো ব্লগ থেকে ইনকাম করার জন্য? 

এখানে ফ্রী বলতে বুঝানো হয়েছে গুগলের ব্লগার প্ল্যাটফর্মকে অন্যদিকে পেইড বলতে বুঝানো হয়েছে ওয়ার্ডপ্রেসকে। মূলত দুইটিই ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য সেরা প্ল্যাটফর্ম। তুলনা করতে গেলে দেখা যায়, ওয়ার্ডপ্রেসে একটু বেশি ফিচার্স, প্লাগিন ও থিম ইউস করার সুযোগ থাকছে অন্যদিকে ব্লগারে তুলনামূলক একটু কম থাকছে।  

এখানে আবার আপনার সিচুয়েশন অনুযায়ী আপনার জন্য কোনটা ভালো সেটা বেছে নেয়ার সুযোগ থাকছে। আপনি যদি একদম কোনো অথ্য ইনভেস্ট করতে না চান তবে আপনার হাতে ব্লগার ছাড়া অন্য অপশন নেই। আর আপনি যদি কিছুটা ডোমেইন হোস্টিং এর উপর ইনভেস্ট করতে চান তবে ওয়ার্ডপ্রেস আপনার জন্য ভালো হবে। কেননা এখানে অনেক বেশি সুবিধা ও নিজের মনের মত করে কাস্টমাইজ করার সুযোগ পাবেন। তাছাড়া ইউজার এক্সপ্রিরিয়ান্স, মনিটাইজেশনের সুবিধা ও ব্যবহারবিধী উভয়ের ক্ষেত্রেই দারুন। 

বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করার উপায় 

এই পর্যায়ে একেক করে প্রতিটি উপায় বা মাধ্যম সম্পর্কে জানাবো যা আপনার ব্লগে এপ্লাই করার মাধ্যমে আপনার ব্লগ থেকে ভালো পরিমাণের অর্থ আয় করতে সক্ষম হবেন। প্রতিটি উপায় সম্পর্কে এখানে ব্যাসিক তথ্য তুলে ধরেছি, তাছাড়া পরবর্তীতে প্রতিটি মাধ্যম নিজেই বিস্তারিত আর্টিকেল আসবে। 

গুগল এডসেন্স 

গুগল এডসেন্স এর সিস্টেমটি খুব সুন্দর। এটি মূলত একটি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক যা কি না ওয়েবসাইটের মালিকদের সাথে ডিল করে তাদের ওয়েবসাইট গুলোতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে। ওয়েবসাইটে যখন কোনো ভিজিটর সে বিজ্ঞাপন গুলো  দেখে বা সেখানে ক্লিক করে, তখন ওয়েবসাইট বা ব্লগের মালিক একটা নিদিষ্ট পরিমাণের অর্থ আয় করতে সক্ষম হয়। 

এটা ব্যবহার করা খুবই সহজ, এর জন্য প্রয়োজন ফ্রী তে তৈরি করা একটি একাউন্ট। গুগল এডসেন্সের নিজস্ব কিছু Criteria রয়েছে যেগুলো একটা ওয়েবসাইটের মধ্যে বিধ্যমান থাকতে হবে। সেগুলো থাকলেই আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট মনিটাইজেশনের জন্য রেডি হবে এবং বিজ্ঞাপণ প্রদর্শন ও সেখান থেকে আয় করার জন্য রেডি হয়ে যাবে। 

গুগল এডসেন্সের কিছু সুবিধা হল:

  • বিনামূল্যেই একাউন্ট করতে পারবেন এবং কোনো ইনভেস্ট ছাড়া আয় করতে পারবেন।
  • ব্যবহার ও পরিচালন করা খুব সহজ।
  • ওয়েবসাইটে প্রাসঙ্গিক বিষয় গুলোর আলোকে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে যা ভিজিটরের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পায়। এর ফলে আপনার ভিজিটর সাইটে এসে বিরক্ত হয়ে চলে যাবে না।
  • এটি একটি বিশ্বস্ত বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক।

গুগল এডসেন্সের কিছু অসুবিধা হল:

  • আপনার ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন না।
  • আপনি যে পরিমাণ অর্থ আয় করবেন তা নির্ভর করবে বেশ কিছু কারণের উপর। যেমন: ভিজিটরের দেশ, কীওয়ার্ডের সিপিসি, ভিজিটরের বিহেভিয়র সহ আরো অন্যান্য কিছু। 

ওভারল বলতে গেলে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম খুব জনপ্রিয় একটি উপায় যা বর্তমানে ১০০ মিলিয়নের বেশি ওয়েবসাইট ও ব্লগে দৈনিক ১০ বিলিয়ন বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করছে। আর বিশ্বব্যাপী গুগল এডসেন্সের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২ মিলিয়ন প্লাস। 

ভিজিট করুন গুগল এডসেন্সের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থিমটি এমন যে, আপনি একটি কোম্পানির সাথে ডিল করবেন। সে কোম্পানির পণ্য বা সেবার জন্য টার্গেট অডিয়েন্স নিয়ে আসবেন এবং কোনো পণ্য বা সেবা গ্রহন করার ব্যবস্থা করবেন। আপনার মাধ্যমে কেউ যদি উক্ত পণ্য বা সেবা কোনো ইউজার গ্রহন করে তবে আপনি একটি নির্ধারিত কমিশন পাবেন।

এটার সাথে ব্লগের সম্পর্কে কোথায়? আছে, আপনি মূলত ব্লগ পোস্টের মধ্যেই অ্যাফিলিয়েট লিংক প্রদান করবেন, এবং খুব ইউনিক উপায় আপনার ভিজিটরকে ওই পণ্য বা সেবা গ্রহন করার জন্য এপ্রোচ করবেবন। আপনি যত দক্ষ হবেন এ কাজে, আপনার আয় কত বেশি হবে। অন্যদিকে আপনি কত টাকা কমিশন পাবেন সেটা নির্ভর করবে কোম্পানি, পণ্য বা সেবা, এবং গ্রহনের মাত্রায় উপর। 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করার জন্য, আপনাকে নিম্নলিখিত বিষয় গুলোতে মনোযোগ দিতে হবে:

  • আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগকে জনপ্রিয় ব্লগ হিসেবে তৈরি করুন।
  • ব্লগের প্রাসঙ্গিক পণ্য বা সেবার প্রমোশন করুন।
  • অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক গুলিকে আকর্ষণীয় করুন।
  • কেনো আপনার এখানে দেয়া লিংক থেকেই পণ্য বা সেবা গ্রহন করবে সেটা উপস্থাপন করুন
  • আপনার ব্লগে প্রদান করা অ্যাফিলিয়েট লিংক গুলিকে আপনার পাঠকদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করুন।

ব্যাস, এভাবেই আপনি আপনার ব্লগের মাধ্যমে আয় করার জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ব্যবস্থা রাখতে পারেন। 

ইজোয়িক 

Ezoic অনেকটা গুগল এডসেন্সের মতই বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক। তবে গুগল এডসেন্স থেকে বেশি কমিউশন বা উচ্চ সিপিসি সম্পন্ন থাকায় এটাও অনেক ব্লগারের পছন্দের শীর্ষে থাকে। Ezoic এর কিছু ফিচার্স হল:

  • বিজ্ঞাপনদাতাদের বেশি সুবিধা প্রদান ও অনেক বেশি বিজ্ঞাপনদাতার সমাহার
  • বেশি কাস্টমাইজেশনের অপশন 
  • বেশি আয়ের সম্ভাবনা
  • সহজ ইনস্টলেশন এবং সেটআপ
  • 24/7 কাস্টমার সার্ভিস 

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, আপনি চাইলে গুগল এডসেন্স ও ইজোয়িক একত্রে আপনার সাইটে ইন্সটল করতে পারেন। এক্ষেত্রে কোনো একাউন্ট সাস্পেন্স হবে না। ইজোয়িকে একাউন্ট করাও খুব সহজ ও বিনামূল্যেই করতে পারবেন। একাউন্ট খোলার পর কিছু Criteria ফুলফিল করলেই আপনার সাইট এপ্রুভ করে দিবে। 

পণ্য বা সেবা বিক্রি 


আপনার যদি একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে দক্ষতা থাকে তবে আপনার ব্লগের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা তৈরি এবং বিক্রি করার কথা ভাবতে পারেন। এক্ষেত্রে ব্লগটি একটি মাইক্রো নিশের উপর তৈরি করতে হবে। তারপর সে নিশ সম্পর্কে লোকেদের যাবতীয় সকল বিষয় তথ্য প্রদানের মাধ্যমে আপনার ব্লগটিতে জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। এবার আসবে আপনার ব্যবসায়ের পালা, যেখানে আপনি ওই নিশটির ক্ষেত্রে যাবতীয় সুবিধা ও সুযোগ এর পাশাপাশি গ্রাহককে সম্ভাবনা দেখিয়ে নিজের পণ্য বা সেবা উপস্থাপন করবেন। এটা বেশ কার্যকর উপায় হয়ে দাড়াবে বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করার ক্ষেত্রে।  

স্পনশরশিপ

স্পনশরশিপের মাধ্যমে বাংলা সাইট থেকে ইনকাম করা সম্ভব। স্পনশরশিপ হল এমন একটি চুক্তি যেখানে একটি কোম্পানি আপনার সাইটে নিজেদের পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করায় বা আপনি নিজের কন্টেন্টের মাধ্যমে তাদের প্রমোশন করিয়ে দেন। এবং একাজের জন্য অবশ্যই ভালো পরিমাণের আয়ের সুযোগ থাকে। আপনার ব্লগ সাইটে ক্যাটাগরি ও নিশের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন স্পনশরশিপ পেতে পারেন। মূলত যেখানে কোনো পণ্য বা সেবা রয়েছে সে সেক্টরে কাজ করেই স্পনশরশিপ পেতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার ব্লগটি অবশ্যই জনপ্রিয় হতে হবে। 

ব্লগিং সংক্রান্ত প্রশ্ন ও উত্তর 

একটি বাংলা ব্লগ সাইট থেকে আয় শুরু করতে কত সময় লাগে?

উত্তর: আপনার ব্লগ সাইট থেকে উপার্জন শুরু করার সময় অনেক গুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন: কন্টেন্টের গুণমান, দর্শকদের এটেনশন এবং মনিটাইজেশন পদ্ধতি। উল্লেখযোগ্য আয় দেখার আগে কয়েক মাস থেকে এক বছর বা তার বেশি সময় লাগতে পারে।

আমি কি একসাথে একাধিক মনিটাইজেশন পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারি?

উত্তর: হ্যাঁ, আপনি আপনার বাংলা ব্লগ সাইটে একাধিক মনিটাইজেশন পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। যেমন গুগল এডসেন্স ও ইজোয়িক এক সাথে এক সাইটে ব্যবহার করতে পারবেন।

ব্লগিং থেকে আয় করার জন্য কি প্রচুর দর্শক থাকা প্রয়োজন?

উত্তর: না, ব্লগিং থেকে আয় করার জন্য প্রচুর দর্শক থাকা প্রয়োজন নয়। আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হন এবং আপনার ব্লগে উচ্চমানের কন্টেন্ট লিখতে পারেন, তাহলে আপনি অল্প দর্শক থেকেও ভাল পরিমাণে আয় করতে পারেন।

ব্লগ সাইট থেকে আয় করার ক্ষেত্রে কি কোন ঝুঁকি আছে?

উত্তর: যেকোনো ব্যবসায়িক উদ্যোগের মতো, এখানেও ঝুঁকি রয়েছে, যেমন বিজ্ঞাপনের আয়ের ওঠানামা এবং অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম নীতিতে পরিবর্তন। তাই সময়ের সাথে সাথে আপডেট থাকার এবং কৌশলগুলিকে মানিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে, আপনি সম্ভাব্য ঝুঁকি কমাতে পারেন।

আমার কি একটি নিশে ফোকাস করা উচিত বা আমার ব্লগে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা উচিত?

উত্তর: আপনার ব্লগকে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ফোকাস করা উচিত। এটি আপনাকে আপনার দর্শকদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে এবং আপনার ব্লগের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট দর্শক তৈরি করতে সাহায্য করবে। আপনি যদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখে থাকেন, তাহলে আপনার দর্শকরা আপনার ব্লগ সম্পর্কে বুঝতে পারবে না এবং তারা আপনার ব্লগ থেকে দূরে সরে যেতে পারে।.

প্রশ্নঃ আমি কি আমার ব্লগ সেট আপ করার সাথে সাথেই আয় করা শুরু করতে পারি?

উত্তর: না, আপনি আপনার ব্লগ সেট আপ করার সাথে সাথেই আয় শুরু করতে পারবেন না। আপনার ব্লগকে জনপ্রিয় করতে এবং একটি দর্শক তৈরি করতে সময় লাগে

পরিশেষে কিছু কথা 

আর্টিকেলের শেষে বিষয়টির সামারি করলে এটা বলা যায় যে, এখানে বাংলা ব্লগের উপরে ফোকাস করা হয়েছে। বাংলা ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করার পাশাপাশি ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়া হয়েছে। ঠিক কিভাবে ব্লগকে টাকা আয়ের উৎস করে তোলা সম্ভব তা জানানো হয়েছে। আপনি ওয়ার্ডপ্রেস বা ব্লগার যেটাই বেছে নিন না কেনো, আপনার ব্লগের ভিজিটরের চাহিদা পরিপূর্ণ করার মাধ্যমে ভালো মানের কন্টেন্ট ও উপযুক্ত মনিটাইজেশনের উপায় বেছে নেয়ার মাধ্যমে নিজের বাংলা ব্লগ থেকে ইনকাম করতে পারবেন। আশা করি বিষয়টি খুব ভালো ভাবে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি, এবং ব্লগিং সম্পর্কে আরো অন্যান্য বিষয় জানতে এবং কিভাবে টাকা আয়ের জন্য ব্লগ সাইটকে তৈরি করবেন সেটা জানার জন্য ভিজিটি করুন অনলাইন টাকা ইনকাম সাইটের ব্লগিং ক্যাটাগরি।